১১৪ ভারতবর্ষের স্বাধীনতা এবং পরাধীনতা । ইস্ক্রিয়ারতন্ত্র-অন্তঃপুরেই বাস করেন, রাজ্য দুর্দশাগ্রস্ত হইল। কোন রাজা নিষ্ঠুর, কোন রাজা অর্থ প্রাচীন ভারতবর্ষে এ সকলে গুরুতর ক্ষতি জন্মিত । আধুনিক ভারত বর্ষে দূরস্থিত রাজা বা রাজ্ঞীর কোন প্রকার দোষ ঘটিলে তাহার ফল, ভারতবর্ষে ফলিবার সম্ভাবনা নাই। দ্বিতীর, যেমন আধুনিক ভারতবর্ষে ইংলণ্ডের মঙ্গলের জন্য ভারতবর্ষের মঙ্গল কখন কখন নষ্ট হয়, তেমনি প্রাচীন ভারতে রাজার আত্মমুখের জন্য রাজ্যের মঙ্গল নষ্ট হইত। পৃথ্বীরাজ, জয়চন্দ্রের কন্যা হরণ করিয়া আত্মস্থখ বিধান করিলেন,তাহাতে উতয়মধ্যে সমরাগ্নি প্ৰজলিত হইয়া,উভয়ের অপ্রীতি ও তেজে৷ হানি ঘটতে লাগিল। তন্নিবদ্ধন উতয়েই মুসলমানের হস্তে পতিত হইলেন। আধুনিক ভারতবর্ষে দূরবাসী রাজার আত্মসুখের অনুরোধে কোন অনিষ্টপাত্রের সম্ভাবনা নাই । কিন্তু এটি কেবল পরতন্ত্রতা সম্বন্ধে উক্ত হইল, আমরা পর ধীনতা ও পরতন্ত্রতায় প্রতেদ করিয়াছি। ভারতবর্ষে ইংরেজের প্রাধান্য, এবং দেশীয় প্রজা সকল তাহাদিগের নিকট অবনত, তাহাদিগের সুখের জন্য কিয়দংশে যে ভারতবাসীদিগের মুখের লাঘব ঘটিয়াথাকে,তাহা এদেশীয় কোন লোকেই অস্বীকার করিবেন না। এরূপ জাতির উপর জাতির প্রাধান্য প্রাচীন ভারতে ছিল না। ছিল সা বটে, কিন্তু তত্ত্য বর্ণ পীড়ন ছিল। ইহা কেহই অস্বীকার করিবেন না, যে চিরকালই ভারতবর্ষের সাধারণ গ্রজ শূদ্র ; উৎকৃষ্ট বর্ণত্রয় শূদ্রের তুলনায় অল্পসংখ্যক ছিলেন। সেই বর্ণক্রয়ের মধ্যে, ব্রাহ্মণ ও ক্ষত্রিয় দেশের শাষনকৰ্ত্তা। কিন্তু এসকল কথা একটু সবিস্তারে লেখা আবশ্যক হইল। লোকের বিশ্বাস আছে যে প্রাচীন ভারতে কেবল ক্ষত্ৰিয়ই
পাতা:প্রবন্ধ পুস্তক-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১২৩
অবয়ব