পাতা:প্রজাপতির নির্বন্ধ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রজাপতির নির্ব্বন্ধ।
২৫

চাচ্চে, কি করি? তোমার পায়ে মালিশ করবার জন্যে সেই যে ব্রাণ্ডি এসেছিল, তার কি কিছু বাকি আছে?

 জগত্তারিণী হতবুদ্ধি হইয়া কহিলেন, বল কি বাছা? ব্রাণ্ডি খেতে দেবে?

 অক্ষয় কহিলেন, কি করব মা, শুনেইছ ত, ওর মধ্যে একটা ছেলে আছে যার জল খেলেই সর্দ্দি হয়, মদ না খেলে আর একটীর মুখে কথাই বের হয় না!

 জগত্তারিণী কহিলেন—ক্রিশ্চান্ হবার কথা কি বল্‌চে ওরা?

 অক্ষয় কহিলেন—ওরা বলচে হিঁদু হয়ে খাওয়া দাওয়ার বড় অসুবিধে, পুঁইশাক কড়াইয়ের ডাল খেয়ে ওদের অসুখ করে!

 জগত্তারিণী অবাক হইয়া কহিলেন; তাই বলে কি ওদের আজ রাতেই মুর্গি খাইয়ে ক্রিশ্চান্ করবে নাকি?

 অক্ষয় কহিলেন, তা মা ওরা যদি রাগ করে চলে যায় তা হলে দুটি পাত্র এখনি হাতছাড়া হবে। তাই ওরা যা বলচে তাই শুন্‌তে হচ্চে, আমাকে শুদ্ধ মদ ধরাবে দেখচি।

 পুরবালা কহিলেন—বিদায় কর, বিদায় কর, এখনি বিদায় কর!

 জগত্তারিণী ব্যস্ত হইয়া কহিলেন—বাবা, এখানে মুর্গি খাওয়া টাওয়া হবে না, তুমি ওদের বিদায় করে দাও। আমার ঘাট হয়েছিল আমি রসিক কাকাকে পাত্র সন্ধান কর্‌তে দিয়েছিলুম! তাঁর দ্বারা যদি কোন কাজ পাওয়া যায়!

 রমণীগণের প্রস্থান। অক্ষয় ঘরে আসিয়া দেখেন, মৃত্যুঞ্জয় পলায়নের উপক্রম করিতেছে এবং দারুকেশ্বর হাত ধরিয়া তাহাকে টানাটানি করিয়া রাখিবার চেষ্টা করিতেছে। অক্ষয়ের অবর্ত্তমানে মৃত্যুঞ্জয় অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা করিয়া সন্ত্রস্ত হইয়া উঠিয়াছে। অক্ষয় ঘরে প্রবেশ