পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।
১৬৭

বল দান করেনা, বল হরণ করে। স্ত্রী পুরুষ পরস্পরের দক্ষিণ হস্ত―তাহারা মিলিত থাকিলে তবেই সম্পূর্ণরূপে সংসারের সকল কাজের উপযোগী হইতে পারে!” তোমার কি মনে হয় নির্ম্মল? (নির্ম্মলা নিরুত্তর) অক্ষয়বাবুও এই কথা নিয়ে সে দিন আমার সঙ্গে তর্ক কর্‌ছিলেন, তাঁর অনেক কথার উত্তর দিতে পারিনি।

 নির্ম্মলা। তা হতে পারে। বোধ হয় কথাটার মধ্যে অনেকটা সত্য আছে।

 চন্দ্র। “গৃহস্থসন্তানকে সন্ন্যাসধর্মে দীক্ষিত না করিয়া গৃহাশ্রমকে উন্নত আদর্শে গঠিত করাই আমার মতে শ্রেষ্ঠ কর্ত্তব্য।”

 নির্ম্মল। এ কথাটা কিন্তু পূর্ণবাবু বেশ বলেচেন।

 চন্দ্র। আমিও কিছুদিন থেকে মনে করছিলেম কুমারব্রত গ্রহণের নিয়ম উঠিয়ে দেব।

 নির্ম্মলা। আমারও বোধ হয় উঠিয়ে দিলে মন্দ হয় না, কি বল মামা? অন্য কেউ কি আপত্তি করবেন? অবলাকান্তবাবু, শ্রীশবাবু—

 চন্দ্র। আপত্তির কোন কারণ নেই।

 নির্ম্মলা। তবু একবার অবলাকান্ত বাবুদের মত নিয়ে দেখা উচিত।

 চন্দ্র। মত ত নিতেই হবে।—(পত্রপাঠ) “এ পর্য্যন্ত যাহা লিখিলাম সহজে লিখিয়াছি, এখন যাহা বলিতে চাহি তাহা লিখিতে কলম সরিতেছে না।”

 নির্ম্মলা। মামা, পূর্ণবাবু হয়ত কোন গোপনীয় কথা লিখ্‌চেন, তুমি চেঁচিয়ে পড়ছ কেন?

 চন্দ্র। ঠিক বলেছ ফেনি। (আপন মনে পাঠ) কি আশ্চর্য্য। আমি কি সকল বিষয়েই অন্ধ! এত দিন ত আমি কিছুই বুঝতে পারি নি! নির্ম্মল, পূর্ণ বাবুর কোন ব্যবহার কি কখনো তোমার কাছে—