পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Yoe aप्लेकी Sow মালদা বিস্ময়ে সম্রমে সন্ত্রস্ত হইয়া গেল। এই স্তব্ধ দ্ধিপ্রহরে তাহাদের দুয়ারে দাড়াইয়া ছোট-রায়বাড়ীর গিল্পী হেমাঙ্গিনী-সঙ্গে তাহার এগার-বার বৎসরের মেয়ে উমা ! মানদা প্রসন্ন হইতে পারিল না। মুনীতি কিন্তু পরম আশ্বাসে আশ্বস্ত হইয়া উঠিলেন, বলিলেন—দিদি ! মনে মনে ধেন আপনাকেই আমি খুজছিলাম দিদি ! হেমাঙ্গিনী সুন্দর হাসি হাসিয়া বলিলেন—আমি কিন্তু কিছু জানতে পারিনি ভাই। দেবতা-টেবতা ব’লো না যেন। আজ আমি তোমার দাদার দূত হয়ে এসেছি । তিনিই পাঠালেন আমাকে । স্বনীতি ঈষৎ শঙ্কিত হইয়া উঠিলেন, বলিলেন— কেন দিদি ? —বলছি । আরে উমা গেল কোথায় ? উমা, উমা ! উমা ততক্ষণে বাড়ীর এদিক ওদিক দেখিতে আরম্ভ করিয়া দিয়াছে। কোথায় কোন ৰোণ হইতে সে উত্তর দিল—কি ? হেমাঙ্গিনী বিরক্ত হইয়া বলিলেন—করছিস কি ? এখানে এসে ব’স । উত্তর আসিল—আমি সব দেখছি । মুনীতি হাসিয়া বলিলেন—অ উমা, মা এখানে এস না, তোমায় এক বার দেখি ! উমা আসিয়। দরজায় দুই হাত রাখিয়া দাড়াইল, বলিল—আমাকে ডাকছেন ? স্থনীতি বলিলেন—বা:, উমা যে বড় চমৎকার দেখতে হয়েছে, অনেকটা বড় হয়ে গেছে এর মধ্যে ওকে কলকাতায় আপনার বাপের বাড়ীতে রেখেছেন, नग्न नेिनेि । -হ্যা ভাই, এখানকার শিক্ষা-দীক্ষার উপর আমার মোটেই শ্রদ্ধা নেই। ছেলেকে অনেক দিন থেকেই সেখানে রেখেছি, মেয়েকেও পাঠিয়ে দিয়েছি এক বছরের উপর । তার পর মেয়ের মুখের দিকে চাহিয়া বলিলেন, উনি কিন্তু ভারী চঞ্চল আর ভারী আদুরে, সেখানে গিয়ে কেবল বাড়ী আসবার জন্যে ঝোক ধরেন। অমল কিন্তু আমার খুব ভাল ছেলে, সে এখানে আসতেই চায় না। বলে, ভাল লাগে না এখানে । উমা ঘাড় নাড়িয়া নাড়িয়া হাসিতে হাসিতে বলিল, ত লাগবে কেন তার, দিনরাত্রিই সে কলকাতায় ঘুরছেই ঘুরছেই ! বন্ধু কত তার সেখানে। আর আমাকে এক মুখটি বন্ধ ক’রে থাকতে হয়। সে বুঝি কারও ভাল লাগে ! স্থনীতি হাসিলেম, বলিলেন—আপনি ভারি কঠিন দিদি ! এই সব ছেলে-মেয়েকে পাঠিয়ে দিয়ে থাকেন কেমন ক’রে ? ছেলেকে অবশ্য পাঠাতেই হয় –কিন্তু এই দুধের মেয়ে, একেও পাঠিয়ে দিয়েছেন ? হেমাঙ্গিনী কোন উত্তর দিলেন না, শুধু একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিলেন। মেয়েকে বলিলেন -যা তুই দেখে আয়, এদের বাড়ীটা ভারি সুন্দর। কিন্তু কাল দুপুরের মত বাইরে পড়িস নে ধেন ! উমা চলিয়া গেল। হেমাঙ্গিনী এতক্ষণে সুনীতিকে বলিলেণ—জান মুনীতি, এই বাড়ীর কথাই আমার মনে অহরহ জাগে । আমি কিছুতেই ভুলতে পারি না, ঠাকুরজামাইয়ের এই অবস্থার কারণ, এ বাড়ীর এই দুর্দশ এর একমাত্র কারণ হ’ল রাধারাণী, রায়-বংশের মেয়ে। এত বড় দাম্ভিক মুখরার বংশ আর আমি দেখি নি ভাই ! আমার ছেলে বিশেষ ক’রে মেয়েকে আমি এর হাত থেকে বাচাতে চাই । রাধারাণীর অদৃষ্টের কথা ভাবি আর আমি শিউরে উঠি। স্বনীতি চুপ করিয়া রছিলেন, হেমাঙ্গনী একটু ইতস্তত করিয়া বলিলেন—তোমার দাদাই আমাকে পাঠালেন, তোমার কাছেই পাঠালেন । স্থনীতি ইন্দ্র রায়ের বক্তব্য শুনিবার জন্য উৎকণ্ঠিত দৃষ্টিতে হেমাঙ্গিনীর মুখের দিকে চাহিয়৷ রছিলেন, হেমাঙ্গিনী বলিলেন—দায়রা মামলায় মজুমদারের চক্রান্তে ষে তোমাকে সাক্ষী মান হয়েছে, সে তিনি শুনেছেন। মুহূর্বে স্বনীতি কাদিয়া ফেলিলেন, সে কান্নায় কোন আক্ষেপ ছিল না, শুধু দুটি চোখের কোণ বাহিয়া দুটি অশ্রুধারা গড়াইয় পড়িল । হেমাঙ্গিনী সস্নেহে মাপন অঞ্চল দিয়া স্থনীতির মুখ মুছাইয়া দিয়া বলিলেন— কঁাদছ কেন ? সেই কথাই তো তোমার দাদা ব’লে পাঠালেন তোমাকে, স্বনীতি যেন ভয় না পায়, কোন লজী-সঙ্কোচ না করে । রাজার দরবারে ডাক পড়েছে —যেতে হবে, কিসের লজ্জা এতে ! আবার স্থনীতির চোখের জলে মুখ ভাসিয়া গেল, তিনি নিজেই আত্মসম্বরণ করিয়া বলিলেন–কিন্তু ওকে কার কাছে রেখে যাব দিদি ? সেই ষে আমার সকলের চেয়ে বড় ভাবনা । তার পর আমিই বা কার সঙ্গে সদরে যাব ? হেমাঙ্গিনী চিন্তাকুল মুখে বলিলেন—প্রথম কথাটাই আমরা ভাবি নি স্থনীতি ! শেষটার জন্যে তো আটকাচ্ছে না । সে তোমার ছেলেকে আসতে লিখলেই হবে, অহীনই তোমার সঙ্গে যাবে। কিন্তু— । সুনীতি বলিলেন—আরও ভাবছি কি জানেন ? ওঁর