পাতা:প্রবন্ধ পুস্তক-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাংখ্যদর্শন । 80 তবে এ সকল দুঃখ নিবারণের উপায় নহে। আধুনিক বিজ্ঞানবিং কোমৃতের শিষ্য বলিবেন, তবে আর দুঃখনিবারণের কি উপায় আছে ? আমরা জানি যে, জলসিক করিলেই অগ্নি নিৰ্ব্বাণ হয়, কিন্তু শীতল ইন্ধন পুনর্জালিত হইতে পারে বলিয়া তুমি যদি জলকে অগ্নিনাশক না বল, তবে কথা ফুরাইল। তাহা হইলে দেহধ্বংস ভিন্ন আর জীবের দুঃখনিবৃত্তি নাই। সাংখ্যকার তাহাও মানেন না । তিনি জন্মাস্তুর মানেন, এবং লোকাস্তরে জন্ম পৌনঃপুন্য আছে তাবিয়া,এবং সেখানেও জরামরণাদিজ দুঃখ iিান ভাবিয়া তাহাও দুঃখনিবারণের উপায় বলিয়া গণ্য করেন না । (৩ অধ্যায় ; ৫২-৫৩ স্বত্র) আত্মা, বিশ্বকারণে বিলীন হইলেও তদবস্থাকে দুঃখনিবৃত্তি বলেন না, কেন না যে জলমগ্ন, তাহার আবার উত্থান আছে। (উ ৫৪) তবে দুঃখ নিবারণ কাহাকে বলি? অপবৰ্গই দুঃখনিবৃত্তি । অপবর্গই বা কি ? “দুয়োরেকতরস্য বৌদাসীন্যমপবর্গঃ।” (তৃতীয় অধ্যায় ৬৫ স্বত্র) সেই অপবর্গ কি, এবং কি প্রকারে তাহা প্রাপ্ত হওয়া যায়, তাহ পর পরিচ্ছেদে সবিশেষ বলিব। “অপবর্গ” ইত্যাদি প্রাচীন কথা শুনিয়া পাঠক ঘৃণা করবেন না। যাহা প্রাচীন, তাহাই যে উপধৰ্ম্মকল স্কত, বা সৰ্ব্বজনপরিজ্ঞাত, এমত মনে করবেন না। বিবেচক দেখিবেন, সাংখ্যদর্শনে একটু সারও আছে। অসার বুক্ষে এমন স্থায়ী ফল ফলিবে কেন ?