পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬৭০ প্রবাঙ্গী Yê88 একটি স্বাধীন বা সংশোধক আইন দ্বারা নির্দিষ্ট একটি সময়ে ( সালে ও দিনে) তাহা দিবার প্রতিশ্রুতি দিতে হইবে। “এখন যুদ্ধের সময়ে বড় আমরা ব্যস্ত” বলিয়া ওজর করিলে চলিবে না । কারণ, যুদ্ধের সময়েই পালেমেণ্ট ব্রিটেনের নিমিত্ত জরুরি আইন পাস করিতেছেন এবং ভারতবর্ষ সম্বন্ধেও প্রাদেশিক গবন্মেন্টগুলির ক্ষমতাসংকোচক আইন করিতেছেন। পালেমেণ্টে আইন পাস করা আবশ্বকে এই জন্য যে পালেমেণ্টই ব্রিটিশ রাষ্ট্রের চূড়ান্ত ক্ষমতাধারী এবং পালেমেণ্ট ব্রিটেনের রাজারও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করিতে বাধ্য নহেন—অন্য কোন ব্যক্তির ত নহেনই। গান্ধীয় ও প্রাগ গান্ধীয় রাজনীতি গত ১লা মাঘের 'রাষ্ট্রবাণী’ পত্রিকায় “রাজনীতি ও ধম” শীর্ষক প্রবন্ধে নিম্নোদ্ভূত বাক্যগুলি দেখিলাম। “গান্ধীজীর পূর্বে রাজনীতি ছিল রাজনীতিই—অর্থাৎ কুটনীতি, ধূতের নীতি, মিথ্যাশ্রয়ীর নীতি। রাজনীতিতে লক্ষ্য লাভ করাই একমাত্র বিচার্য ছিল । সৎ অসৎ কি পথে সে লক্ষ্যে পন্থ"fছতে হুইবে তাহ লইয়। রাজনীতিকের মাথা ঘামাইবার দরকার ছিল না।" গান্ধীজী রাজনীতিক্ষেত্রে প্রবেশ করিবার পূর্বে পৃথিবীতে আর যত প্রসিদ্ধ ব্যক্তি রাজনীতিক হইয়াছেন, র্তাহাদের সকলের বিষয় অবগত নহি, স্বতরাং তাহারা প্রত্যেকেই তাহাঙ্গের রাজনৈতিক কথায় ও কাজে ধৃত ও মিথ্যাশ্রয়ী ছিলেন কি না বলিতে পারি না। ভারতবর্ষের আধুনিক যুগের কোন কোন রাজনীতিকের মতের, উক্তির, ও আচরণের বিষয়ে কিঞ্চিৎ জ্ঞান আছে। কিন্তু আমরা যদি তাছাদের কাহাকেও কাহাকেও অ-ধূত ও সত্যাশ্রয়ী বলি, তাহা হইলে তাহা ‘রাষ্ট্রবাণী’র লেখক বিশ্বাস নাকরিতে পারেন । কিন্তু আমরা এ বিষয়ে তাহাকে গান্ধীজীরই সাক্ষ্য গ্রহণ করিতে বলিতে পারি। আমাদের ধারণা, দাদাভাই নওরোজী মহাশয়ের এবং গোপালকৃষ্ণ গোখলে মহাশয়ের প্রতি মহাত্মা গান্ধী বিশেষ শ্রদ্ধান্বিত এবং ইহারা উভয়েই গান্ধীজী রাজনীতি ক্ষেত্রে প্রবেশ করিবার পূর্বে রাজনীতিক হইয়াছিলেন। কয়েক মাস পূর্বে দাদাভাই নওরোজীর যে বৃহৎ জীবনচরিত বিলাতে প্রকাশিত হইয়াছে, গান্ধীজী তাহার ভূমিকা লিখিয়াছেন। এই ভূমিকা পড়িলেই ভারতবর্ষের দাদা ও ভাইয়ের প্রতি গান্ধীজীর মনের ভক্তিভাব বুঝা যাইবে । গোখলে মহাশয়ের সম্বন্ধে গান্ধীজী কি মনে করেন, ‘রাষ্ট্রবাণী’র লেখক তাহ খুজিয়া বাহির করিতে পারিবেন। ব্যক্তিবিশেষ যত বড়ই হউন, তাহার প্রতি ভক্তি অন্য সকলের প্রতি অশ্রদ্ধা ও অবিচারের কারণ ন্যায়ত: হইতে পারে না । ভারতবর্ষের “চতুবিধ সৰ্ব্বনাশ” স্বাধীনতা-দিবসে যে প্রতিজ্ঞা কংগ্রেসীদিগের দ্বারা পঠিত হয়, তাহাতে বলা হইয়াছে যে, ভারতে ব্রিটিশ গবন্মেণ্ট ভারতবর্ষের আর্থিক, রাষ্ট্রনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং আধ্যাত্মিক সর্বনাশ করিয়াছে । এফ ঈ জেমস্ নামক জনৈক ইংরেজ মান্দ্রাজে একটি বক্তৃতায় উক্ত মস্তব্যের প্রতিবাদ করায় এবং তাহা মহাত্মা গান্ধীর চোখে পড়ায় তিনি ৩রা ফেব্রুয়ারীর "হরিজন’ কাগজে তাহার জবাব দিয়াছেন। জবাবটি ২৮শে জানুয়ারী লিখিত। মি: জেমসের প্রতিবাদের ও গান্ধীজীর তাহার উত্তরের আলোচনা আমরা করিব না। উত্তরটির কেবল একটি কথা সম্বন্ধে আমরা কিছু বলিব । গান্ধীজী লিখিয়াছেন : “It should be remembered that this part was in the original and has stood without challenge all these ten years.” তাৎপৰ্য্য। “মনে রাখা উচিত যে, এই (চতুবিধ-সর্বনাশবিষয়ক) অংশটি মূল প্রতিজ্ঞায় ছিল এবং এই দশ বৎসর ধরিয়া ইহা বিনা প্রতিবাদ ও সমালোচনায় বিদ্যমান আছে।” গান্ধীজীর এই কথাটি ঠিক নয় । তিনি ত সব কাগজ দেখেন না, তাহার সেক্রেটরীও সব কাগজ দেখিয়া তাহাকে সব কাগজের দ্রষ্টব্য সব অংশ কাটিয়া দেখিবার নিমিত্ত র্তাহাকে দেন না। অতএব এরূপ কথা না বলিলেই ভাল হইত। আমরাও অন্য সব কাগজ দেখিতে পাই না ও পারি না, নিজের সম্পাদিত কাগজেও অন্তের লেখা দূরে থাক নিজের অনেক লেখা সম্বন্ধেও বিস্মৃতি ঘটে। অনেক আগে স্বাধীনতা-দিবসের প্রতিজ্ঞ সম্বন্ধে কিছু লিখিয়া