পাতা:পৌরাণিকী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৌরাণিকী চিতার পার্শ্বে যাইয়া বলিলেন, “যদি ইহাকে পোড়াইবে, তবে আমি ইহঁর সঙ্গে সঙ্গে চিতায় প্রবেশ করিব। কিন্তু ইহাকে পোড়াইয়া কাজ নাই, সৰ্পদষ্ট ব্যক্তিকে পোড়াইবার নিয়ম নাই, হঁহাকে ভেলায় করিয়া ভাসাইয়া দাও, কি জানি যদি কোন রোঝার কৃপায় ইনি প্ৰাণ পান। আর সেই ভেলায় আমি হঁহার সঙ্গে যাব ।” সকলে বেহুলার কথা অনুমোদন করিল, বেহুলার সঙ্গে যাওয়ার কথাটা একটা কথার কথা মনে করিয়া, কেহ সে সম্বন্ধে কিছু युनिक्षा काi ! কিন্তু যখন ভেলা প্ৰস্তুত হইয়া গাজুড়ের জলে ভাসিল, শিব সেই ভেলায় রক্ষিত হইল, তখন পট্টম্বর-ধারিণী সিন্দূরচন্দন-লিপ্ত-ললাট সাক্ষাৎ দেবীপ্ৰতিমা সেই ভেলায় যাইয়া বসিলেন । সকলে দেখিয়া “হায়’ ‘হয়’ করিতে লাগিল। যাহারা ‘খণ্ডক পালিনী’ ‘চিরুনর্দিান্তী” বলিয়া বেহুলাকে কত গালি দিয়াছিল, তাহারা আসিয়া হাতে ধরিয়া সাধিতে লাগিল। এমন বুদ্ধিশূন্য বালিকা ত কেহ কখন দেখে নাই ; বালিকা, যুবতী, বৃদ্ধ যাহারই স্বামীর মৃত্যু হয়, তাহারাইত বিধবা হইয়া গৃহে বাস করে ; মৃত স্বামীকে বঁাচাইবে, এমন কথা কে শুনিয়াছে ? তাহারা ধারাকুলানেত্ৰে বেহুলার মৃণালতুল্য কোমল কর ধরিয়া কত অনুনয় জানাইল-কিন্তু বেহুল গা জুড়ের জলে নিশ্চল হইয়া ভেলায় বসিয়া রছিলেন। শোকে উন্মাদিনী ধূলিধূসরিত। সনকা কঁাদিতে কঁাদিতে গাঙ্গুড়ের কুলে আসিয়া বলিলেন-“হতভাগিনী শ্বশুরবাড়ীতে উপবাস করিয়া আসিয়াছিলে, সেখানে একবেলা একমুষ্টি ভাত খাইলে না, চল মা, আমার লেখার শোক তোমার মুখ দেখিয়া জুড়াইতে চেষ্টা করিব।” কিন্তু বেহুলা সেই ভেলা হইতে নড়িলেন না । 8 to