পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৌষ , অ্যাপ্রেটিসের দিম "ల$3 বারটার ভো বাজিল, সঙ্গে সঙ্গে স্বরু হইল ক্লকিংয়ের পালা। লম্বা কিউ তখন ঘড়ির পিছনে । তাহার পর এলোমেলো ছুটাছুটি, মেয়ে-পুরুষের স্রোত ক্যান্টনের দিকে। মেয়েরাই বেশী। অাপিসের মেয়ে, কলের মেয়ে, এক হইয়াছে তখন। উন্ট দিক হইতে সে স্রোত ঠেলিয়া কাহাকেও আসিতে হইলে অনেক ধাক্কা থাইতে হইবে তাহাদের । অবশ্য সে ধাক্কা ধাক্কা বলিয়া মনে কেহই করিবে না । মোটরে, সাইকেলে অনেকে এ-সময় বাড়ী চলিয়া গেল। ছেলেমেয়েরা কেহ কেহ গেটের বাহিরের দোকান হইতে ‘ফিস অ্যাণ্ড চিপস কিনিয়া আনিতেছে, দু-একটি রোগা রোগ লোকের হাতে তখন দুধের বোতল । ওয়ার্কম্যানরা অনেকেই বাড়ী থাবার আনিয়াছে । এ-কোণে ও-কোণে প্রত্যেকেরই নির্দিষ্ট একটি জায়গা আছে, বসিবার জন্য কাহারও আছে একটি কেরোসিন কাঠের বাক্স, কাহারও বা একখানি তক্তা । সেইগুলি পাতিয়া তাহার ইতিমধ্যে বসিয়া পড়িয়াছে। কোলের উপর ব্রাউন পেপারে তখন তাহীদের মোট মোট স্যাণ্ডুইচ, হাতে খবরের কাগজ এবং পাশে ক্যান-ভৰ্ত্তি চা ৷ কাহারও কাহারও চা শুধু চ'-ই, তাহাতে না আছে দুধ, না আছে চিনি । নৃপেন ইতিমধ্যে এডুকেশন আপিস হইতে হাত ধুইয়। আসিয়াছে । তাহার| স্টাফের অন্তর্গত, ওয়ার্কম্যান নয়, সেজন্য তাইশদের আছে গরম জলের ব্যবস্থা, আছে তোয়ালে, আছে সাবান । কারখানায় থাইতে হক্টলে তাহারা যাইবে স্টীকৃ-ক্যানটিনে। অ্যাপ্রেনটিদের এ-কারখানায় একটি মোট লাইন দিয়া দুই ভাগ করা আছে। এক দিকে ট্রেড অ্যাপ্রেন্থটিসূরা —যাহার কারখানায় ঢুকিবে চৌদ্ধ বংসর বয়সে এবং কাজ শিখিবে একুশ বংসর বয়স পর্যান্ত । তাহারাই হইল কারখানার ভবিষ্যৎ ওয়ার্কম্যান বা মিস্ত্রীমহল । অন্য দিকে সি আগু এস সেক্শন। তাহাতে ইউনিভার্সিটির গ্র্যাডুয়েটর, বাহির হইতে আসিয়াছে যে-সব স্পেতাল ট্রেনি তাহার, স্কুল অ্যাপ্রেনটি ভেকেশন অ্যাপ্রেনটিস এই সব । ইহাদের মধ্যেই আছে কারখানার ভবিষ্যৎ 零ジび吏 স্টাফের দল। ইন্‌ পেক্টর, ড্রাফট্স্ম্যান এঞ্জিনীয়ারের দল, হয়ত বা এক আধ জন ডাইরেক্টারই । ট্রেড অ্যাপ্রেন্থটিসদের মতে এইটি হইল স্ববদের সেক্শন । নৃপেনের তখনও খাওয়া-দাওয়া সম্বন্ধে বাছাবাছি সম্পূর্ণ বজায় আছে। ক্যানটিনের খাওয়া তাঙ্গর পছন্দ হয় না। সে বাড়ী হইতে লাঞ্চ লইয়া আসে। তাহার কলের জায়গার কাছে নিরিবিলিতে একটি বসিবার জায়গা ঠিক করা আছে—সেখানে এক লোহার বাক্সে বসিয়া সে তাহার লাঞ্চ শেষ করে। ছ-খানা ডিমের স্তাণ্ডুইচ, একূলস্ কেক দু-খানা, আপেল একটি। পেটে জলে তখন তার এমনই আগুন যে সব জিনিযই মুন্দর লাগে, মনে হয় ঐ শুকনো স্যাণ্ডুইচ আরও যদি থাকিত তো ভাল হইত। খাবার-মোড়া কাগজখানি ওয়েস্টপেপার বাস্কেটে ফেলিয়া সে ঘুরিতে বাহির হয়। প্রকাও বড় তারের একটি ঝুড়ি, খাবার-মোড় কাগজে কাগজে তত ক্ষণে প্রায় ভৰ্ত্তি হইয়া আসিয়াছে। সাড়ে বারটা বাজে তখন। ওখানে অনেকেরই তখন খাওয়া শেষ হইয়াছে। কেহ কেহ তাস খেলিতে বসিয়াছে, কেহ বা কাগজ পড়িতেছে, দু-চার জন চেষ্টায়ু আছে ঘুমাইবার। অনেকে এখানে ওখানে আডড দিতেও বাহির হইয়াছে । নৃপেন প্রথমে একটি বেঞ্চের সম্মুখে দাড়াইয়া কয়েকখানি নক্স-পত্ৰ লইয়া একটু নাড়াচাড়া করিল, নূতন ধরণের একটি সুইচ দেখিয়া তাহার ভিতরে জিনিষপত্রগুলির সঙ্গে একটু পরিচয় করিবার চেষ্টা করিল, তাহার পর বাহির হইল খুবিতে । বহু জায়গায় দেখিল দেওয়ালে বোর্ড টাঙাইয়া ছেলেয় বুড়োয় ডার্ট খেলিতেছে, ছোট ছোট কয়টি ছেলে একটি বড় প্লেনিং মেশিনের উপরে ক্যারম-বোর্ড পাতিয়াছে, তাসের দল তো এখানে ওখানে আছেই । ক্যানটিন হইতে দলে দলে তখন মেয়েরা ফিরিতে আরম্ভ করিয়াছে। সব চেয়ে বেশী মেয়ে কাজ করে কয়েল ডিপার্টমেণ্টে, মিটারে এবং অটোমেটিক স্কু কাটিং, পাঞ্চিং এবং স্নটিং মেশিনে । অনেক জায়গায় মেয়েরা ইতিমধ্যেই ফিরিয়াছে। গোল হইয়া বসিয়া গল্প করিতেছে । এক জায়গায় নৃপেন