পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/১৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8 o প্রবাসী। [ ৮ম ভাগ। MeMSMSMMSSMMMMSMMMMMSMMMMMMMAMSMMSMMSMSMSMSMMSMMSMMMMMMMMAMMMMMMMMSMMSMMSMSMSMMMMS দেবসভায় যাইতে হইবে, সেখানে অনেক কাজ আছে। বৈদুৰ্য্যমণি ও হীরক, প্রবাল, মুক্ত প্রভৃতি নানা রত্নখচিত অট্টালিকাপ্রাচীরের ঔজ্জ্বল্য র্তাহীদের চক্ষু ঝলসাইয়া দিল ; দ্বারে অসংখ্য চতুভূজ প্রহরী পাহারা দিতেছে, তাহাদের চারি হস্তে চারি প্রকার অস্ত্রশস্ত্র বিরাজ করিতেছে। ব্ৰহ্মা তখন পূজায় বসিয়াছেন, সেই জন্য র্তাহাদিগকে অপেক্ষা করিতে হইল ;–একজন প্রহরী তাহাদিগকে বিশ্রামঘর দেখাইয়া দিয়া গেল । নামাবলী গায়ে কমণ্ডলু হাতে চার কপালে চারিটি ফেঁটি কাটিয়া ব্ৰহ্মা বৈঠকখানায় দেখা দিলেন। সকলে সসন্ত্রমে দাড়াইয়া উঠিয় তাহাকে অভিবাদন করিলেন। ব্ৰহ্মা চতুভূজ নীরবে তুলিয়া সকলকে বসিতে ইঙ্গিত করিলেন। তাহার সদাপ্রশান্ত চতুমুখ আজ কেমন বিষাদভারাক্রান্ত, বিরক্তির চিহ্নবিজড়িত। তিনি আসন গ্রহণ করিলে পর সকলে উপবেশন করিলেন। তখন ব্ৰহ্মার বাক্যম্পুরণ হইল, তাহার চারি কণ্ঠের গম্ভীর স্বর একত্রে বাহির হইয়া সকলকার ভীতি উৎপাদন করিল। দলের মধ্যে একজন ছোকরা ছিল, ব্ৰহ্মার চার জোড়া ওষ্ঠ এক সঙ্গে কম্পিত হইয় যে একটা হাস্তোদ্দীপক শব্দ করিতেছিল তাহাতে সে হাসি চাপিতে পারিতেছিল না, তাহার আকর্ণ গও ক্ষণে ক্ষণে লাল হইয়া উঠিতেছিল। ব্ৰহ্মা বিরক্তিবিজড়িত কণ্ঠে কহিলেন,—“আমার সময় বড় অল্প, হাতে বিস্তর কাজ, যাহা বলিবার আছে চট্‌পট্‌ সারিয়া লও।” প্রতিনিধিদলের প্রধান ব্যক্তি তখন তাড়াতাড়ি দাড়াইয়া উঠিয়া বলিলেন—“আমরা আপনার অধিক সময় নষ্ট করিব না ; কেবল ধূমপানযন্ত্রসংক্রান্ত দুই চারিট কথা বলিব। আপনি আমাদের দরখাস্ত—” ব্ৰহ্মা বাধা দিয়া বলিলেন—“অত বিশদ বর্ণনার আবশ্যক নাই, মোট কথাটা বল ।” যিনি কথা আরম্ভ করিয়াছিলেন বাধা পাইয়া তিনি থতমত খাইয়া গেলেন, কি বলিবেন গোলমাল হইয়া গেল, কিন্তু তাহ সামলাইয়া লইয় পুনরায় কহিলেন,—“একদিন বিশ্বকৰ্ম্ম আমাদের সভার সম্পাদক—" ব্ৰহ্ম বিরক্ত হইয়ু বলিলেন—“সমস্ত কথা শুনিবার আমার সময় নাই, এখুনি মানাহার শেষ করিয়া আমাকে তোমাদের আসল কথাটা কি শীঘ্ৰ বল, নয় ত সময়ান্তরে আসিও।” - প্রধান ব্যক্তি তাড়াতাড়ি বলিয়া উঠিলেন—‘ন, ন আমি এখুনি সারিয়া লইতেছি। গুমুন না, এ—ই বিশ্বকৰ্ম্ম৷ আ-খা-স দিয়াছেন ধূমপানযন্ত্র তিনি নিৰ্ম্মাণ করিবেন, কিন্তু—” - ব্ৰহ্ম আরো চটয়া উঠা বললেন--বিশ্বকৰ্ম্ম আৰাম | দিয়াছেন তা আমার কি ?” সেই ব্যক্তি তৎক্ষণাৎ জবাব দিলেন—“ন, না, তা ন৷ কিন্তু—” “কিন্তু কিন্তু করিয়াই তুমি আমাকে বিরক্ত করিলে, এত চেষ্টা করিয়াও আসল কথাটা