পাতা:পৌরাণিকী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বেহুলা দেবীকে বলিলেন, “আমরা তোমার প্রতি ভক্তি সদাগরের প্রাণে সঞ্চাৱ করিতে পারিলাম না, এমন কাহাকেও আমাদের গৃহে আনিয়া দাও, যাহার চেষ্টায় এই অসাধ্যসাধন হয়, তোমার ঘট তুমি স্থাপিত করিয়া যাও । আমাদিগকে আর কত পরীক্ষা করিবে ! আমাদের হৃদয় বড় দৃঢ়, পাষাণ হইলেও বুঝি তাই এরূপ কঠোরাঘাতে ভাঙ্গিয়া शहेऊ ।” আবার সদাগরের বিশাল গৃহে শঙ্খ, ঘণ্টা, কঁাসির বাজিয়া উঠিয়াছে; প্রতিবাসিনীরা বলিয়া উঠিল, “ঐ যা, সনকা রাণীর আর-একটি পুত্র জন্মিল, উন্মাদ চন্দ্ৰধর মনসার সঙ্গে বাদ করিয়া এটিও হারাইবে।” “আহা ! শিশুর কি চাদপান মুখ ৷” সনকা সেই সূতিকাগৃহে শিশুর শরচ্চন্দ্রনিভ প্ৰফুল্ল মুখখানি দেখিলেন ; পূর্ণচন্দ্র্যোদয়ে সমুদ্র যেমন স্ফীত হইয়া উঠে, শোকার্তা মাতৃ-হৃদয়ের সমস্ত নিরুদ্ধ স্নেহ সেই শিশুর মুখদর্শনে তেমনি উথলিয়া উঠিল। তিনি জানিতেন, এ পুত্ৰও মনসাদেবী রাখিবেন না। এক চক্ষের প্রান্তে আশঙ্কাজনিত অশ্র পতনোমুখ হইয়া উঠিল, কিন্তু মাতৃস্নেহ এমনই প্রবল যে, অপর চক্ষু শিশুর বদনচন্দ্ৰমা দর্শনে গ্ৰীতিপ্ৰফুল্প হইল, যেন বহুদিনের জালা সহসা জুড়াইয়া গেল । গৃহ হইতে লক্ষ্মী পাছে অন্তহিত হন, এই ভয়ে সনক ভীতা ছিলেন, লক্ষ্মীকে ঘরে বঁাধিয়া রাখিবার ফাদস্বরূপ পুত্রের নাম লক্ষ্মীন্দ্র’ রাখিলেন, এই নাম আদরে আদরে শেষে “লখাই' এবং আরও সংক্ষিপ্ত হইয়া “নখা”তে পরিণত হইয়াছিল । চান্দ-সদাগর পুত্ৰমুখদর্শনে প্রীত হইয়াছিলেন ; পুত্রের অসামান্য রূপদৰ্শনে তিনি ভীত হইলেন, এ পুত্র মনসার কোপানলে আহুতিস্বরূপ