পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কীৰ্ত্তিক

কালিন্দী sa. করিয়া বলিল-ভাল আছেন বউঠাকুরুণ ? কৰ্ত্তা ভাল আছেন ? অবগুণ্ঠন অল্প বাড়াইয়া দিয়া স্থনীতি বলিলেন—উনি আছেন সেই রকমষ্ট । মাথার গোলমাল দিন দিন যেন বাড়ছে ঠাকুরপো! মজুমদার একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া বলিল, আহ+ হা ! কণ্ঠস্বরে ভঙ্গিতে যতখানি সমবেদনার আভাস প্রকাশ পাইতে পারে ততখানিই প্রকাশ পাইল । তার পর মজুমদার আবাপু বলিল, একবার বৈদা-পারুলিয়ার কবিরাজ:দর দেখালে হ’ত না ? চৰ্ম্মরোগে, বিশেয তে৷ কুষ্ঠ ইত্যাদিতে ওরা ধন্বস্তরি! স্বনীতির মুখ মুহূত্তে বিবৰ্ণ হইয় গেল । সমস্ত শরীর যেন ঝিম্ ঝিম্ করিয়া উঠিল, মজুমদারের কথায় তিনি তিনি কোনরূপে আত্মসম্বরণ করিয়া বলিলেন~~না মা ঠাকুরপো, সে তো সত্যি নয় । সে কেবল ওর মাথার ভুল ! - উত্তরে মজুমদার কিছু বলিবার পূর্বেই মানদা ঠক্‌ করিয়া একটা প্রণাম করিয়া বলিল, তবু ভাল, লায়েব বাবুকে দেখতে পেলাম। আমি বলি—মথুরাতে রাজা হয়ে নন্দের বাদার কথা বুঝি ভুলেই গেলেন । তা নয় বাপু —সু:িন। মনিবের ওপর টান খুব ! মজুমদারের মুখ চোখ রাঙা হইয়া উঠিল, সে বার দুই অস্বাভাবিক গম্ভীর ভাবে গলা ঝাড়িয়া লইল, কিন্তু মালদা বলিয়াই গেল—লায়েববাবু আমাদের ভোলেন নি বাপু ! কভাবাবুর খবর-টবর সবই রাখেন ! মুনীতি লজ্জায় যেন মরিয়া গেলেন, মুখরা মানদা এ বলিতেছে কি ? কি স্তু তাহাকেই বা কেমন করিয়া তিনি নিরস্ত করবেন ? মুথের দিকেও একবার চাহে না যে, ইঙ্গিত করিয়া বারণ করেন ! মজুমদার নিজেই ব্যাপারটাকে ঘুaাইয়া লইল, আরও এক বার গলা পরিষ্কার করিয়া লইয়া বলিল—বিশেষ একটা জরুরি কথা যে বলতে এসেছিলাম বউঠাকরুণ ! স্বনীতি স্বস্তির নিশ্বাস ফেলিয়া হাসিমুখেই বলিলেন— বলুন। -- বলছিলাম ঐ চরটার কথা । মৰ্ম্মাস্তিক আঘাত আঠু ভব করিলেন । ঐ চরের উপর এক-শ বিধে জায়গা মইী ঐবাস ঘোষকে বন্দোবস্ত করেছে । আমিই চেক কেটে দিয়েছি মহীর হুকুমমত । টাকা অবিহি মহীক্ট নিয়েছিল। ছ-শ টাকা । পাচ-শ টাকা সেলামী—এক-শ টাকা খাজনা । সুনীতি মৃদুস্বরে কুষ্ঠিত ভাবে বলিলেন—আমি তো সে-কথা জানি নে ঠাকুরপো ! একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া মজুমদার বলিলেন— জানবেন কি ক’রে বলুন ; এ কি আপনার জানবার কথা ! তা ছাড়া সেইদিনই বেলা তিনটের সময় ননী পাল খুন হ’য়ে গেল । বলবার আর অবসর হ’ল কই বলুন ! এখন শ্রীবাসের সেই জমি থেকে পঞ্চাশ বিঘে জমি রংলাল নবীন এরা দখল করতে চাচ্ছে । ওদের অবিশি জবরদস্তি । সেলামীর টাকা পৰ্য্যস্ত দেয় নি! মুনীতি বলিলেন—ন-ন ঠাকুরপো, ওদের আমি জমি দেব বলেছিলাম । চরে তো আরও জমি রয়েছে—তার থেকে ওরা নিতে পারে। অকস্মাং মানদ| আক্ষেপ করিয়া বলিয়া চলিল, আ: হায় হায় গো ! ছ—ছ-শ টাকা চিলে ষ্ঠে দিয়ে - নিয়ে গেল গো । মনে পড়েছে লায়েববাবু, দাদাবাবুর হাতটা পৰ্য্যস্ত ছড়ে গিয়েছিল নখে । সেই টাকাই তো ? মুহূত্তের জন্য মজুমদার স্তব্ধ হইয়া গেল, কিন্তু পরমুহূৰ্ত্তেই হাসিয়া বলিল— টাকাটা আমাকেই দিয়েছিলেন মহী ; সেটা মামলাতেই খরচ হয়েছে । বুঝলেন বউঠাকরুণ, জমাখরচের থাতীয়—খসড়া রোকড় খতিয়ান তিন জায়গাতেই তার জমা আছে । দেখলেই দেখতে পাবেন । তা ছাড়া চেক-রসিদণ্ড তাকে দেওয়া হয়েছে । আমি নিজে হাতে লিখে দিয়েছি । শ্ৰীবাস এসেছে—সেই চেক নিয়ে বাইরে দাড়িয়ে রয়েছে। এ-বছরের খাজনাও সে দিতে চায় ! সঙ্গে সঙ্গে বাহির হইতে শ্রীবাসের সাড়া পাওয়া গেল— খাজনার টাকা আমি নিয়ে এসেছি, মজুমদার মশায় ! এক-শ টাকা আমি এক্ষুনি দিয়ে যাব । বলিয়া সে ভিতরদরজা পার হইয়া অন্দরে আসিয়া দেখা দিয়া দাড়াইল । —বেশ তো ! 한