পাতা:পৌরাণিকী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SRR2. মনসার কৃপায় শঙ্কুর গাডুৱী প্ৰাণ পাইল। চাঁদের গৃহে কতকাদিম ব্যাপিয়া ক্রমাগত উৎসব চলিল। নানা দিগদেশ হইতে র্তাহার জ্ঞাতিবন্ধুগণ সেই উপলক্ষে উপনীত হইয়াছিলেন । আত্মীয়-সভায় একদা চন্দ্রধরের জ্ঞাতি ভ্ৰাতা উচ্চবংশের দৰ্পে শীর্ষকীত, নীলাম্বর বণিকৃ ঘাড় বাকাইয়া বলিলেন, “লক্ষ্মীন্দর কোন ওঝা বা দেবতার কৃপায় জীবন লাভ করিাহ্মাছেন, তাহা ভগবান জানেন, নবযুবতী কুলবধু ছয়মাসকাল কি ভাবে কোথায় ছিল- তাহার সাক্ষী নাই, এ অবস্থায় ইহাকে গৃহে রাখা যুক্তিযুক্ত নহে।” চাদের বিশাল পুরীতে অসংখ্য লোক উপস্থিত ছিলেন, এই হীন সন্দেহে তাহারা লজ্জায় মন্তক অবনত করিলেন। অনেকের চক্ষে জল পড়িতে লাগিল। কুটিল সমাজনীতিপ্রাজ্ঞ নবখণ্ডবাসী জনাৰ্দন রায় বলিলেন, “নীলাম্বরের কথা ঠিক, চাদ এরূপ বধূকে লইয়া ঘর করিলে বড় নিন্দার কথা হইবে।” বৰ্দ্ধমানবাসী ধূষদত্ত এই কথায় বলিলেন, “সমস্ত বণিককুল যাহার সতীত্ব-মাহাক্স্যে উজ্জ্বল হইয়াছে, সেই পুণ্যশীলার সম্বন্ধে এরূপ কথা আমরা শুনিতে চাহি না ।” কিন্তু নীলাম্বর ও ধনপতি এই ব্যাপার লইয়া উত্তেজিত ভাবে আলোচনা করিতে লাগিলেন ; ভঁাহারা ক্রমেই ইহার কুটার্থ নিষ্কাশন করিয়া, বেহুলা-সম্বন্ধে নিন্দাবাদ গুরুতর করিয়া তুলিলেন, তখন ধূষদত্ত ক্ৰোধ-কম্পিতীদেহে সভা হইতে উঠিয়া গেলেন, হরিসাধুর সঙ্গে নীলাম্বর দাসের শ্যালক রামর্যায়ের হাতাহাতি হইবার উপক্রম হইল । তখন বিবাদ থামাইবার উদ্দেশে চণ্ডী প্ৰসাদ সদাগর কহিলেন, “বেহুলাকে তিন প্রকারে পরীক্ষা করা হউক ।”