পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৌষ , পালিটির যা অবস্থা তাতে বেশী মাইনে দেবে কি ক’রে । হাসপাতালে ওষুধ পৰ্য্যস্ত নেই! —তা তো জানি। আমার মতে হাসপাতাল তুলে দেওয়া উচিত । ওরকম একটা প্রহসন রাখার চেয়ে না রাখা ভাল ! বিমল চুপ করিয়া রহিল। অমর বলিল—আমরা ক্লাবে এবার টিকিট করে বিসর্জন প্লে করছি। টাকা যা হবে সব হাসপাতালে দেব আমরা ! —ভাল ! মথুরামোহন মৃদু মৃদু হাসিতে লাগিলেন । তাহার পর বিমলের দিকে চাহিয়া সহসা বলিলেন—একটা কথা কিন্তু জেনে রেখো, আমি তোমার শত্রুপক্ষ । তোমার কোন ক্রটি পেলে ছেড়ে কথা কইব না আমি ! 锣 বিমল বলিল—ক্রটি হ’তে দেব কেন ! —মাত্র পচাত্তর টাকা মাইনে পাবে, ক্রটি হ’তে দেব ন। বলছ কোন সাহসে ! মথুরাবাবু কান হইতে রূপার খড়কেটি নামাইয়া লইয় হাসিমুখে দাত খুটিতে লাগিলেন। তাহার পর বলিলেন –আচ্ছা, সে দেথা যাবে ! অমর হাসিয়া বলিল—চল ক্লাবে যাওয়া যাক, দেরি হয়ে যাচ্ছে । বিমল উঠিয়া মথুরাবাবুকে প্রণাম করিয়া পুনরায় পদধূলি লইতে গেলে মথুরাবাবু বলিলেন—এই তো এখুনি এক বার প্রণাম করলে, আবার কেন! ও-সব পায়ের ধুলেীটুলো নিয়ে আমাকে ভোলাতে পারবে না, বি অন ইওর গার্ড— একটু হাসিয়া বিমল ও অমর বাহির হইয়া গেল । রাস্তায় চলিতে চলিতে বিমল বলিল—তোর বাবার সম্বন্ধে যে-রকম ভয়াবহ সব গুজব শুনেছিলাম, ভয় হয়ে গিয়েছিল আমার । এত ভাল লোক অথচ সবাই এত ভয় করে কেন বল দিকি ! —ভাল লোক বলেই । —মানে ? —মানে মিউনিসিপালিটিতে উনিই একমাত্র লোক মিীেক @eSe যিনি ঠিক নিয়ম মেনে চলতে চান আর ঘুস নেন না ! —বাকী সবাই ? —বাকী সবাই মিউনিসিপালিটিকে নানাভাবে দোহন করছে ! --বদিবাবুও ? --নিশ্চয়। ওপারে ওঁর অতগুলো বাড়ী, মিউনিসিপালিটিকে হাতে না রাখলে ওঁর চলবে কি ক’রে ? নিজের ইচ্ছেমত প্ল্যান, নিজের ইচ্ছেমত কল, যখন যা খুশী করিয়ে নিচ্ছেন । নিজে তো যা খুশী করিয়ে নিচ্ছেন, নিজের অতুগৃহীত লোকেদের করিয়েও দিচ্ছেন! খুব তুখোড় লোক ! বদিবাবুর নিন্দ শুনিতে বিমলের ভাল লাগিতেছিল না। সে চুপ করিয়া রহিল। বিমলরা চলিয়া গেলে মথুরাবাবু অন্দরে গেলেন। গিয়াই শেফালির সঙ্গে দেখা হইয়া গেল । শেফালি মথুরা বাবুর কনিষ্ঠ কন্যা, বড় আদরিণী। ষোল-সতের বছর বয়স | —বাবা, বারান্দায় বসে কার সঙ্গে কথা বলছিলে, বিমলবাবু, নয় ? —তুই কি ক’রে দেখলি ! —বা, দোতলার জানলা থেকে দেখা যায় না বুঝি বারান্দাটা ! ঘরের ভিতর হইতে বাহির হইয়া মথুরাবাবুর স্ত্রী বলিলেন—বারান্দাটা দেখা যায় বলেই উকি মেরে দেখতে হবে, ধন্য বাবা আজকালকার মেয়ে তোমরা ! ভদ্রলোক যদি দেখতে পেতেন ! —দেখতে পেলেই হ’ল ! আমি তো কেবল খড়থড়িটা একটুখানি ফাক ক’রে দেখেছি । —কি দরকার তোমার দেখবার মা । —আমার খুড়শ্বশুরের অস্থখ তো উনিই ভাল করেছেন, সেই জন্ধে দেখছিলাম কেমন দেখতে লোকটি ! শেফালি হাসিতে লাগিল, মথুরাবাবুও তাহার পানে সম্মিত দৃষ্ট মেলিয়া চাহিয়া রহিলেন, কিছু বলিলেন না।