পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৪৬ করে নি। এরা নাচকে সম্পূর্ণ একটি গানের মত ক’রে তৈরি করল, এ নাচের মূল উদেশ্ব হ’ল কেবল গামেলান সঙ্গীতকে নাচের ভিতর দিয়ে ফুটিয়ে তোলা । এই আদর্শেই আধুনিক বালির মৃত্যশিল্প প্রসার লাভ ক’রে চলেছে, প্রাচীন নৃত্যাভিনয়ের সঙ্গে এইখানেই তার মূল প্রভেদ । লেগং বা কবিয়ার নাচটি ঠিক কোন সময়ে বা কার দ্বারা প্রথম প্রবর্তিত হয় এ খবর আজকাল কেউ দিতে পারে না, বোধ হয় সে-বিষয়ে পূৰ্ব্বে কেউ কোন হিসাব রাখবারও প্রয়োজন বোধ করে নি । গত মহাযুদ্ধের পরে আর একটি নূতন প্রবাসী & ჯeფ\, গতানুগতিক নৃত্যপদ্ধতির পুনরাবৃত্তিতে বিশেষ আনন্দ পাচ্ছিল না। এখন তার মনের সাহসও অনেক বেড়েছে, সে নির্ভয়ে নূতন নৃত্যরচনায় মনোযোগ দিল । লেগং নাচের "পেলেগোনগান” সঙ্গীতে আমরা পাই প্রাচীন পদ্ধতির ছায়। যথা, প্রাচীন পদ্ধতির মত ঢিমা লয়ের বাজনাও মাঝে মাঝে শোনা যায় এবং এর ভিতর দিয়ে মাধুর্যের প্রকাশই বেশী ফুটে ওঠে। ‘গঙ্গ কবিয়ার” সঙ্গীত অপেক্ষাকৃত জোরালো। এই শেষোক্ত নাচের গামেলান সঙ্গীতই মারিয়োর নূতন নাচের ভিত্তি । কবিয়ার নাচের ভঙ্গী পরিবর্তন এল বালির নৃত্যধারায় । এ নাচের প্রবর্তক মধ্য-বালির একটি গ্রাম্য যুবক, তার নাম মারিয়ো । সে-দেশে সব গ্রামেই নাচের ও গামেলান দল তৈরি করা গ্রামের সমাজের একটি বিশেষ কৰ্ত্তব্য ; এ বালকের গ্রামে সেই রকম একটি নাচের ও বাজনার দল ছিল। প্রতিদিন সন্ধ্যায়ু যখন গামেলান সঙ্গীত ও নাচের অভ্যাস চলত, এই বালকটিও সেখানে যোগ দিত। প্রত্যেক গ্রামেই নাচবাজনা শিক্ষার সুযোগ প্রত্যেকেই পায়, মারিয়ো সে সুযোগ গ্রহণ করেছিল, এবং গ্রামের নাচগানের নেতার পরিচালনায় নৃত্যে ও বাজনায় সে বেশ পারদর্শী হয়ে উঠল। এই বালক যখন যৌবনে পদার্পণ করল তখন আর এ-দেশের সব গামেলান সঙ্গীতের রাগিণী বা সুর একটি মাত্র। এই একটি স্বরকেই কোন দল কত প্রকারে বাজাতে পারে বা বৈচিত্র্য দান করতে পারে সেই চেষ্টাই সুরকার সৰ্ব্বদা ক’রে থাকে । আমাদের দেশের রাগরাগিণী আমরা যখন যন্ত্র-সঙ্গীতে বা কণ্ঠ-সঙ্গীতে শুনি, তখন দেখি, বাজিয়ে বা গাইয়ে দুই লাইনের গৎ বাজানোর পরে কত রকমের ছন্দ, কত রকমের তান, কত রকমের দুরূহ কাজ বাজনায় বা গানে প্রকাশ ক’রে থাকেন। যে যত বেশী এ-ভাবে বৈচিত্র্য আনতে পারে সেই হয় তত বড় গাইয়ে বা বাজিয়ে । বালির গামেলান সঙ্গীতের পদ্ধতি ঠিক এই ধরণের, যে বৈচিত্র্যের কথা বলছিলাম তা ঠিক এই পথ