পাতা:প্রবন্ধ পুস্তক-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন এবং নবীন ! ১৩৯ দেখিতে পাই, কিন্তু তাহারা অশ্বারোহণ, বায়ুসেবন, ইত্যাদি অনেকগুলি স্বাস্থ্যরক্ষক শারীরিক ক্রিয় নিয়মিতরূপে সম্পাদন করে। আমাদিগের গৃহপিঞ্জরের বিহঙ্গিনীগণের সে সকল কিছুই হয় না। দ্বিতীয়, স্ত্রীগণের আলস্যের তার একটি গুরুতর কুফল এই যে সন্তান দুৰ্ব্বল এবং ক্ষীণজীবী হয় । শিশুদিগের নিত্য রোগ, এবং অকালমৃত্যু অনেক সময়েই জননীর শ্রমে অনুরাগশূন্যতার ফল । অনেকে বলেন, আগে এত রোগ ছিল না; এখন নিত্য পীড়া ; আগে লোকে দীর্ঘজীবী ছিল; এক্ষণে অল্পবয়সে মরে। অনেকের বিশ্বাস আছে, এ সকল কালমহিমা ; কলিতে অনৈসর্গিক ব্যাপার ঘটতেছে। বৃদ্ধিমান ব্যক্তি জানেন যে নৈসর্গিক নিয়ম কখন কালমাহাষ্মে পরিবর্তিত হয় না ; যদি আধুনিক বাঙ্গালিরা বহুরোগী এবং অল্পায়ু হইয়া থাকে, তবে তাহার অবশ্য নৈসর্গিক কারণ আছে সন্দেহ নাই । আধুনিক প্রস্থতিগণের শ্রমে বিরতিই সেই সকল নৈসর্গিক কারণের মধ্যে অগ্রগণ্য। যে বঙ্গদেশের ভরসা লোকের শারীরিক বলেন্নিতির উপর বৰ্ত্তিয়াছে, সেই বঙ্গদেশে জননীগণের আলস্যবশ্যতার এ রূপ বুদ্ধি যে অতি শোচনীয় ব্যাপার তাহার সন্দেহ নাই। আলস্তের তৃতীয় কুফল এই যে নবীনাগণ গৃহকৰ্ম্মে নিতান্ত অশিক্ষিতা এবং অপটু ৷ কখনও যে সকল কাজ করেন না, এজন্য শিখেনও না, ইহাতে অনেক অনিষ্ট ঘটে। প্রাচীনারা নিতান্ত ধনী না হইলে, জল তুলিতেন, বাসন মাজিতেন, উঠান বাট দিতেন ; রন্ধন তঁহাদেয় জীবনের প্রধান কার্য্য ছিল । এ কিছু বাড়াবাড়ি ; নবীনাদিগের এতদূর করিতে আমরা • অকুরোধ করি না ; যাহার যেমন অবস্থা, সে তদনুসারে কার্য্য করিলেই যথেষ্ট ; কেবল কাপেট তুলিয়া কাল কাটাইলে, অতি