পাতা:প্রবাসী (ঊনচত্বারিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

♥ፃ© প্রবাঙ্গী ՖՎՑ8Ն হইলে হিন্দুদের সম্বন্ধে ন্যাধ্য ব্যবস্থা করিতে হইবে। কয়েক বৎসর পূৰ্ব্বে পণ্ডিত মদনমোহনমালীয়ের সভাপতিত্বে শেঠ ঘনশ্যামদাস বিড়লার কলিকাতার বাড়ীতে যে সভা হয়, তাহাতে বঙ্গের হিন্দুদের পক্ষ হইতে বলা হয় যে, যদিও বাঙ্গালী হিন্দুরা বাংলা প্রদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় তথাপি তাহারা কৃত্রিম “ওজনবৃদ্ধি" ("weightage") চায় না, শিক্ষা ও সার্বজনিক কমোৎসাহে শ্রেষ্ঠতার জন্য এবং অধিকতর ট্যাক্স প্রদাতা বলিয়াও ব্যবস্থাপক সভায় কিছু বেশী আসন চায় না, কেবল তাঁহাদের লোকসংখ্যার অকুপাতে যতগুলি আসন প্রাপ্য তাহাই চায় ; কিন্তু তখন মুসলমান নেতারা এই অতি ন্যায্য প্রস্তাবেও রাজী হন নাই । হিন্দুর ন্যায্য স্বাৰ্থ বলি দিয়া কোন সন্তোষজনক সমাধান হইতে পারে বলিয়া আমরা মনে করি না। ব্যক্তিগত ভাবে আমরা সাম্প্রদায়িক বাটোআরার সম্পূর্ণ উচ্ছেদ চাই, সরকারী চাকরীতে জাতিধৰ্ম্মনির্বিশেষে যোগ্যতমের নিয়োগ চাই, শিক্ষাক্ষেত্রে জাতিধৰ্ম্মনির্বিশেষে ছাত্রবৃত্তি বণ্টন চাই এবং শিক্ষালয়ে সাহায্যদানও অসাম্প্রদায়িক ভাবে হওয়ার দাবী করি । ঋণসালিসী সম্বন্ধীয় আইন, কলিকাতা মিউনিসিপাল আইন, প্রভৃতি দ্বারা হিন্দুদের ক্ষতি করা হইয়াছে। সেগুলি রদ হওয়া চাই । আড়াই বৎসর আগে কংগ্রেস-কর্তৃপক্ষ যদি বঙ্গে কোআলিশুনি মন্ত্রিসভা গঠনে মত দিতেন, তাহা হইলে বঙ্গের দুঃখ-দুর্দশা যত হইয়াছে, কোন কোন দিকে তাহা অপেক্ষণ কম হইত। কিন্তু কংগ্রেস অন্যত্র সেরূপ মন্ত্রিসভা গঠনে মত দিলেও বঙ্গে মত দেন নাই । অত্যাচরিতগণকে গৃহত্যাগ উপদেশ দান সিন্ধুদেশে স্বৰূরে ও তৎসন্নিহিত গ্রামসমূহে দুবৃত্ত মুসলমানের বহু হিন্দুকে হত্যা করিয়াছে, তাহাদের ধনসম্পত্তি লুঠ করিয়াছে এবং স্ত্রীলোকদের চরম অপমান করিয়াছে, তাহা হইতে তাহাদিগকে রক্ষণ করিবার নিমিত্ত সরকারী যথোচিত ব্যবস্থা ছিল না। গান্ধীজী এইরূপ উপদেশ দিয়াছেন যে, হিন্দুরা যদি جيحصص– সেখানে অহিংস উপায়ে বা সশস্ত্র উপায়ে আত্মরক্ষা করিতে না পারে, তাহা হইলে তাহীদের নিজ নিজ ভিটামাটি চাষের জমী ইত্যাদি পরিত্যাগ করিয়া অন্যত্র চলিয়া যাওয়া উচিত । সিপাহী দ্বারা তাহাদিগকে রক্ষার ব্যবস্থা তিনি চান না, কেননা তাহা হইবে faße stafa: Tofuj sizo (“British military aid" )। কিন্তু এই সিপাহীদের বেতনাদি, গোর। সৈন্যদের বেতনাদিও, ভারতীয়েরাই দেয়। সিন্ধুদেশে “প্রাদেশিক আত্মকর্তৃত্ব” প্রবর্তিত হওয়ায় সেখানে নাকি জাতীয় গবন্মেণ্ট স্থাপিত হইয়াছে, এই জন্য উক্ত ব্রিটিশ সামরিক সাহায্য লওয়া চলিবে না । এই অপূৰ্ব্ব যুক্তির সমর্থন করিতে ও গুণগ্রহণ করিতে আমরা অসমর্থ। শত শত লোক অন্যত্র জমৗজায়গা, ঘরবাড়ী, নূতন করিয়া সংসার পত্তনের টাকা পাইবে মহাত্মাজী ধরিয়া লইয়াছেন। কিন্তু ব্রিটিশ গিয়ানা, ফিজি, দক্ষিণ-আফ্রিকা প্রভৃতি হইতে যে-সব শ্রমিক দেশে ফিরিয়া আসে, তাহাদিগের অনেককেই মাটিয়াবুরুজে পচিতে হয়, তাহারা কোথাও ঠাই পায় না। মহাত্মাঞ্জীর বোধ হয় একথা মনে ছিল না । কোন স্থানে অত্যাচরিত ব্যক্তির, বা যাহাঁদের উপর অত্যাচার হইবার সম্ভাবনা আছে তাহারা, যদি অহিংসা নীতির বলে বা বাহুবলে ও অস্ত্রবলে আত্মরক্ষা করিতে না পারে, এবং গবন্মেণ্টও যদি তাঁহাদের রক্ষার ব্যবস্থা না করে, তাহা হইলে তাহাদের অন্যত্র উঠিয়া যাওয়া উচিত এবং এরূপ উঠিয়া যাওয়ায় কাপুরুষতা নাই, ইহা আমরা স্বীকার করি । কিন্তু খুব কমসংখ্যক লোকেরও, এক জন লোকেরও রক্ষার নিমিত্ত সরকারী ব্যবস্থা কেন হইবে না, সরকারী ব্যবস্থার দাবী কেন হুইবে না, বুঝিতে পারি না। তথাকথিত জাতীয় গবন্মেণ প্রদেশগুলিতে হইয়াছে বলিয়া প্রজাদেরই প্রদত্ত ট্যাক্স হইতে প্রতিপালিত কেন্দ্রীয় গবন্মেন্টের সিপাহীদের সাহায্য পাইবার প্রজাদের অধিকার লোপ পায় নাই । ইহাও মনে রাখা আবশ্বক যে, অত্যাচরিতেরা নিজ নিজ বাসভূমি ছাড়িয়া পলাইতে বাধ্য হইলে বদমায়েসরা জাম্বারা পাইয়া আরও দুবৃত্ত হইয়া উঠিবে।