পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অগ্রহায়ণ আমাদের অবস্থা

  • *

১৬৭ দাবী করতে পারে ঈশ্বরের আপন সন্তান ব’লেই । তার মতে গণতন্ত্রের মধ্যে ঐশ্বরিক বিধানের ষে একটি ঐক্যনীতি আছে সংকটের দিনে সকল প্রকার বাহ তাড়নার চেয়ে সেইটেষ্ট আমাদের পক্ষে শ্রেষ্ঠ অবলম্বন। রাষ্ট্রঘটিত আলোচনার সঙ্গে রাষ্ট্রনেতারা ঐশ্বরিক বিধানের একত্রে উল্লেখ প্রায় করেন না। কেননা ঐশ্বরিক বিধানকে যদি মানতে হয় তা হলে দেশে কালে তাকে বিশ্বভূমিকার উপরে স্থাপিত করা চাই । ব্রিটনের রাষ্ট্রনীতি যদি জগদীশ্বরের ইচ্ছানুকূল ধমনীতির অন্তর্গত হয় তা হলে সেই নীতির মধ্যে কেবল ইংরেজের নয় আমাদেরও সমান স্থান আছে। আমরাও মানুষ, আমরাও ঈশ্বরের সন্তান, সুতরাং আমাদেরও মানব-মর্যাদা আমাদেরও ব্যক্তিগত স্বাতস্থা ধমনীতির ক্ষেত্রে সম্মানের যোগ্য। রাষ্ট্রনৈতিক ব্যবহারে তাকে যদি অস্বীকার করা হয় তা হলে সমষ্টিতন্ত্রীয় রাষ্ট্রনীতিকে অন্তত ঈশ্বরের নাম ধরে নিন্দা করা উচিত হয় না। রাষ্ট্রক ইচ্ছার প্রভাবকে স্বরাষ্ট্রের সীমায় সংকীর্ণ করে দেখবার প্রথা চলে আসছে কিন্তু ঈশ্বরের ইচ্ছার প্রভাবকে সেই সীমার মধ্যেই একান্ত ক’রে দেখা তো চলে না। আল বলডউইন তাদের wièfgātā āşto Acocoa “These ideals require men of their own free will to co-operate with God himself in the raising of mankind." & স্বাঞ্জাতিক অধিকারের মধ্যে মৈত্রীর প্রাধান্তই প্রবল সেখানে মামুষের উৎকর্ষ-সাধনের জন্যে ঈশ্বরের সহযোগিতার কথা স্বভাবতই মনে আসে কিন্তু পরজাতীয় অধিকারে যেখানে শক্তির শাসনতন্ত্রই প্রবল সেখানে মানুষকে উপরে তোলবার জন্তে ঈশ্বরের সঙ্গে হাত মেলানোর কথা মনে আনা কখনই সহজ হ’তে পারে না । বস্তুত আমরা তার উলটে পরিচয়ই পেয়েছি। অতএব আমাদের শাসনকতারা স্বগোত্রীয় মণ্ডলীর মধ্যে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রনীতির উচ্চ আদর্শের অযুগত এ কথা শুনে আমাদের উৎসাহের কোনো কারণ ঘটে না, কিন্তু এই প্রসঙ্গে ঈশ্বরের নাম নিলে সেটা আমাদের কানে দুঃখ দেয় । শেষ পর্যন্ত প্রশ্ন রয়ে গেল আমাদের গতি কী। ষে পথে বড়ো বড়ো দেশ আজ উন্মত্তের মতো ধাবমান সে পথ আমাদের অবরুদ্ধ তাতে সন্দেহ নেই। সে পথে শক্তিশালীরাও যে কোথায় পৌছবেন সেটা সন্দেহজনক । এইটুকুই বলতে পারি ইতিহাসের গতি রহস্যময়। দুর্বলের দুঃখ ও প্রবলের জাহাজে ছিদ্র করে দিয়েছে তার প্রমাণ আছে। ইতিহাসে যুদ্ধবিগ্রহই একমাত্র হযোগ নয়, বঞ্চিতের নৈরাপ্তও কোথা থেকে মুযোগ আকর্ষণ করে আনে এখনি তা বলতে পারি নে। বলতে পারি নে ব’লেই তার আকস্মিক আবির্ভাব বলশালীকে এক দিন অভিভূত করবে। যে অভাগাদের পক্ষে মৈত্রীর পথেও কাটা, যুদ্ধের পথেও বাধা তারাই একান্ত আগ্রহের সঙ্গে ঈশ্বরের অভাবনীয় বিধানের দিকে তাকিয়ে থাকে। কিন্তু রাষ্ট্রক্ষেত্রে যার পর জাতীয়ু মানুষকে চিরকালের মতো নাবিয়ে রাখে, আর যুদ্ধক্ষেত্রে মাতুষ-মার। কলের সংখ্যা বাড়িয়ে চলে তাদের মুখে হরিনামের দোহাই শুনলে মন আশ্বস্ত হয় না। ঈশ্বরের নাম নিয়েই বলব বাইরের থেকে আমাদেরকে দেখায় নিঃসহায় তবু আমরা নিঃসহায় নই। আমরা বাস করি ষে মানবমণ্ডলীর মধ্যে, তারা সকলেই সাম্রাজ্যলুব্ধ নয়, আমাদেরও আপন বলে গণ্য করবে এমন নিম্পূহ মতুষাত্ব কোন একটা জায়গা থেকে আমাদের পাশে এসে দাড়াবে। নইলে ঈশ্বরের বিধানের অর্থ কী । · Qix y IV)