পাতা:প্রবাসী (অষ্টবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খদরের কথা ঐ রাজেন্দ্রপ্রসাদ, ভাইসচান্সেলর, বিহার বিদ্যাপীঠ থদর সম্বন্ধে অনেকের নানারকম ভ্রান্ত ধারণা রহিয়াছে। "কলের কাপড়ের মতন খন্দরের প্রচার হইতে পারে কি ? উহাতে দেশের কোন লাভ আছে কি ? অতিরিক্ত দাম দিয়া মোট কাপড় কিনিতে যাওয়া মুবুদ্ধির পরিচয় কি ? যে পরিশ্রম ও অর্থ ব্যয় খন্দরের জন্ত করিব, তাহা যদি কাপড়ের কলে লাগাই, তাহা হইলে দেশের পক্ষে অধিক লাভ হয় না কি ?” ইত্যাদি কতই না প্রশ্ন থদর কন্মাকে জিজ্ঞাসা করা হইতেছে। বিশেষতঃ অর্থশাস্ত্ৰবিং পণ্ডিতের কেবল এই কথাই বলিতেছেন যে, “সেই পুরাতন মান্ধাতার আমলের চরকা যন্ত্রে হাতে-কাটা স্বভায়, হাতে-চালিত ঠকঠকি তাতে বুন পদ্ধর বাষ্প বা বিদ্যুৎ চালিত প্রকাও মিল ষন্ত্রে প্রস্তুত মুদৃশ্য ও সস্তী কাপড়ের সঙ্গে প্রতিযোগীতায় পারিয়া উঠিবে কি ?” এই প্রবন্ধে আমি এমন কতকগুলি কথার অবতারণা করিব, যা দিয়া পাঠক উপরোক্ত কথাগুলির সারবত্তা বিচার করিয়া নিজ অভিমত গঠন করিতে পরিবেন। আজকাল সমগ্র ভারতবর্ষে প্রায় ৬০ কোটি টাকার কাপড় বিদেশ হইতে আসে এবং প্রায় ঐ পরিমাণ ( অর্থাৎ প্রায় ৬ কোটি টাকার ) কাপড় ভারতের কাপড়ের মিলগুলিতে প্রস্তুত হয়। কোন বৎসর বা দুইচারি কোটি টাকার কাপড় বিদেশ হইতে বেশী আসে, কখনো বা দেশী মিলেই কিছু বেণী তৈয়ার হয় । সমগ্র ভারতবর্ষের জন্ত প্রতি বৎসর এই ৬০ কোটি ৬৯ কোটি লইয়া মোট ১২০ কোটি টাকার কাপড়ও পর্য্যাপ্ত নয়, ইহা ছাড়া, দেশের ভিতর যে-সকল হাতের ঠকৃঠকি তাত তাহাতেও প্রায় ৬০ কোটি টাকার মতন কাপড় বুনা হয়, এবং দেশের মধ্যেই সেগুলি বিক্রয় হইয়া যায়। দেশের বস্ত্রশিল্পের এই দুর্দশার দিনেও হাতে-চালিত তাতগুলিতে দেশীয় মিলগুলির সমান কাপড় বুনা হইতেছে। ইহাতে সত্যই প্রমাণ হয় যে, হাতে চালানো তাতগুলি বাম্প ও বিজলি-চালিত দেশস্থ মিলগুলির সহিত প্রতিযোগিতায় টিকিয়া আছে। ইংরাঞ্জ সরকারের পরিদর্শকেরাও ইহা স্বীকার করিতেছেন যে, বুনিবার কাজে মিলের সহিত তাত বেশ প্রতিযোগী হইতে পারে। ১৯২৪-২৫ সালের বিহার উড়িষ্যা প্রাদেশিক গবর্ণমেণ্টের রিপোর্টে (*Bihar & Orissa in 1924-25" of ox-es) fool witH :— “খুব কম লোকেই এ কথা জানে যে, এই বিহার ও উড়িষ্যা প্রদেশের লোকে যতটা কাপড় খরিদ করে, তাহা । প্রায় এক-তৃতীয়াংশের ও অধিক, এই প্রদেশের গ্রামগুলিতে তাতে বৃনা হইয়া থাকে। খাঁস্ বিহারে একটু কম হয় বটে, কিন্তু ছোটনাগপুরে অৰ্দ্ধেক কাপড় তাতেই বুন। হয়। আবার উড়িষ্যা অঞ্চলেও দুই-তৃতীয়াংশ-হইতে তিন-চতুর্থাংশ ( অথাৎ বারে আনা ) পৰ্য্যন্ত তাতেই প্রস্তুত হইয়া থাকে এই প্রদেশে [ বিহার ও উড়িষ্যায় ] হাতে চালানো তাতে প্রতি বৎসর পাঁচ কোটি টাকার কাপড় প্রস্তুত হয় এবং ঐ টাকায় কমপক্ষে পাঁচ লক্ষ লোকের ভরণ পোষণ হইয়া থাকে।” সরকারী গণনায় বিহার উড়িষ্যায় দেড় লক্ষের উপর ( মোট ১৬৪,৫৯২ ) তাত চলিতেছে। যদি এই তাতগুলি নিয়মিতরূপে দিবসের অধিক সময় পৰ্য্যস্ত চলিতে থাকে তবে যে স্ত্র অংশ দেশী ও বিলাতি মিলের কাপড় ক্রয় করা হয় তাহারও অধিকাংশ ঐ সকল তাতেই উৎপন্ন হইতে পারে। তাহা ছাড়া যে-সকল জোলা তাতীর মাল না চলায় পৈতৃক ব্যবসায় একেবারে তুলিয়া দিয়া অন্ত কাজকৰ্ম্ম ধরিয়াছে, তাহারা যদি একবার বুঝিতে পারে যে, তাদের তৈয়ারী কাপড় পুনরায় বিকিয়া যাইবে তাহা হইলে সে সব জেলা তাতী পুৰ্ব্ব পেশ পুনরবলম্বন করিবে, এবং সহজেই সমগ্র প্রদেশটির আবশ্যকীয় কাপড় তাহার বুনতে পারবে। সমস্ত ভাৱতেই এইরূপ হইতে পারে, তাতের প্রতিযোগিতা এত বেশী যে, বিশেষ কোন