পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতবষের ঐক্য Sህq জীবনব্যুক্ষের ফলে; তবে এ ফলে এত সক্ষম বন্তে ভর করে এত উচেচ ফটে ওঠে যে, হঠাৎ দেখতে তা আকাশকুসম বলে ভ্ৰম হয়। আমার বিশ্ববাস, একটি ক্ষদ্র দেশের এক রাজার শাসনাধীন জাতির মন একেশ্ববরবাদের অনকােল। ঐরাপ জাতির পক্ষে বিশবকে একটি দেশ হিসেবে এবং ভগবানকে তার অদ্বিতীয় শাসনও পালন-কতা হিসেবে দেখা স্বাভাবিক এবং সহজ। অপর পক্ষে যে মহাদেশ নানা রাজ্যে বিভক্ত এবং বহন রাজা-উপরাজার শাসনাধীন, সে দেশের লোকের পক্ষে আকাশদেশে বহন দেবতা এবং উপদেবতার অস্তিত্ব কলপনা করাও তেমনি সবাভাবিক। সাধারণত মানষে মতের ভিত্তির উপরেই সবগের প্রতিষ্ঠা করে। যে দেশের পর্বপক্ষ একেশবরবাদী সে দেশের উত্তরপক্ষ নাস্তিক, এবং যে দেশের পবিপক্ষ বহদেবতাবাদী সে দেশের উত্তরপক্ষ অদ্বৈতবাদী। অদ্বৈতবাদী বহর ভিতর এক দেখেন না, কিন্তু বহকে মায়া বলে তার অস্তিত্ব অস্বীকার করেন। সতরাং উত্তরমীমাংসার সার কথা— ‘ব্ৰহ্ম সত্য জগৎ মিথা- এই অর্ধ শেলাকে যে বলা হয়েছে, তার আর সন্দেহ নেই। এই কারণেই বেদান্ত দশন সাংখ্যদর্শনের প্রধান বিরোধী । অথচ এ কথা অস্বীকার করবার জো নেই যে, সংখ্যা বাদ দিলে অবশিস্ট থাকে শািন্ধ, শনা। সতরাং মায়াবাদ যে ভাষান্তরে শান্যবাদ এবং শংকর যে প্রচ্ছন্নবৌদ্ধ- এই প্রাচীন অভিযোগের মলে কতকটা সত্য আছে। যে একাত্মজ্ঞান কমশন্যতার উপর প্রতিষ্ঠিত, সে জ্ঞানের চর্চায় আত্মার যতটা চৰ্চা কবা হয়, বিশবিমানবের সঙ্গে আত্মীয়তার চর্চা ততটা করা হয় না। আরণ্যক-ধম যে সামাজিক, এ কথা শােধ ইংরেজি-শিক্ষিত নাগরিকোবাই বলতে পারেন । সমাজ ত্যাগ করাই যে সমাসের প্রথম সাধনা, এ কথা বিস্মত হবার ভিতর যথেস্ট আরাম আছে। সোহহং হচ্ছে ইনডিভিডুয়ালিজমের চরম উক্তি। সতরাং বেদান্তমত আমাদের মনোজগৎকে যে পরিমাণে উদার ও মক্ত করে দিয়েছে, আমাদের ব্যাবহারিক জীবনকে সেই পরিমাণে বদ্ধ ও সংকীর্ণ করে ফেলেছে। বেদান্তের দাপণে প্রাচীন যাগের সামাজিক মান প্রতিফলিত হয় নি, প্ৰতিহত হয়েছে। বেদান্তদর্শন সামাজিক জীবনের প্রকাশ নয়, প্রতিবাদ । অদ্বৈতবাদ হচ্ছে সংকীর্ণ কমের বিরুদ্ধে উদার মনের প্রতিবাদ, সীমার বিরুদ্ধে অসীমের প্রতিবাদ, বিষয়ঙ্ঞানের বিরুদ্ধে আত্মজ্ঞানের প্রতিবাদ। এক কথায় জড়ের বিরুদ্ধে আত্মার প্রতিবাদ । সমাজের দিক থেকে দেখলে জীবের এই সবরাট জ্ঞান শােধ বিমাট অহংকাব মাত্র । সতরাং যে সত্রে একালের লোকেরা জাতিকে একতার বন্ধনে আবদ্ধ করতে চান তা ব্ৰহ্মসত্র নয়, কিন্তু তার অপেক্ষা ঢের স্থল জীবনসত্র। কেন যে পরাকালে অদ্বৈতবাদীরা কৌপীনকমন্ডল, ধারণ করে বনে যেতেন, তার প্রকৃত মম উপলব্ধি না করতে পারায় একালের অদ্বৈতবাদীরা চোগাচাপিকান পরে আপিসে যান। উভয়ের ভিতর মিল এইটােক যে, একজন হচ্ছেন উদাসী আরএকজন শােধ উদাসীন— পরের সম্পবন্ধে । রাধাকুমদবাবার প্রবন্ধের প্রধান মযাদা এই যে, তিনি ভারতের আত্মজ্ঞানের ভিত্তি অতীতের জীবনক্ষেত্রে প্রতিস্ঠা করতে প্ৰয়াসী হয়েছেন। তবে কতদর কৃতকাব্য হয়েছেন সেইটেই বিচাৰ্য। ভবিষ্যতের শান্যদেশে যা-খাঁশি-তাই স্থাপনা