পাতা:পৌরাণিকী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূমিকা যদি কোন বিষয় অগ্ৰাহও করিতে হয়, তবে ধীরভাবে তাহার সকল দিক্‌ বিচার করিয়া দেখা উচিত। যাহা শত শত বৎসর এ দেশবাসীকে আনন্দ দিয়া আসিয়াছে, সেই উৎসব হঠাৎ একেবারে বন্ধ হইয়া গেল কেন ? পল্পীর মুসলমান কৃষকগণ পৰ্য্যন্ত মনসার ভাসানগানের সমস্ত আখ্যায়িক পরিজ্ঞাত, অথচ আমরা অনেকে তৎসম্বন্ধে কিছুই জানি না ; ইহা পরিতাপের বিষয় সন্দেহ নাই। বৰ্ত্তমান উপাখ্যানে আমি সেই প্ৰাচীন কথা লইয়া উপস্থিত হইয়াছি। একটা দ্রব্যের রস স্বয়ং আস্বাদন করা এক কথা এবং অপরকে তুল্যরূপ রস-ভাগ প্ৰদান করিতে পারা, আর-এক কথা । আমি প্রাচীন পুথিতে বেহুলার কাহিনী পড়িয়া সেই স্বামি-বিরহ-বিধুরা আশ্চৰ্য্য-সাধনা-তৎপরা, একান্তবিপন্ন। অথচ নিৰ্ভীক হদয়া সাধবীর উদ্দেশে নির্জনে কত অশ্রু বিসর্জন করিয়াছি, তাহ বলিতে পারি। না ! বাল্মীকির অঙ্কিত সীতা-চরিত্রের ন্যায় বেহুলার চিত্রও আমার ভক্তির অর্ঘ্যদ্বারা মানসপটে অভিষিক্ত করিয়া রাখিয়াছি, কিন্তু সেই প্ৰাচীন কবিগণের সরল উদ্দীপনা ও করুণরস উদ্রেক করিবার অসামান্য শক্তির কণিকাও আমার নাই, সুতরাং আমার তুলিতে নমস্ত উপহাস্যরূপে পরিণত না হইয়া থাকিলেই যথেষ্ট । মনসার ভাসানে অনেক কথা আছে, এই ক্ষুদ্র পুস্তকে তাহার সকল বিষয় অবতারিত হয় নাই। চান্দ-সদাগরের বাণিজ্যসম্বন্ধে বিস্তৃত বিবরণ অনেক পদ্মাপুরাণেই আছে। বেহুলার চিত্র চিত্রণে সেই সকল প্রসঙ্গের অবতারণা করিলে বর্ণনীয় কাহিনী অযথা ভারাক্রান্ত হইত । এইভাবে শঙ্কুর গারুড়ীর মৃত্যু, গুয়াবাড়ী ধ্বংসের বিবরণ প্রভৃতি অনেক প্রসঙ্গই ছাড়িয়া দিয়াছি। শঙ্কুর গারুড়ীকে প্রাচীন পুথিতে