পাতা:প্রবন্ধ সংগ্রহ - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্ৰবন্ধসংগ্ৰহ মস্তিকের তীর চালনাগণে পাইতেছে জ্ঞানবিজ্ঞান বিদ্যাদর্শন পরাবত্ত ইতিহাস প্রত্নতত্ত্ব জীবতত্ত্ব; হায়াইতে বসিয়াছে দয়ামায়া শ্রদ্ধাভক্তি স্নেহমমতা কারণ্যআতিথ্য আনগত্য শিষ্যত্ব। আমরা কোমলপ্ৰাণ বাঙালি, আমাদের আশঙ্কা হয়, আমরা কোমলতা হারাইয়া क्-िश्वा श्वेश्यः शशैश्चा ८ार्गव्न । বাঙালির হািদয়ের রান্ত সব যে মাথায় চড়িয়া গিয়াছে, এ কথা যদি সত্য হয়, তাহা হইলে অবশ্য বাঙালির জীবনসংশয় উপস্থিত হইয়াছে। তবে মস্তিকের চালনা ব্যতীত এ যাগে যে সাহিত্য রচনা করা যাইতে পারে না, এ কথা নিশ্চিত। সরকারীমহাশয় প্রাচীন সাহিত্যের পক্ষপাতী, কেননা তাঁহার বিশ্ববাস, অতিনিকটঅতীতে বাঙালি গ্রামে গ্রামে পালোয়ান বাগদি গোপ চাপড়ালে প্রহরী রাখিয়া আপনাদের বিত্তস্বত্ব রক্ষা করত। এবং তাহার প্রধান কাজ ছিল আহারান্তে খড়ের চন্ডীমঙ্ডপে খাটি হেলান দিয়া মািটকলমে ইতিহাস পরাণ অবলম্বাবনে পথি লেখা। এ ভাবে অবশ্য আমরা পথি লিখিতে পারি না, কেননা আমাদের বিত্ত উপাৰ্জন করিতে হয় বলিয়া আমরা আহারাতে আপিসে যাই এবং পেন-কলমে ইংরেজি ভাষাতে ছাইপাশি কত কি লিখি। কিন্তু সরকােরমহাশয় কোথা হইতে এ সত্য সংগ্ৰহ করলেন যে পলাশীযান্ধের অব্যবহিত পাবে বাংলা আলস্যের সবগ ছিল ? যাঁহারা পড়বাতত্ত্বের সন্ধানে ফেরেন, তাঁহারা তো অদ্যাবধি এ বাংলার সাক্ষাৎ লাভ করেন নাই। বোধ হয়। সেই কারণেই ইতিহাস সরকােরমহাশয়ের কোমল বাঙালিপ্ৰাণে এত ব্যথা দেয়। ‘বাঙ্গালা সাহিত্যে যে ইতিহাসের পর দার-ইতিহাস, তাহার পর ছে-ইতিহাস দাখিল হইতেছে, আবার ইদানীং সওয়ালজবাবও যে আরম্ভ হইয়াছে’ ইহা অক্ষয়বাবরে নিকট, অর্থাৎ শ্ৰীযক্ত অক্ষয়চন্দ্র সরকারের নিকট, একেবারেই অসহ্য। কেননা এ শ্রেণীর ইতিহাসরচনার জন্য মসিতৎকচালনার প্রয়োজন আছে। অপর পক্ষে সরকার মহাশয়ের রচিত পরাবােক্ত কেবলমাত্র কলপনা-চালনার দ্বারাই সন্ট হয় এবং তাহার গঠনে কিংবা পঠনে বাঙালির কোমলতা হারাইবার কোনো আশংকা নাই। আমি সরকােরমহাশয্যের মতামত এখানে উদধিত করিয়া দিলাম, কেননা নানা দিক হইতে ইহার প্রতিধবনি শোনা যায়। এ মত সম্পবন্ধে কিছু বলা নিষ্কপ্রয়োজন। এ-সকল কথার মাল্য যে কত, তাহা নির্ধারণ করিতে কোনোরাপ মস্তিঅ'কচালনার আবশ্যকতা নাই। বঙ্গ সাহিত্য যতই শিশী হউক-না কেন, আমার বিশ্ববাস, এরপ আক্রমণে তাহা মারা যাইবে না। ܠ ܠ অপর শ্রেণীর সমালোচকেবা আধনিক কাব্যসাহিত্যের বিরোধী। ইহাদের মতে সে সাহিত্য নেহাত বাজে, কেননা তােহা সমাজের কোনো কাজে লাগে না। বঙ্কিমচন্দ্র এলং রবীন্দ্রনাথের গদা ও পদ্য কাব্যসকল যদি সরকারীমহাশয়ের বর্ণিত আলস্যাজাত স, কুমার সাহিত্য হয়, তাহা হইলে সে কাব্য যে সম্পপণ্য নিরর্থক এবং সবথা।