পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২১৬ আজ নিতান্ত অপরিচিত্তের মত অনুমতির অপেক্ষায় ছয়ারে দাড়িয়েছিলেন কেন ? সম্রাট কি তবে নাই ?” চন্দ্রগুপ্ত ধ্রুবদেবীর মুখের দিকে না চাহিয়া বলিলেন, “এখনও আছেন, তবে সন্ধার সঙ্গে সঙ্গে বোধ হয় পিতার জীবন-প্রদীপ নিবে যাবে । বিদায় নিভে এসেছি, দেবি ।” ধ্রুবা । আবার ও-কথ। কেন ? আমি কি অপরাধ করেছি ? কি হয়েছে বলুন ? আমি যে আর সংশয় চেপে রাখতে পারছি না। আর্য্যপুত্র আপনাকে বিদায়— চন্দ্র । দেবি ! কাল প্রভাতে যার ছিন্নমুণ্ড পাটলিপুত্রের শ্মশানে লুষ্ঠিত হতে পারে, সে কোন সাহসে পরমভট্টারকপদীয় মহানায়ক, মহাসামগু, রুদ্রধরের জামাত। হতে চাইবে ? সম্রাট সমূদ্র গুপ্তের শেষ আদেশ, কুমার রামগুপ্ত যুবরাদ্ধ, অর্থাৎ কাল সকালে সম্রাট আর আমি পথের ভিখারী, হয়ত মুক্তন সুপ্রাটের শরীররক্ষী সেনা, বগু পশুর মত আমাকে পাটলিপুত্রের রাজপথে হুতা করবে। যদি তা না করে – ধ্রুব । যেখানে তুমি সেখানে আমি । যুবরাজ–না না, কুমার, আমি যে তোমার বাগদত্ত পত্নী । চক্স । স্বপ্ন ! ভুলে যাও, দেবি ! মনে কর চন্দ্ৰগুপ্ত মৃত । অঙ্গীতের কথ। মন থেকে মুছে ফেলে দাও । ধ্রুব । তা হয় না, আধাপুত্র । অন্তপূৰ্ব্ব কল্প তা পারে না । শাস্বমতে আমি ভোমায় স্ত্রী । তুমি আমাকে পরিত্যাগ করে কোথায় যাবে ? মধের দিনে আমাকে অৰ্দ্ধাঙ্গিনী বলে গ্রহণ করেছিলে, আর আজ তোমার দুঃখের দিনে আমি সে কথা ভুলে যাব ? আয্যপুত্র, রুদ্রধরের কন্যা কি গণিকা ? চন্দ্র । তুমি কুলকন্যা ধ্রুবা, এখনও অবিবাহিত । তোমার পায়ে ধরি, মিনতি করি, আমায় ভুলে ষাও । কাল সন্ধ্যা থেকে লক্ষ লক্ষ নাগপাশ আমাকে চারিদিক থেকে বেষ্টন করে ধরেছে, তার উপর আবার তুমি এস না। তোমাদের ভুলতে হৃদয় ছিড়ে ফেলে দিতে হবে, কিন্তু তোমার মুখ চেয়ে, তাও করতে হবে।” ধ্রুবা । না, আৰ্য্যপুত্র, আমার মুখের দিকে ত তুমি চাইছ না,একবার আমার মুখের দিকে চেয়ে কথা কও, তা প্রবাসী—অগ্রহায়ণ, ১৩৩৮ [ ७sं एठांशं, २ञ्ज ं) হলে ও-কথা তোমার মুখে আসবে না। তুমি চেয়ে দেথছ না কেন ? একবার চা ও । চেয়ে দেখ ধ্রুব। দ্বিচারিণী হতে পারবে কি না । ধর-বংশের কঙ্কা যেমন ভাবে হীরামুক্তাখচিত পথে চলতে পারে, আবার তেমন ভাবেই স্বামীর ভিক্ষালব্ধ অল্পে হাসিমুখে জীবনধারণ করতে পারে । চন্দ্র । চেয়ে দেখলাম, কিছু যে বলতে পারছি না ধ্রুব ? মিনতি করি, ভুলে যাও, চন্দ্রগুপ্ত মৃত । ধ্রুবা । তবে রুদ্রধরের কন্যা চন্দ্রগুপ্তেধ বিধবা । এমন সময় পশ্চাং হুইতে রুদ্রধর বলিয়া উঠিলেন, “মিথ্যা কথা ।” রুদ্রধব যুথিক-বিভালের নিকট আসিয, অভ্যন্ত অভদ্র ভাবে, কর্কশ স্বরে বলিলেন, “রুদ্রধরের কষ্ঠা গুপ্তকুলের বাগদত্তা পত্নী । কুমার চন্দ্রগুপ্ত, তুমি আমার বিনা অল্পমতিতে, আমার কন্যার সঙ্কে আলাপ করফে এসেছ কেন ?” চন্দ্রগুপ্ত অত্যগু বিস্মিত হষ্টয়া বলিয়া উঠিলেন, “আমি দেবীর অনুমতি নিয়ে এসেছি মহানায়ক, নিত্য যেভাবে আসি, আঞ্জ-৪ সেইভাবে এসেছি ।” রুদ্র । কাল তুমি যা ছিলে, আজ আর তা নও চন্দ্রগুপ্ত, তুমি কাল গুপ্ত-সাম্রাজ্যের ভবিষ্যৎ যুবরাজ ছিলে, আজু তুমি অন্নহীন, বিত্তহীন, একজন সামান্ত রাজপুত্র । ধ্রুবা । পিতা, কুমার চন্দ্রগুপ্ত যে আমার স্বামী, আমি যে তার বাগদত্ত। পত্নী । রুদ্র । আবার বলছি, মিথ্য কথা। আমার কণ্ঠ, গুপ্তসাম্রাজ্যের যুবরাজের বাগদত্ত পত্নী, কুমার চন্দ্রগুপ্তের নয়। ধর-বংশের কন্যা কখনও সম্রাটকুলে দাসীবৃত্তি করেনি। আজ রামগুপ্ত যুবরাজ ॥ ধ্রুবা, তুমি যুবরাজ ভট্টারক য়ামগুপ্ত দেবের বাগদত্ত পত্নী । আমার অথবা তোমার স্বামীর অনুমভি ব্যতীত চন্দ্রগুপ্তের ন্যায় পরপুরুষের সঙ্গে আলাপ করা তোমার অত্যন্ত অস্কায় হয়েছে । ধ্রুবা। না হয় নি। শোন পিত্তা, তুমি পিতা, গুরু, আমি তোমার কক্সা, কিন্তু আমি গণিকা নই। পাটলিপুত্রের কুলকস্তা আজ কুকুরীর মত উচ্চ মূল্যে বিক্রয়