এখনও শুনিতে পাইলাম না, আমি এমন করিয়া আর সময় নষ্ট করিতে পারি না।" এই বলিয়া ব্ৰহ্মা গাত্ৰোখান করিলেন । সেই প্রধান ব্যক্তি অল্পে ছাড়িবার পাত্র নহেন। তিনি। জোড়করে ব্রহ্মার স্তবগান করিয়া কহিলেন—“হে দেব: শ্রেষ্ঠ ! হে সৃষ্টিকর্তা ! হে পদ্মযোনি । আপনারই অনুগ্রন্থে আমরা দেহে প্রাণ, নয়নে আলোক, নাসিকায় বাতাস পাইতেছি, আপনারই প্রসাদে জীবন ধারণ করিতেছি, আপনার রূপায় সৰ্ব্ববিষয়ে স্বচ্ছন্দতা লাভ করিতেছি, আপনি আমাদের রক্ষাকৰ্ত্তা, ত্রাণকৰ্ত্ত, সৰ্ব্বে-সৰ্ব্বা, আমরা আপনার শ্রীচরণের দাস মাত্র ; আপনি আমাদের প্রতি বিমুগ্ধ হইবেন না। হে দেব ! অধমদিগের প্রতি করুণা কটাক্ষ করুন।” - ব্ৰহ্মা স্তবে গলিয়া গেলেন, নিজের উপর একটু গঞ্জ বোধ করিয়া কহিলেন—“অবশ্য, অবশ্য ; তোমাদের দুঃখ আমার কাছে নয় ত আর কাহার কাছে জানাইবে ? আমি তোমাদের সমস্ত অভাব দূর করিব।” এই বলিয়া তিনি পুনরায় উপবেশন করিলেন। তখন ধূমপানযন্ত্রের বৃত্তান্ত আদ্যোপাস্ত র্তাহার সম্মুখে বিবৃত করা হইল ; কথায় মত্ত হইয়া তিনি দেব-সভার কা ভুলিয়া গেলেন। বক্তা মধ্যে মধ্যে র্তাহার প্রশংসা গান করিয়া তাহার শ্রবণের আগ্রহ বৃদ্ধি করিতে লাগিলেন। | i ৬ষ্ঠ সংখ্যা । ] SAMSMSMSMSMSMSMSMSAASAASAASAASAAAS ছিল, তা ব্ৰহ্মাণ্ডস্থজনে সব গিয়াছে। থাকিবার মধ্যে আছে এই কমণ্ডলুট। তাহা তোমাদিগকে দিতে পারি, যদি কোনো কাযে লাগে,–কিন্তু বিশ্বকৰ্ম্মাকে বলিও যদি উহা ব্যবহারে না লাগে ত আমায় যেন ফিরাইয়া দেন ; ওটা শান থেকে আলে, করে। o 8 ধূমপায়িসভার বাপান একদিন কৈলাস অভিমুখে উড়য়া . চলিল। অসংখ্য জনপদ, নদ, নদী, অরণ্য অতিক্রম করিয়া প্রতিনিধিগণ দূর হইতে দেখিতে পাইলেন, এক রজতগুত্ৰ পৰ্ব্বত, দূর হইতে তাহাকে মেঘ বলিয়া ভ্রম হয়; মন্দোদনামক স্বচ্ছতোয় শীতলবারিপূর্ণ সরোবর তাহার পদচুম্বন করিতেছে, তাহারই তীরে নানা বিচিত্রমুগন্ধিপুষ্পভারাবনতত্ত্বক্ষাবলি-শোভিত এক পবিত্র মনোরম নন্দন কানন, তাহার মধ্যে যক্ষ রক্ষ কিন্নর গন্ধৰ্ব্ব ও অপরাগণ মৃত্যগীতবাদ্যে ও ক্রীড়াকলাপে মত্ত রহিয়াছে। কৈলাস মধ্যে পরম শান্তি মূৰ্ত্তিমান হইয়া বিরাজ করিড়েছেন,—কোথাও চাঞ্চল্য বা উত্তেজনার লেশমাত্র নাই ; বিশ্বেশ্বর সিদ্ধগণ সংযতব্রত হইয়। তপশ্চরণ করিতেছেন, সকলেই যেন ধ্যানমগ্ন, গম্ভীর, সংযত । সিংহ ব্যাস্ত্র প্রভৃতি হিংস্র জন্তু হিংসাদ্বেষাদি ভুলিয়া মৃগযুথের সহিত একত্রে ক্রীড়া করিতেছে । বলাকামালায় নভস্তল যেমন মুশোভিত হয়, অতিমুন্দর কামধেনু সকল শ্রেণীনিবদ্ধ থাকায় ঐ স্থান সেইরূপ স্থশোভিত হইয়া রহিয়াছে। ঘণ্টাকর্ণ, বিরূপাক্ষ, দীর্ঘরোমা, শতগীব, উরুবক্ত, প্রভৃতি সহস্ৰ সহস্র ভূতগণ চতুৰ্দ্দিকে পরিভ্রমণ করিতেছে। তাহাদিগকে দেখিলে ত্রাসের