পাতা:প্রবাসী (অষ্টবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] গীতার আত্ম-তত্ত্ব HI ’ ভাবিয়াছিলেন আত্মার বিষয়ে এবং বলিয়াছিলেনও আত্মার বিষয়ে । তাহার মতে আত্মা একই, এ আত্মার জার শ্রেণীবিভাগ নাই। আমরাই তাহার উপদেশ বিশ্লেষণ করিয়া বলিতেছি যে, এই স্থলে আত্মা:অর্থ ‘জীবাত্মা’ আর ঐ স্থলে আত্মা অর্থ পরমাত্মা। কিন্তু গীতাকারের নিকটে জীবাত্মা ও পরমাত্মা একই। পরমাত্মার ষে বিশেষণ গীতাকারের নিকটে জীবাত্মারও সেই বিশেষণ, কারণ উভয়ই এক আত্মা । ध्र । अकडी আমরা প্রধানতঃ দ্বিতীয় অধ্যায় অবলম্বন করিয়াই আত্ম-তত্ত্ব ব্যাখ্যা করিয়াছি। কিন্তু গীতার অন্তান্ত অংশেও আত্মার প্রকৃতি বিষয়ে অনেক কথা বলা হইয়াছে। এ সমুদয় স্থলের একটি বিশেষ কথা এই যে, আত্মা অকৰ্ত্ত । যাহারা বলেন আত্মা অব্যয় ও অবিকারী, তাহাদিগকে বলিতেই হইবে যে, আত্ম কখন কৰ্ত্ত হইতে পারেন না । কৰ্ম্মের সহিত কৰ্ত্তার কি সম্বন্ধ তাহ বিশ্লেষণ করিলেই বিষয়টি পরিষ্কার হইবে। কোন কর্তা ও তাঁহার একটি কৰ্ম্মের বিষয় কল্পনা করা যাউক । এই কৰ্ত্তার প্রধানতঃ পাঁচটি অবস্থা। প্রথমতঃ যখন কৰ্ম্ম করিবার সম্ভাবনা ছিল না। দ্বিতীয়তঃ যখন কৰ্ম্ম আরস্ত হইবে। তৃতীয়তঃ যখন কৰ্ম্ম করা হইতেছে। চতুর্থত; যখন কৰ্ম্ম শেষ হইল। পঞ্চমতঃ যখন কৰ্ম্ম অতীত হইয়া স্মৃতির ব্যাপারে পরিণত হইল বা বিস্মৃতিসাগরে নিমগ্ন হইল। এই পাঁচটি অবস্থা সম্পূর্ণ অসম্পর্কিত নহে ; এক অবস্থার সহিত অন্ত অবস্থার কিছু না কিছু সম্পর্ক রছিয়াছে। আলোচনার সুবিধার জন্তই আমরা এই পাঁচটি অবস্থাকে পৃথকৃ পৃথক কল্পনা করিলাম। আবার এই পাঁচটি অবস্থা কখনই সম্পূর্ণরূপে এক নহে । নিত্যই যদি প্রথম অবস্থা থাকে, তাহা হইলে কৰ্ম্মের কোন সম্ভাবনা থাকে না । যদি প্রথম অবস্থার কোন পরিবর্তন ঘটে, যদি কৰ্ম্মসংক্রাস্ত জ্ঞান, ভাব ও ইচ্ছার উদয় হয়, তবেই কৰ্ম্মের আরম্ভ সম্ভব হয় এবং তবেই মহিষ কৰ্ম্মে প্রবৃত্ত হইতে পারে। যখন কৰ্ত্ত কৰ্ম্ম শারম্ভ করে, তখন সেই কৰ্ম্মের সঙ্গে-সঙ্গেই তাহার প্রাণে নুতন জ্ঞান ও নুতন ভাবের উদ্রেক হয় এবং নুতন ভাবে ইচ্ছশক্তি প্রয়োগ করিতে থাকে। এই সময়ে তাহার যেপ্রকার অবস্থা, কৰ্ম্ম শেষ হইবার পর তাহার লে-অবস্থা षांट्रू न। कई न”ब्र कब्रिब्र कé मूङन अखिञ्जडा লাভ করে, নুতন ভাবদ্বারা আপন্ন হয়, তাহার ইচ্ছাও নুতন ভাবে চালিত হয়। এই চতুর্থ অবস্থা তৃতীয় অবস্থা হইতে ভিন্ন। কৰ্ম্মের অব্যবহিত পরে যে অবস্থা, চিরদিন সে অবস্থা থাকে না। কৰ্ম্ম যখন প্রাচীন কালের ঘটনা হইয়া পড়ে, যখন সে-কৰ্ম্মের কথা স্মৃতিতেও থাকে না, তখন সেই কৰ্ত্তার নূতন এক অবস্থা উপস্থিত হয়। সুতরাং দেখা যাইতেছে কর্ভার মনের অবস্থা সব সময়ে এক প্রকার থাকে না, ভিন্ন ভিন্ন সময়ে তাহার অবস্থা ভিন্ন ভিন্ন প্রকার হয়। যখন কৰ্ম্মের কোন সম্ভাবনা থাকে না, তখন কর্তা আর কৰ্ত্ত নহে, সে তখন অকৰ্ত্তা। যদি তাহার অবস্থার কোন পরিবর্তন না ঘটে, তাহা হইলে সে চিরকাল অকৰ্ত্তাই থাকিয়া যাইবে। কৰ্ম্ম করিতে হইলে তাহার অবস্থার পরিবর্তন হইতেই হইবে। আবার যিনি নিত্য কৰ্ম্মশীল, তাহার অবস্থাও নিত্য পরিবর্তনশীল। কৰ্ম্ম যেমন পৃথকৃ পৃথক, কৰ্ম্ম-সংক্রান্ত জ্ঞান, ভাব ও ইচ্ছাও তেমনি পৃথকৃ পৃথকৃ। কৰ্ম্মতত্ত্ব আরও গভীর। প্রকৃতপক্ষে কৰ্ম্ম কৰ্ত্তারই বাহ প্রকাশ। কৰ্ত্তার অন্তর্গত ভাবই কৰ্ম্মরূপে বাহ জগতে প্রকাশিত হইয়া থাকে । এই বাহাবস্থা যেমন পৃথক পৃথকৃ ও পরিবর্তনশীল কৰ্ত্তার, অন্তর্গত অবস্থাও তেমনি পুখক্‌ এবং পরিবর্তনশীল। আভ্যন্তরিক অবস্থার পরিবর্তন না হইলে বাহাবস্থার পরিবর্তন হইতে পারে না । সুতরাং দেখা যাইতেছে যে, যেখানে কৰ্ম্ম, সেইখানেই কৰ্ত্তার ভিন্ন ভিন্ন অবস্থা ; কর্তৃত্ব স্বীকার করিলেই, কৰ্ত্তার বিকার ও পরিবর্তন স্বীকার করিতে হয় । গীতার মতে আত্মা অব্যয় ও অবিকারী। কর্তৃত্ব স্বীকার করিলেই বিকার স্বীকার করিতে হয় ; এইজন্য গীতাকার আত্মাতে কস্তৃত্ব অর্পণ করেন নাই। এবিষয়ে গীতাতে সাংখ্য-মত গৃহীত হইয়াছে। জাত্মা কোন কাৰ্য্য করে না, কাৰ্য্য করে প্রকৃতি। এবিষয়ে প্রমাণ এই –