( 88 ) • দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ –বিবেক । আমি দুঃখ ভোগ করি-কিন্তু আমি কে ? বাহ্যপ্রকৃতিভিন্ন আর কিছুই আমাদের ইঞ্জিয়ের গোচর নহে। তুমি বলিতেছ, আমি বড় দুঃখ পাইতেছি,~-আমি বড় স্বর্থী। কিন্তু একটি মনুষ্যদেহ ভিন্ন, “ তুমি” বলিৰ, এমন কোন সামগ্রী দেখিতে পাই না। তোমার দেহ এবং দৈহিক প্রক্রিয়া, ইহাই কেবল আমার জ্ঞানগোচর। তবে কি তোমার দেহেরই এই মুখ দুঃখ ভোগ বলিব ? 變 তোমার মৃত্যু হইলে, তোমার সেই দেহ পড়িয়া থাকিবে ; কিন্তু তৎকালে তাহার স্বখ দুঃখ ভোগের কোন লক্ষণ দেখা যাইবে না । আবার মনে কর, কেহ তোমাকে অপমান করিয়াছে; তাহাতে দেহের কোন বিকার নাই, তথাপি তুমি দুঃখী। তবে তোমার দেহ দুঃখভোগ করে না। যে দুঃখ ভোগ করে, সে স্বতন্ত্র। সেই তুমি । তোমার যেহু তুমি নহে। এইরূপ সকল জীবের । অতএব দেখা যাইতেছে বে, এই জগতের কিয়দংশ ইন্দ্রিয়গোচর, কিয়দংশ অমুমেয় মাত্র, ইন্দ্রিয়গোচর নহে, এবং স্বখ দুঃখাদির ভোগকর্তা । ষে মুখ দুঃখাদির ভোগকৰ্ত্ত, সেই আত্মা। সাংখ্যে তাহার নাম পুরুষ। পুরুষ ভিন্ন জগতে আর যাহা কিছু আছে, তাহ প্রকৃতি । আধুনিক মনস্তত্ত্ববিদেরা কহেন যে, আমাদিগের স্থখ দুঃখ মানসিক বিকারমাত্র। সেই সকল মানসিক বিকার কেবল মস্তিষ্কের ক্রিয় মাত্র। তুমি আমার অঙ্গে কণ্টক বিদ্ধ করিলে, বিদ্ধ স্থানস্থিত স্নায়ু তাহাতে বিচলিত হুইল—সেই বিচলন মস্তিষ্ক পৰ্য্যস্ত গেল। তাহাতে মস্তিষ্কের যে বিকৃতি হইল,
পাতা:প্রবন্ধ পুস্তক-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৫৩
অবয়ব