পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/১৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

|

৫ম সংখ্যা । | নিয়াণ্ডুতে ফায়া পোয়ে . - ૨૭૭ --- দন্তক দেবতার সম্মুখে সন্নত, আর নয়ন ?--তাহা এ বাঘের মত মুখ, ঘোড়ার মত পা, ও কুকুরের মত শরীর gগতের বাহিরে না জানি কোন চিরসৌন্দর্য্যের নিত্য ভাণ্ডারে নিৰ্ণিমেষ দৃষ্টি নিক্ষেপ করিয়া বসিয়া আছে। দের মনে ব্রহ্মদেশের স্ত্রীলোক মাত্রেরই সম্বন্ধে কুধারণা, প্তাহার একবার উপাসনা-মন্দিরে আম্বন, দেখিবেন— সমাজের শিথিলতায় যে জাতি বিনষ্ট হইতে চলিয়াছে, ধৰ্ম্মের উদারতায় তাহা এথনো কত মহৎ । তবে ধৰ্ম্মের ভিতর জাল জুয়াচুর অন্তান্ত দেশেও যেমন আছে ব্ৰহ্মদেশেও তেমন না আছে তা নয়। মেলার . | | | | | পশ্চাৎদিকে একটা “নাক্কডো” অর্থাৎ নাটসিদ্ধা স্ত্রীলোক একটা স্ববৃহৎ আস্তানা খুলিয়া পয়সা উপার্জনের ফাঁদ পাতিয়াছিল। আমি পূৰ্ব্বে একবার এক “নাক্কডোর” সঙ্গে সাক্ষাৎ করিয়া চারি আনা পয়সা দণ্ড দিয়া আসিয়াছিলাম ; সুতরাং ইহাদের উপর আমার যে ক্ষুদ্র বিশ্বাস টুকু ছিল তাহাও এখন ছিলনা। তবু ভট্টাচাৰ্য্য দাদাকে এই মজার ব্যাপারটা দেখাইবার জন্য তিনজনে মিলিয়া নাট দেখিতে গেলাম। আমাদের যেমন ভূত ডমির ডাকিনী যোগিনীতে বিশ্বাস, বারাও তেমনি নিৰ্ব্বাণের উপাসক হইলেও ভূত ডামরে বিশ্বাস রাখে। বৰ্ম্ম ভাষায় এই সমস্ত যক্ষ রক্ষ ভূত পিশাচের সাধারণ নাম “নাই।” আমাদের দেশে যেমন কৃষ্টর জন্য ইন্দ্রদেবের, রোগ শাস্তির জন্য স্বৰ্য্যাদি গ্ৰহগণের, ধন সম্পত্তির জন্ত লক্ষ্মী দেবীর, জলের জন্য বরুণ দেবের বা মহামারী হইতে পরিত্রাণের জন্য কালীদেবীর পূজা হইরা থাকে, ব্ৰহ্মদেশেও সেইরূপ কোনও নাট রোগ শাস্তির জন্য, কেহ বা শস্তবৃদ্ধির জন্য, কেহ বা ধন দানের না, আর কেহ বা প্রেমাম্পদের প্রেম লাভের জন্য পূজিত হইয়া থাকে। কোনও কোনও নাট অতিশয় জাগ্রত দেবতা বলিয়া দূর দূরান্তরেও প্রসিদ্ধি লাভ করিয়া থাকেন, দিবারাত্রি ইহাদের নিকট কাল মুরগী, কাল পাঠা, চিনির মিঠাই ও ধূপদীপাদি নানাপ্রকার উপচার দ্রব্য প্রদত্ত হইয়া থাকে। নিয়াণ্ডুতে যে নাটসিদ্ধা শ্ৰীপাট স্থাপন করিয়াছিলেন তাহার দখলে প্রায় পনর ষোলটী নাট। তাহার কোনোট ঘোড়ায় চড়িয়া তরোয়াল হাতে শই কবি অবতারের মত সৰ্ব্বদাই ধাবনশীল, কোনওটা ধারী একটা কিস্তৃত কিমাকার জানোয়ারের উপর সওয়ার হইয়া ভ্ৰকুটকুটিল মুখচ্ছবির দ্বারা সন্মুখস্থ ভক্তবৃন্দকে নিরন্তরই ভয় প্রদর্শন করিতেছেন, কোনটী বা প্রশান্তভাবে উপবেশন করিয়া ভক্তের করপুটে অন্ন-প্রদানের জন্য মা অন্নপূর্ণার ন্যায় সৰ্ব্বদাই লোহার হাত উদ্যত করিয়া রহিয়াছেন, আবার কোনওটা বা চতুর্মুখে চারিদিকে নয়ন প্রসারিত করিয়া কোনগ্রামে, কোন সহরে মহামারী রূপে আবির্ভূত হইবেন তাহারই অনুসন্ধান করিতেছেন। আমরা শ্ৰীপাটে উপস্থিত হইবামাত্রই “নাক্কডো” দাদার মুখের দিকে চাহিয়া মিশিরঞ্জিত দন্তমালায়, রঘুবংশের সিংহের মত একটা অট্টহাস্য হাসিয়া উঠিলেন। মুখের ও কপালের রেথাগুলি মেঘাচ্ছন্ন আকাশের চঞ্চল বিজলীরেখার দ্যায় সহসা চমকিত হইয়া উঠিল, কিন্তু পরমুহুর্তেই সে হান্ত, সে কুঞ্চনমালা, বিলীন হইয়া মুখে বর্ষণোন্মুখ বারিদর্ন্দের অতুলনীয় গাম্ভীৰ্য ফুটিয়া উঠিল। তখন নেত্র স্থির ও গম্ভীর, দৃষ্টি যেন কোনও অতল সাগরের তল স্পর্শের জন্ত ডুবিয়া যাইতেছে, ঠোঁট দুইখানি যেন কোনও দুরূহ মানসিক পরিশ্রমের আনুষঙ্গিক স্নায়বিক বিক্ষোভ প্রকাশ করিবার জন্য কুঞ্চিত ও কম্পিত হইতেছে আর কপালের রেখাগুলি কোনো সময় আকুঞ্চিত, কোনো সময় প্রসারিত, কোনো সময় বক্রীভূত, কোনো সময় বা সম্পূর্ণ বিলীন হইয়া নাক্কডোর অসীম মনোবিকার বিকাশ করিতে আরম্ভ করিল। আমরা সেখানে না বসিতেই এতখানি ব্যাপার সম্পন্ন হইয়া গেল ! ভাবিলাম—পরে যেন কতই কি আছে। দাদা তো সে অমানুষিক মূৰ্ত্তি দেখিয়া স্তম্ভিত ; সেরূপ বেদে নাই পুরাণে নাই, আগমে নাই নিগমে নাই, তন্ত্রে · নাই মন্ধে নাই—মুতরাং তাহা বেদাগমের অতীত ; সে চেহারা—সে কাল, এ কাল, আসে কাল-এ ত্রিকালের কোনো কালেই কেউ কখনো দেখে নাই, দেখিতেছে না ও দেখিবে না, সুতরাং তাহা ত্রিকালাতীত ;- সে আকার ইঙ্গিত, শ্মশানে মশানে, বনে জঙ্গলে, তুমি আমি, “দাদা” ভাই, বন্ধু বান্ধব কোন লোকেই কোনো দিন সাক্ষাৎ পায়নাই—কোনদিন পাইবে কি না সন্দেহ স্বতত্ত্বাং তাহ লোকাতীত। এমন নভূত নভাবী হাবভাব দেখিয়া