পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ጙ፵፫ኛ আবার নিতান্ত অবহেলার সহিত সঙ্গীদের সঙ্গে অন্ত বিষয়ে আলোচনা জুড়িয়া দিবে। যেন কন্যাদায়ের জন্য চাদ চাহিতে আসিয়াছি!--মনে মনে বলি কিসের তোর এত গুমোর রে বাপু ?—বেচিস ত খানকতক বস্তাপচা বই—তাও বেশীর ভাগই বটতলার ক্লাসের-যার কোনখানেই কাটুতি নেই--- ভাবিলাম-—যাই খানিকটা গোলদীঘিতে বলা যাকৃ গিয়া –ওখানেও গাদাখানেক ‘চরিত্র দীঘির চারিদিকে Iাক্ খাইয়া মরিতেছে,–সংসার-আবর্তের একটা খুব জীব দৃষ্টান্ত । স্থির করিলাম ওই ফুটপাথ দিয়াই যাইব । বই না-হয় নাই কিনিলাম, দেখিতে দোষ কি ? - মন্থরগতিতে বইগুলার উপর নজর বুলাইয়। যাইতেছি। -এর বিক্রয় নাই ; সেই সব একই বই সেই একই iানে--তাবাটে কাগজ, বখাটে নাম—-চুম্বনে গুমখুন মেকি মোহান্ত”–এই সব --- অনেক ক্ষেত্রে বাহিরে ভতরে সম্বন্ধ নাই –একটা জীর্ণ বইয়ের ওপর একটা উীন ছবির মলাট সাটা—নায়িকা নায়কের পিছন হইতে কৌতুকে চোখ টপিয়া ধরিয়াছে—নীচে পেন্সিলে নাম লখা—“সটীক পুরোহিত দর্পণ।” হঠাৎ একখানির ওপর নজর পড়িতে জড়বৎ নিশ্চল ইয়া দাড়াইয়া রহিলাম। কি সৰ্ব্বনাশ, এ যে আমারই গান্তরকারী নভেল ! তাহার স্থান এইখানে—বকের লৈ হংসের সমাবেশ ! হায় রে, শেষে এই দেখিতে হল ! কিন্তু এ অধটন, ঘটিল কিরূপে ? মাথাটা ঝিম্ iম করিতে লাগিল—ভূল দেখিতেছি না-ত ?--নাঃ, ত স্পষ্ট লেখা রহিয়াছে— - প্রেমের নেশা বা হেমন্তকুমারের জীবন্ত সমাধি . শ্ৰীধুরন্ধর দেবশৰ্মা প্রণীত একটা কথা বলিতে ভুলিয়া গিয়াছি,—বইটা পিতৃদত্ত মে ছাপি নাই, নিজেরই মনগড়া একটা নাম বসাইয়া মাছিলাম। তাহার অনেক কারণের মধ্যে একটা এই "বাড়িতে এরা সব নভেল লেখার ওপর অত্যন্ত চটা। ৬৬৯ আমার খুড়শ্বশুর নাকি এই করিয়া ধনেপ্রাণে মারা যাইবার মত হইয়াছিলেন, শেষে আমার খুড়শাশুড়ীর কড়া নজরের পাহারার মধ্যে থাকিয়া সামলাইয়া উঠেন। স্ত্রীজনস্থলভ এই অজ্ঞতায় মনে মনে হাসি। কিন্তু মিথ্যা গৃহবিরোধ করায় ফল কি ? তাই এই নামের অন্তরাল খাড়া করিয়া দিয়াছি। জানি—একদিন আসিবেই যখন খুড়শ্বশুরের ভাইঝির পতিদেবতাটি সাহিত্যস্বর্গের ইন্দ্রচন্দ্র গোছের একটা কেহ হইয়া দাড়াইবে । সেই আত্মপ্রকাশের শুভ অবসর। আজ যে হস্তের তর্জনী বিক্ষেপের ভয়ে নিরস্ত হইলাম সেদিন সেই হস্ত হইতেই প্রতির পারিজাত মাল্য এ-কণ্ঠে নামিয়া আসিবে। ধাকৃ সে কথা। আপাতত স্বীয় মস্তিষ্কের প্রথম সন্তানটিকে অনাথের মত রাস্তার ধারে এমন ভাবে পড়িয়া থাকিতে দেখায় যে নিদারুণ আঘাতটা লাগিয়াছিল তাহার প্রথম ঝোকটা কাটিয়া গেলে অনেকগুলি সুন্দর স্বন্দর যুক্তি আসিয়া দেখা দিল –ভাবিলাম, কেন, সাহিত্যগুরু শেক্সপীয়রকেও কি এখানে প্রায় দেখা ধায় না ? ঐ ত নিৰ্টুশের একখানা রাজসংস্করণ ! এমন কি রবীন্দ্রনাথও ত বাদ পড়েন না। আমিই ত নিজের হস্তে সেদিন তাহার একখানা ভলুম কিনিয়া লইয়া গেলাম। কি প্রমাণ হয় এ সবে ?—এ-ই প্রমাণ হয় না কি যে, ইহাদের আর স্থানের সঙ্কুলান হইয়া উঠিতেছে না, তাই সনাতন আশ্রয়ের সঙ্কীর্ণ গণ্ডী ছাড়াইয়া বাহির হইয়া পড়িতেছেন ? ভাবজগতে, সাহিত্য-জগতে আবার আভিজাত্য ? হুইলই বা পুরাতন পুস্তকের আশ্রয়হীন দোকান। চাণক্য কি বলেন নাই –নহি সংহরতি জ্যোৎস্নাং চন্দ্ৰশ্চণ্ডাল বেগুনি । ૨ দোকানীটার প্রতি প্রথমে অতিশয় চটিয়াছিলাম, এখন দেখিলাম—না, লোকটা জোগাড়ে নেহাৎ মন্দ নয়, আর ওর পছন্দর মধ্যে একটু বিশেষত্ব আছে বইকি ; তারিফ না করিয়া থাকা যায় না। দু-একখানা ওরকম বটতলাচটতলা থাকিবেই, সব রকম খরিদার আছে ত, না আমিই এক ?