পাতা:প্রবাসী (অষ্টম ভাগ).pdf/২৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

براب8b একটি সঙ্গীত হইত। মিসেস ক্লিফৰ্ড প্রায়ই হাৰ্ম্মোনিয়মে বসিতেন। মনে আছে, একদিন রাত্রে বড় দুর্য্যোগ। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। ঝড় বহিতেছে। রহিয়া রহিয়া প্রবল বেগে বৃষ্টি পড়িতেছে। ঘন ঘন মেঘ গৰ্জ্জন। অদূরে উন্মত্ত সিন্ধু ভীমকল্লোলে প্রকৃতির তাণ্ডব নৃত্যে যোগ দিয়াছে। সে রাত্রে উপাসনার পর একটি ধৰ্ম্মসঙ্গীত হইল। তাহার ভাবার্থ এই,—হে প্রভু, অস্ত রজনীতে সমুদ্রবক্ষে অর্ণবপোতে তোমার যে সকল সন্তান অবস্থান করিতেছে, তুমি তাহাদিগকে সৰ্ব্ব বিপদ হইতে রক্ষা করিও।—আমি ধাৰ্ম্মিক ব্যক্তি না হইলেও সে রজনীর সে প্রার্থনাটি আমার মনে গভীরভাবে অঙ্কিত হইয়া আছে। গান্ধ্যোপাসনা শেষ হইতে বাত্রি দশটা বাজিয়া যায়। তথন সকলে পরম্পরকে শুভরাত্রি অভিবাদন করিয়া নিজ নিজ শয়নকক্ষে প্রবেশ করেন। যে রাত্রে ঐ প্রকার উর্যোগ গিয়াছিল, তাহার পরদিন প্রভাতে প্রাতরাশের পর আমরা কয়েকজন সমুদ্রতীরে ভ্রমণ করিতে গেলাম। দেখিলাম আশ্চর্য্য কাও ! সমুদ্রতীরে ইলেক্‌টিক রেলওয়ের যে লাইন পাতা ছিল, তাহা বাকিয়া, চুরিয়া, ভাঙ্গিয়া, ছিড়িয়া সমস্ত নষ্ট হইয়া গিয়াছে। প্রস্তরাকীর্ণ তটভূমির উপর বিলক্ষণ মজবুদ ভাবে লোহার রেল বসানো ছিল। কেবল মাত্র জলের ঢেউ আসিয়া তাহাতে লাগিয়াছে—তাহার উপর দিয়া জল চলিয়া গিয়াছে। তাহারই বলে লোহার রেল ছিন্ন ভিন্ন ! না জানি কি প্রচণ্ডবেগেই জল আসিয়া সে গুলির উপর আঘাত করিয়াছিল! আমাদের বাড়ী হইতে এক মাইল দূরে, পশ্চিম দিকে, Palace Pier অবস্থিত। সেই পিয়র হইতে, সমুদ্রের কুলে কুলে, লাইন পাতা আছে। তাহারই উপর দিয়া কয়েকখানি ইলেক্টক্ ,কার যাতায়াত করে। এই লাইনটির কিয়দংশ বা তটভূমির উপর স্থাপিত, কিয়দংশ বা কাষ্ঠনির্মিত মঞ্চের উপর দিয়া গিয়াছে। তটভূমি ত সৰ্ব্বত্র সমতল নহে,-যেখানে নিম্নভূমি, সেইখানেই এই প্রকার -- মঞ্চ নিৰ্ম্মাণের প্রয়োজন হইয়াছে। এই প্রবন্ধ সংলগ্ন ছবিতে পাঠক এইরূপ একটি অংশ দেখিবেন। মঞ্চের - প্রবাসী । [ ৮ম ভাগ। সমূহ (sprays) উৎক্ষিপ্ত হইয়া থাকে। আমরা অনেক সময় এই ট্রামে আসিতে আসিতে, এই প্রকার জলকণা, | ক্ষণস্থায়ী যে তাহাতে বস্ত্রাদি আর্দ্র হয় না,--একটু নৱম | সমূহের দ্বারা অভিষিক্ত হইয়াছি। কণাগুলি এত স্বল্প ও হয় মাত্র। পিয়ার হইতে শেষ সীমা অবধি এই ইলেকট্রন্থ রেলওয়েতে আসা এবং সেই কারেই ফিরিয়া যাওয়া অনেকে অত্যন্ত আমোদের বিষয় মনে করে। আমরা যেদিন এই কারে দুই একবার ভ্রমণ না করিতাম সেদিন যেন দিবসের । কৰ্ত্তব্য অসম্পূর্ণ থাকিয়া যাইত। রেলওয়ের শেষ সীমা ঠিক আমাদের বাড়ীর সম্মুখেই ছিল। সকল সমুদ্রতীরবর্তী নগরে দুই একটি করিয়া পির থাকে। অন্য নগরে যেমন সাধারণের বায়ুসেনা{ উদ্যানাদি থাকে, সমুদ্রতীরবর্তী নগরে তেমনি পিয়র। ব্রাইটনে দুইটি পিয়র আছে-একটির নাম প্যালেস পিয়র,- f অপরটির নাম ওয়েষ্ট পিয়র। প্রথমোক্তটি অপেক্ষাকৃন্ত নূতন এবং লোক সমাগম তাহাতেই অধিক। নদীর উপর যেমন করিয়া সেতু বাধা হয়, তীরস্থ রাজপথ হইতে সমূদ্র জলের কিয়দর অবধি সেইরূপ বাধিয়া, শেষাংশ বিষ্ঠী চত্বরাকার করিয়৷ তদুপরি প্রমোদভবনাদি নিৰ্ম্মাণ করা হয়। এই সেতুবৎ মঞ্চ রাজপথ পরিত্যাগ করিয়া কিয়লু --বেলাভূমির উপর দিয়া যায়,—তাহার পর জল। চত্বরাক্ত শেষাংশ গভীর জলের উপর অবস্থিত। প্যালেস পিয়রের মধ্যস্থলে একটি নাট্যশালা আছে, তথায় প্রতিরাত্রে অভিন হইয়া থাকে। নাট্যশালার বাহিরে চারিদিক দ্বিনি । নানাবিধ দোকান পাট । খবরের কাগজ হইতে আরম্ভ । করিয়া পানাহারের দ্রব্য পৰ্য্যস্ত সবই পাওয়া যায়। আমর প্রাতরাশের পর, একটি দল প্যালেস পিয়রে গিয়া আল্লা লইতাম-বেলা ১২টা ১টা অবধি থাকিতাম। কথনঃ বেড়াইয়া বেড়াইতাম, কখনও বসিয়া গল্প গুজব করিতাম। | মাঝে মাঝে ব্যাও বাজিত। কত তামাসা দেখা যাইত : এক স্থানে একটি ক্ষুদ্র ঘর নিৰ্ম্মাণ করিয়া ডুবারি তামাল দেখাইতেছে। বাহির হইতেই দেখা যায়, এক বাঞ্জি নিয়ে সমুদ্রের জলরাশি সময়ে সময়ে আসিয়া মহোল্লাসে নৃত্য । করিয়া যায় । সে সময় বঁধে প্রতিহত ইষ্ট উচ্ছে জলঙ্গ o ব্রাইটনের ওল্ড ষ্টাইন উদ্ধান।