পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অগ্ৰছায়ণ বিবিৰ প্রসঙ্গ—ব্রহ্মপ্রবাঙ্গী বঙ্গসাহিত্য সম্মেলল २११ কংগ্রেস তাহার বিরুদ্ধে কোন আন্দোলন করে নাই । বিরুদ্ধ আন্দোলন হইয়াছে কংগ্রেস জাতীয় দলের দ্বারা এবং হিন্দু মহাসভার ও মহাসভা-ঘেষা লোকদের দ্বারা । ম্যাকডন্যাল্ড সাহেবকে সালিসী করিতে অনুরোধ করা হইয়াছিল বলাও ঠিকৃ সত্য নহে । ব্যক্তিগত ভাবে গান্ধীজী ও অন্য কেহ কেহ তাহা করিয়া থাকিতে পারেন। কিন্তু সকল পক্ষের সম্মতি ও মিলিত অনুরোধ ভিন্ন সালিসী হয় না । সেরূপ অকুরোধ হয় নাই । বাটো আর-বিরোধী বড় বড় কনফারেন্স গত কয়েক বৎসরে কয়েক বার হইয়া গেল । খবরের কাগজে বার বার বলা হইয়াছে যে, বাটো আরটি ব্রিটিশ গবন্মেণ্টের নিধারণ মাত্র, সালিসী নিম্পত্তি নহে। এত দীর্ঘকালের মধ্যে কিছু না বলিয়া স্থ্যা ও আর্ড বলিয়া উল্লেখ— সালিসীর উল্লেখ—গান্ধীজীর পক্ষে অসুচিত হইয়াছে । তিনি লিথিয়াছেন, “আমি জানি পক্ষেরা নিজে কিরূপ শোচনীয় ভাবে ব্যর্থচেষ্ট হইয়াছিল ।” ভারতীয় তথাকথিত প্রতিনিধির মনোনীত হঠয়ছিল সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ রাজনীতিকদের দ্বারা, ভারতীয়দিগের দ্বারা নির্বাচিত হয় নাই । তাহাতে এবং এখন ওটাকে ধাতারা কোন মতেই ভারতবর্ষের স্বরাজ সম্বন্ধে একমত হইবে না, উক্ত রাজনীতিকরা এই র কম লোকই বাছিয়া বিলাতে আমদানী করিয়াছিল। তাতার স্বরাজ পাইবার আস্তরিক চেষ্টা কেন করিবে ? ব্রিটিশ মুরুব্বিদিগকে খুশি করিতেই তাহারা ব্যস্ত ছিল। সুতরাং তাহারা যে “ব্যর্থচেষ্ট” হইয়াছিল, তাহা স্বাঞ্জাতিক ভারতীয়দের লজ্জার বিষয় নহে । প্রবাসী বঙ্গসাহিত্য সম্মেলন প্রবাসী বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনেব মত এরূপ অত্যাবশ্যক একটি প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক অধিবেশন এক বৎসরের জন্যও বন্ধ থাকা উচিত নহে । ইহার অধিবেশন যদি কেবল সমগ্ৰ ভারতবর্ষের বাঙালীদের মিলামিশার সুযোগ দিত, তাহা হইলেও ইহা বাৰ্থ বা অনাবশ্বাক হইত না । কিন্তু ইহা দ্বারা প্রবাসী বাঙালীরা বাংলা ভাষা ও সাহিত্য এবং বঙ্গীয় সংস্কৃতির সহিত যোগ রক্ষা করেন। অবশ্ব এই যোগ রক্ষা ইহার দ্বারা সম্যক রূপে সাধিত হয় না, কিন্তু যতটুকু হয় তাহাও উপেক্ষণীয় নহে। বাংলা ভাষা ও সাহিত্য সম্বন্ধে প্রবাসী বাঙালীদের বিশেষ কৰ্ত্তব্য আছে। তাহাজের মধ্যে অনেকে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করিয়াছেন। আরও অনেকে করিতে পারিবেন । তাহারা বঙ্গের বাহির হইতে রস আহরণ করিয়া তাহ বাংলা সাহিত্যে নিবদ্ধ করিতে পারেন। একটি কারণে, বাংলা ভাষার বিশুদ্ধি রক্ষাকল্পে ৰ্তাহাদের সহযোগিতার বিশেষ প্রয়োজন হইয়াছে। বঙ্গের শিক্ষাবিভাগ দ্বারা বাংলা ভাষার একটা অপভাষা স্বষ্টির চেষ্টা হইতেছে। বাংলায় অনাবশ্যক আরবী ফারসী শক আমদানী করা হইতেছে। বিদ্যালয়পাঠ্য বহু পুস্তকে ইহা ঘটিতেছে। তাহার পরোক্ষ প্রভাবও অনিষ্টকর । প্রবাসী বাঙালীরা সাক্ষাৎ বা পরোক্ষ এই অনিষ্টকর প্রভাবের সম্পূর্ণরূপে বাহিরে। তাহাদের বঙ্গসাহিত্যসেবা এই কারণে মূল্যবান । বৰ্ত্তমান বংসরে, আমরা যত দূর জানি, এখনও কোথাও প্রবাসী বঙ্গসাহিত্য সম্মেলনের অধিবেশনের ব্যবস্থা হয় নাই । কয়েক মাস পূৰ্ব্বে যখন জামশেদপুরে অধিবেশনের প্রস্তাব হয়, তখন এই আপত্তির জন্তু তদনুসারে কাজ হয় নাই যে, ডিসেম্বর মাসে যখন ছোটনাগপুরভূক্ত রামগড়ে কংগ্রেসের অধিবেশন হইতেছে তখন সেই উপপ্রদেশভুক্ত আর একটি স্থানে ঐ মাসের একই সপ্তাহে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের অধিবেশন অকৰ্ত্তব্য । কিন্তু কংগ্রেসের অধিবেশন ডিসেম্বরে না হইয়া মার্চে হইবে । স্বতরাং জামশেদপুরে প্রবাসী বঙ্গসাহিত্য সম্মেলনের অধিবেশনের উক্ত বাধা এখন নাই। আশা করি, জামশেদপুর ও টাটানগরের নেতৃস্থানীয় বাঙালীর এখন এ-বিষয়ে উদ্যোগী হইতে পারিবেন । হাজারীবাগ, পুরুলিয়া, চাইবাসা, ধানবাদ, ঘাটশিলা প্রভৃতি স্থানের বাঙালীরাও এই কার্য্যে সাহায্য করিলে ভাল হয় । কংগ্রেসের অধিবেশনের তুলনায় প্রবাসী বঙ্গসাহিত্য সম্মেলনের অধিবেশনের ব্যয় অতি সামান্য । ব্ৰহ্মপ্রবাসী বঙ্গসাহিত্য সম্মেলন ব্ৰহ্মদেশ প্রবাসী বাঙালী ও অন্য ভারতীয়ের অনতিদূর