উদয় হয় । রুদ্রাক্ষমালাশোভিতকণ্ঠ জটাভারাক্রান্ত দেবাদিদেব মহাদেব বসিয়া বসিয়া স্তিমিতনেত্রে নতমস্তকে ঝিমাইতেছেন, সতীদেবী সম্মুখে বসিয়া পদসেবা করিতেছেন। ঘরের চারিদিকে অনেক জিনিস ছড়ান ; গোটাকতক শুদ্ধ বিল্বপত্র ও ধুতুরাফুল বাতাসে ইতস্তত করিতেছে, একদিকে একছড়া ছেড়ামালা ও একখানা বাঘছাল পড়িয়া আছে ; তাহারই পাশে মহাদেবের ডমরুট বৰ্ত্তমান। এককোণে স্ত,পীকৃত ছাই, মধ্যে মধ্যে পবনতাড়িত হইয়া হুকার জন্ম । 98>


مت*-مہ ------------ابت ----------------------- ...........۔ بے

ভৃঙ্গী একটা প্রকাও নিমকাঠ লইয়া সিদ্ধি ঘুটিতেছে এবং গুন গুন্‌ স্বরে গান গাহিতেছে। মহাদেবের বাহন বলদটা গোয়ালে শুইয়া রোমস্থ করিতেছে, সাপগুলা একটা গর্ভের মধ্যে কুণ্ডলী পাকাইয়া নিশ্চিন্ত মনে বিশ্রাম করিতেছে। নন্দী লগুড়হস্তে বহিদ্বার রক্ষা করিতেছে, গঞ্জিকাসেবনে তাহার চক্ষুণ্ডুটা জবাফুলের মত রক্তবর্ণ ! প্রত্যহ বৈকালে সিদ্ধিসেবন করা মহাদেবের অভ্যাস। এখনও সিদ্ধি ন পাইয়া তাহার ক্রমাগত হাই উঠিতেছে, মনটা কেমন ফস ফস করিতেছে,—তিনি একবার ভৃঙ্গীকে হাক দিলেন। এমন সময় নন্দী বহিদ্বার ছাড়িয়া মহাদেবের সম্মুখে উপস্থিত হইয়া করযোড়ে নিবেদন করিল যে, দর্শন আকাজায় ভক্তবৃন্দ বাহিরে অপেক্ষা করিতেছেন। মহাদেব তাহাদিগকে ভিতরে আনিবার হুকুম দিলেন। সতীদেবী স্বামীর পা ছাড়িয়া কক্ষাস্তরে প্রবেশ করিলেন। অরক্ষণ মধ্যে ধূমসেবিসভার প্রতিনিধিদল সেখানে দেখা দিলেন। ভৃঙ্গী সিদ্ধি ঘোট। ফেলিয়া তাহাদের বসিবার জন্ত ক্ষিপ্রহস্তে বাঘছালখানা পাতিয়া দিল। মহাদেব ভক্তগণকে দেখিয়া পরম প্রত হইলেন, কুশলাদি প্রশ্নের পর জিজ্ঞাসা করিলেন—“হে ধুম্ৰলোকবাসিগণ ! ধূমসেবনে তোমাদের কোন ব্যাঘাত ঘটতেছেন ত, মর্ত্যের যজ্ঞধূম তোমাদের দিকে নিয়ত পৌছিতেছে ত, কেহ কোনপ্রকার উপদ্রব ঘটায় না ত ?” দলের প্রধান ব্যক্তি উত্তর করিলেন--“হে দেবাদিদেব ! কলিকালে জম্বুদ্বীপে যজ্ঞকাৰ্য্য বন্ধ বটে কিন্তু কল কারখানা, কলের গাড়ী প্রভৃতি হইতে যে ধূমোদিগরণ হয় তাহ বড় কম নয়। উক্ত দ্বীপে বৈদ্যুতিক ব্যাপারের প্রসার বুদ্ধির সঙ্গে মনোমধ্যে আশঙ্কার উদয় হইতেছে বটে, কিন্তু আপনার. শ্ৰীচরণাশীৰ্ব্বাদে আজ পর্য্যন্ত ধূম সেবনে কেহ কোন ব্যাঘাত জন্মাইতে পারে নাই ; কেবল মধ্যে মধ্যে উন্নতিবিধায়িনী পত্রিকাখানা আমাদের প্রতি কটুবাক্য বর্ষণ করে। আমরা তাহাদের কথায় কর্ণপাত করি না প্রতিবাদও করি না, আমরা বাক্যের দ্বারা নয়, কার্য্যের দ্বারা প্রতিপন্ন করিতে চাই যে ধূম সেবন ওঘুমপানী সভা হইতে ত্ৰিলোকের প্রভূত উপকার । সাধিত হইবে।” - সমস্ত শুনিয়া ব্ৰহ্মা বলিলেন,—“আমার বাপু, যা সম্বর | সতী ও মহাদেবের অঙ্গে আসিয়া লাগিতেছে। অদূরে মহাদেব সাধু সাধু শব্দে এই উক্তির সমর্থন করিলেন