পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

OG NR প্ৰবন্ধসংগ্ৰহ তরজমা না করে শািন্ধ নকলই করছি। নকল করার মধ্যে কোনোরাপ গৌরব বা মনকেষ্যত্ব নেই। মানসিক শক্তির অভাব্যবশতই মানষে যখন কোনো জিনিস রপান্তরিত করে নিজের জীবনের উপযোগী করে নিতে পারে না, অথচ লোভবশত লাভ করতে চায়, তখন তার নকল করে। নকলে বাইরের পদাৰ্থ বাইরেই থাকে, আমাদের অন্তর্ভূত হয় না; তার দ্বারা আমাদের মনের এবং চরিত্রের কান্তি পন্ট হয় না, ফলে মানসিক শক্তির যথেষ্ট চর্চার অভাব্যবশত দিন দিন সে শক্তি হ্রাস হতে থাকে। ইউরোপীয় সভ্যতা আমরা নিজেদের চারি পাশে জড়ো করেও সেটিকে অন্তরভাগ করতে পারি নি; তার সাপটে প্রমাণ এই যে, আমরা মাঝে মাঝে সেটিকে ঝেড়ে ফেলবার জন্য ছটফট করি। মানষে যা আত্মসাৎ করতে পারে না। তাই ভস্মসাৎ করতে চায়। আমরা মখে যাই বলি-নে কেন, কাজে পাব-সভ্যতা নয়, পশিচম-সভ্যতারই নকল করি ; তার কারণ ইউরোপীয় সভ্যতা আমাদের চোখের সমখে সশরীরে বতর্মান, অপর পক্ষে আৰ্য সভ্যতার প্ৰেতাত্মা মাত্র অবশিস্ট। প্রেতাত্মাকে আয়ত্ত করতে হলে বাহ সাধনার আবশ্যক। তা ছাড়া প্রেতাত্মা নিয়ে যাঁরা কারবার করেন তাঁরা সকলেই জানেন যে, দেহমন্ত আত্মার সম্পকে আসতে হলে অপর-একটি দেহতে তাকে আশ্রয় দেওয়া চাই; একটি প্রাণীর মধ্যস্থতা ব্যতীত প্ৰেতাত্মা আমাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন না। আমাদের সমাজের প্রাচীন দেহ আছে বটে, কিন্তু প্ৰাণ নেই। শব প্ৰেতাত্মা কর্তৃক আবিষ্ট হলে মানষ হয় না, বেতাল হয়। বেতাল সিদ্ধ হবার দরাশা খািব কম লোকেই রাখে; কাজেই শােধ মন নয়, পণ্ডেন্দ্রিয় দ্বারা গ্রাহ্য যে ইউরোপীয সভ্যতা আমাদের প্রত্যক্ষ রয়েছে, সাধারণত লোকে তারই অনাকরণ করে। অন্যাকরণ ত্যাগ করে যদি আমরা এই নবসভ্যতার অন্যবাদ করতে পারি, তা হলেই সে সভ্যতা নিজস্ব হয়ে উঠবে, এবং ঐ ব্রুিয়ার সাহায্যেই আমরা নিজেদের প্রাণের পরিচয় পাব, এবং বাঙালির বাঙালিত্ব ফটিয়ে তুলব। তরজমার আবশ্যকত্ব স্থাপনা করে এখন কি উপায়ে আমরা সে বিষয়ে কৃতকাষ হব সে সম্পবন্ধে আমার দ-চারটি কথা বলবার আছে। সাধারণত লোকের বিশবাস যে, কথার চাইতে কাজ শ্রেষ্ঠ। এ বিশ্ববাস বৈষয়িক হিসাবে সত্য এবং আধ্যাত্মিক হিসাবে মিথ্যা। মানষমাত্রেই নৈসগিক প্রবত্তির বলে ংসারযাত্রার উপযোগী সকল কাৰ্য্য করতে পারে; কিন্তু তার অতিরিক্ত কম-যার ফল একে নয় দশে লাভ করে, তা-করবার জন্য মনোেবল আবশ্যক। সমাজে সাহিত্যে যা-কিছ মহৎকায অনঠিত হয়েছে, তার মলে মন-পদার্থটি বিদ্যমান। যা মনে ধরা পড়ে। তাই প্রথমে কথায় প্রকাশ পায়, সেই কথা অবশেষে কাৰ্যােরাপে পরিণত হয়; কথার সক্ষমশরীর কাযরােপ স্থলদেহ ধারণ করে। আগে দেহটি গড়ে নিয়ে পলে তার প্রাণপ্ৰতিষ্ঠা করবার চেন্টাটি একেবারেই ব্যথা। কিন্তু আমরা রাজনীতি সমাজনীতি ধম সাহিত্য সকল ক্ষেত্রেই ইউরোপীয় সভ্যতার প্রাণের সন্ধান না করে শােধ তার দেহটি আয়ত্ত করবার চেন্টা করায় নিত্যই ইতোনভটসততোএম্পট হচ্ছি। প্রাণ নিজের দেহ নিজের রােপ নিজেই গড়ে নেয়। নিজের অন্তনিহিত