পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سیابد অতীতে ভীষণ বিপজ্জনক অবস্থায় পড়িয়াছিলেন। তাহা সত্ত্বেও যে তথাকার বাঙালীরা আগামী ডিসেম্বরে সাহিত্য সম্মেলন করিবেন, ইহা তাহাদের স্বীয় ভাষা ও সাহিত্যের প্রতি অন্ধুরাগের প্রকৃষ্ট প্রমাণ। আশা করি আগামী অধিবেশন সম্পূর্ণ সাফল্যমণ্ডিত হইবে। প্রবাসী বঙ্গসাহিত্য সম্মেলন সম্বন্ধে সাধারণভাবে আমরা যাহা বলিয়াছি, ব্ৰহ্মদেশের বঙ্গসাহিত্য সম্মেলন সম্বন্ধেও তাহা প্রযোজ্য । কংগ্রেসী মন্ত্রীসভাসমূহের পদত্যাগ ংগ্রেসী মন্ত্রীসভাসমূহ যে-কারণে পদত্যাগ করিয়াছেন, সে-কারণে র্তাহীদের পদত্যাগ আবশ্যক হইয়াছিল বা উচিত হইয়াছে কি না তাহ অবশুই বিচারসহ ও বিচার যোগ্য। সে-বিচারে আমরা এখন প্রবৃত্ত হইব না। যুদ্ধের অবসান হইবার পর ভারতবর্ষের স্বাধীনতা স্বীকৃত হুইবে এবং ইতিমধ্যে ভারতবর্ষের স্বাধীনত কাৰ্য্যতঃ যতটা স্বীকৃত হইতে পারে তাহা স্বীকৃত হইবে, ব্রিটিশ গবন্মেন্টের নিকট কংগ্রেস মোটামুটি এই দাবী করিয়াছিলেন। তাহা অগ্রাহ হওয়ায় কংগ্রেস-কর্তৃপক্ষের আদেশে কংগ্রেসী মন্ত্রীরা পদত্যাগ করিয়াছেন। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপক সভার রীতি অনুসারে, তাহা করিতে তাহারা বাধ্য ছিলেন না ; কারণ, ব্যবস্থাপক সভাসমূহে কংগ্রেসী সদস্যেরা সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিলেন, এবং নিবাচকদের মধ্যেও র্তাহাদের নিবর্ণচকেরা সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিলেন । সুতরাং তাহারা এখনই ইস্তফা না-দিয়া স্ব-স্ব পদে জাকিয়া বসিয়া থাকিতে পারিতেন। গবর্ণরেরা তাহাদিগকে যুদ্ধে কোন প্রকার সাক্ষাৎ বা পরোক্ষ সাহায্যসূচক কিছু করিতে বলিলে তাহারা সে অকুরোধ রক্ষা না করিতে পারিতেন। তখন গবর্ণরেরা তাহাদিগকে ইস্তফা দিতে বলিতেন, এবং ইস্তফা না-দিলে তাহাদিগকে পদচ্যুত করিতেন। তখন গবর্ণরের অন্য মন্ত্ৰীসভা গঠন করিতে অসমর্থ হইতেন ( যেমন এখন হুইয়াছেন ) এবং বর্তমান ব্যবস্থাপক সভাগুলি ভাঙিয়া দিয়া নূতন সভা গঠনের জন্য সাধারণ নিবর্ণচনের ব্যবস্থা করিতে হইত। খুব সম্ভব, তাহাতেও কংগ্রেসেরই জিত অন্ততঃ সাতটি প্রবাঙ্গী ' ১৩৪৬ প্রদেশে হইত। তখন কংগ্রেসৗদিগকেই আবার মন্ত্রী হইতে বলিতে হইত। এই সমস্ত ঘটিত, যদি ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত তথাকথিত প্রভিন্স্যাল অটনমী বা প্রাদেশিক আত্মকর্তৃত্ব প্রকৃত গণতান্ত্রিক আত্মকত্ত্ব ত্ব হইত। কিন্তু চীজ টা মেকি, খাটি নহে। সেই জন্য সামান্য ঘর্ষণেই তাহার আসল চেহারাটা বাহির হইয়া পড়িয়াছে । কংগ্রেসী মন্ত্রীদের পদত্যাগের র্যাহার বিরুদ্ধ সমালোচনা করেন, তাহাদিগকেও স্বীকার করিতে হইবে যে, তাহার দ্বারা জগতের কাছে ইহা প্রমাণিত হইল যে, ব্রিটেন ভারতবর্ষের প্রদেশগুলিকেও বস্তুতঃ স্বায়ত্তশাসন দেয় নাই। স্বায়ত্তশাসনের মানে, রাষ্ট্রের কার্য্য পরিচালনে দেশের লোকদের ক্ষমতা থাকা । তাহাদের সেরূপ ক্ষমতা থাকিলে, এক দল মন্ত্রীর পদত্যাগের পর অন্য মন্ত্রীদল গঠনের চেষ্ট হয়, সে চেষ্টা বিফল হইলে ব্যবস্থাপক সভা ভাঙিয়া দিয়া নির্বাচকদিগকে নূতন সদস্য নির্বাচনস্বারা নূতন ব্যবস্থাপক সভা গড়িতে বলা হয় যাহার মধ্য হইতে আবার মন্ত্রী পাওয়া যাইতে পারে । কিন্তু এখন যাহা ঘটিল তাহার মানে এই যে, প্রদেশগুলির লোকেরা এক বার মাত্র ব্যবস্থাপক সভার সভ্য নির্বাচনের অধিকার পাইয়াছিল ; এখন সে-অধিকার লুপ্ত। রাষ্ট্রীয় কাৰ্য্য নির্বাহে তাহারা এখন কেহই নহে, গবর্ণরই সর্বেসর্বা। ইহা স্বৈর একনায়কত্ব, কোন প্রকারের স্বায়ত্তশাসন নহে। কংগ্রেসী মন্ত্রীরা এখন ইস্তফা না দিয়া স্বপদে অধিষ্ঠিত থাকিয়া যদি গবর্ণরদের যুদ্ধসংক্রাস্ত কোন আদেশ বা অনুরোধ না মানিয়া ইস্তফা দিতে বাধ্য হইতেন বা পদচ্যুত হইতেন, তাহা হইলে কংগ্রেস যে সাধারণভাবে যুদ্ধবিরোধী বা বর্তমান যুদ্ধের বিরোধী কিংবা এই যুদ্ধে ব্রিটিশসরকারের সহযোগী হইতে অসম্মত, এইরূপ কোন একটা ধারণ স্থপ্রকট হইত। হয়ত কংগ্রেসের বর্তমান নেতারা ব্রিটিশ সরকারের সহিত র্তাহাদের এট বাস্তবিক বা সম্ভাব্য বিরোধ স্বম্পষ্ট হওয়া বাঞ্ছনীয় মনে করেন নাই। কারণ, গান্ধীজীর মতে, সংগ্রামে (অবশ্ব অহিংস সংগ্রামে ) প্রবৃত্ত হইবার মত অবস্থায় কংগ্রেস এখন নাই । কংগ্রেসী মন্ত্রীরা মোটামুটি দুই বৎসর তাহাদের পদে