পাতা:প্রবন্ধ পুস্তক-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতবর্ষের স্বাধীনতা এবং পরাধীনতা। ১১৫ রাজ ছিলেন। বাস্তবিক তাহা নহে, রাজকাৰ্য্য দুই অংশে বিভক্ত ছিল। যুদ্ধাদির ভার ক্ষত্রিয় জাতির প্রতি ছিল ; রাজব্যবস্থা নির্বাচন, বিচার, ইত্যাদি কার্যের ভার ব্রাহ্মণের উপর ছিল। এক্ষণে যেমন সিবিল ও মিলিটরি এই দুই অংশে রাজকার্য বিভক্ত, তখনকার কৰ্ম্মভাগ কতকটা সেইরূপই ছিল। ব্রাহ্মণের সিবিল কৰ্ম্মচারী, ক্ষত্রিয়ের মিলিটরী । এখনও যেমন মিলিটরি অপেক্ষ সিবিল কৰ্ম্মচারীদিগের প্রাধান্য, তখনও সেইরূপ ছিল ; রাজপুরুষদিগের মধ্যে, ক্ষত্রিয়েরাই রাজানাম ধারণ করিতেন, কিন্তু কাৰ্য্যতঃ তাহাদিগের উপরেও ব্রাহ্মণের প্রাধান্য ছিল। প্রাচীন ভারতে ক্ষত্রিয়েরাই সৰ্ব্বদা রাজা ছিলেন এমত নহে। বোধ হয় আদ্যকালে, ক্ষত্রিয়েরাই রাজা ছিলেন, কিন্তু বৌদ্ধকালে মৌর্য্য প্রভৃতি সঙ্করজাতীয় রাজবংশ দেখা যার। চীনপরিব্রাজক হোয়েন্থ সাঙ সিন্ধুপারে ব্ৰাহ্মণ রাজা দেখিয়া গিয়াছিলেন। অন্যত্রও ব্রাহ্মণের রাজা নাম ধারণ করিয়াছিলেন। মধ্যকালে অধিকাংশ রাজাই রাজপুত। রাজপুতের ক্ষত্ৰিয়বংশসস্তুত সঙ্করজাতি মাত্র । ক্ষত্রিয়দিগের প্রাধান্য, প্রাচীন ভারতে চিরকাল অপ্রতিহত ছিল না, ব্রাহ্মণদিগের গৌরব এক দিনের জন্য লঘু হয় নাই। বেদদ্বেষী বৌদ্ধদিগের সময়েও রাজকাৰ্য্য ব্রাহ্মণদিগের হস্ত হইতে অন্য হস্তে যায় নাই—কেন না তাহারাই পণ্ডিত, সুশিক্ষিত, এবং কাৰ্য্যক্ষম। অতএব প্রাচীন ভারতে ব্রাহ্মণেরাই প্রকৃত রূপে রাজপুরুষ পদে বাচ্য। সুবিজ্ঞ লেখক, বাবু তারাগ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, বেঙ্গাল মাগাজিনে একট প্রবন্ধে যথার্থই লিথিয়াছিলেন, যে ব্রাহ্মণেরাই প্রাচীন ভারতের ইংরেজ ছিলেন । এক্ষণে জিজ্ঞাস্য যে আধুনিক ভারতবর্ষে দেশী বিলাতিতে