পাতা:পৌরাণিকী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৌরাণিকী আছেন। সেই অস্তগামী সুৰ্য্য যেন কুন্তলরাজিকে বারংবার প্রণাম জানাইয়া উজ্জ্বল করিয়া দিতেছে,-ডুবন্ত রৌদ্রের আলোকে স্বর্ণসুত্রচিত্রিত মণিবিজড়িত রক্তপীট্রবস্ত্ৰাঞ্চল অগ্নিস্ফুলিঙ্গের ন্যায় চক্ষু ধাধিয়া দিতেছে ; দেবীর মরাল-গ্ৰীবা ঈষৎ বক্রভাবে . কুন্তলভার বহন করিতেছে, দেহশ্ৰীর সমুন্নত সৌন্দৰ্য্য বিশ্বের নমস্য ভাব পরিগ্ৰহ করিয়াছে। সন্ধ্যাদেবী যেন সেই সুৰ্য্যাস্তের হোমাগ্নি-পার্শ্বে পর্যাপ্ত ধূম্রপটলের ধূপ করে লইয়া সেই বরাননার আরতি করিতেছেন। কালকেতু সেই রূপ দেখিয়া ভীত হইল, সৌন্দর্ঘ্যের প্রখর তেজে তাহার মস্তক নত হইল,-সে। বলিল, “আপনি আমার এ গৃহে কে ? এ কি আমার চক্ষুর বিভ্ৰম ?” চণ্ডী কালকেতুর দিকে কৃপা-দৃষ্টিপাতপূর্বক ঈষৎ হাসির রেখায় পক্কবিম্ব সদৃশ ওষ্ঠাধর কুঞ্চিত করিয়া মৌনমুখী হইয়া রহিলেন । কালকেতু এই ললনার অভিপ্রায় কিছুই বুঝিতে না পারিয়া পুনর্বার বলিল, “আমি ব্যাধ, এই কুঁড়ে শ্মশান-সদৃশ, ইহা অতীব অশুচি । ইহার চতুদিকে পশুর হাড়, এ স্থানে কেহ প্ৰবেশ করিলে তাহাকে স্নান করিয়া গৃহে ফিরিতে হয়, এমন স্থানে আপনি কেন ? আপনি যদি স্বগৃহের পথ ভুলিযা হেথাষ আসিযা থাকেন, তবে বলুনআমি আপনাকে পথ দেখাইয়া লইয়া যাইব, আমি এক যাইব না,- কয়েকজন বন্ধুকে সঙ্গে লইয়া যাইব । ফুল্লারাও আপনার সঙ্গে সঙ্গে যাইবে এবং আমি ধনু ধারণ করিয়া আপনার পশ্চাদৃবৰ্ত্তী হইব।” দেবী কোনই উত্তর করিলেন না,-চক্ষু অবনত করিয়া সেই কুঁড়ের পার্শ্বে স্থির সৌদামিনীর মত দাড়াইয়া রহিলেন । তিনি যে সে স্থান ত্যাগ করিবেন, তঁাহাবু ভাবে সেরূপ কোন লক্ষণ দেখা গেল না । Apr