পাতা:পৌরাণিকী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৌরাণিকী পাদপদ্মের অলক্তকরাগ জল-স্থলের শত শত পদ্মপুষ্পের প্রভার সঙ্গে মিশিয়া গেল। দশ হস্তের দশ প্রহরণ বজ, বিদ্যুৎ, পৰ্ব্বত ধাতু ও বনকণ্টকে লীন হইয়া গেল। শুধু সিংহ ও অসুরের পাশব শক্তিব্যাধ-তনয় নিজের দেহে অনুভব করিল, তাহদের একজন দেবীর প্ৰসাদ-মাল্য কণ্ঠে পরিয়া জগতে তাহারই আদেশে কাৰ্য্য করিতেছেঅপরটি তাহার সঙ্গে দ্বন্দ্ব করিয়া দেবী-নিক্ষিপ্ত শূল বক্ষে ধারণ করিয়া আছে। দেখিতে দেখিতে জগতের সঙ্গে দেবীর অপূর্ব রূপ মিশিয়া গেল। কালকেতু ও ফুল্লারা দেখিতে পাইল, দেবী সেই সুন্দরী রমণীবেশে কুঁড়ের পার্শ্বে পূর্ববৎ দাড়াইয়া আছেন। তখন ব্যাধি-পুত্র সস্ত্রীক সেই বরবর্ণিনীর পদপ্রান্তে পড়িয়া লুটাইয়া কঁাদিতে লাগিল ও বলিল, “সার্থক আমার ব্যাধ-জন্ম, আমি তোমায় शिंब्लीश !” দেবী বলিলেন “এই অঙ্গুরীটি তোমায় দিলাম এবং দাড়িম গাছের নীচে সাত ঘড়া মাণিক্য আছে, তুমি তাহা তুলিয়া লও। তুমি কলিঙ্গরাজ্যের অদূরে দ্রাবিড়-দেশে জঙ্গল কাটাইয়া রাজত্ব স্থাপন কর। আর পশুহিংসা করিও না, ফুল্লারাসুন্দরী অগ্রসর হইয়া দেবী-প্ৰসাদ অঙ্গুরীয়ক গ্ৰহণ করিল, কালকেতু ভুক্তিৱ পবল উচ্ছাসে মূক হইয়া রহিল। যখন দেবীর রূপ ক্রমেই স্বপ্নের মত অস্পষ্ট হইয়া সান্ধ্য গগনের শেষ আলোর সঙ্গে একবারে মিশাইয়া অদৃশ্য হইতে উদ্যত হইল, তখন যেখানে দেবীর পাদ-পদ্মের ছটা পড়িয়াছিল, সেইস্থানে মস্তক লুষ্ঠিত করিয়া কালকেতু সকাতরে বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে বলিল, “মা আমি অঙ্গুরীয়ক চাই না, সাত ঘড়া মাণিক্য চাই না, আমি তোমার জগদ্ধাস্ত্রী মুক্তি আর একবার দেখিব।” Հ8Հ