পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা } ঝোক ছাড়াও নীচে ডোবার ঝোক আছে। মহুয়াব্যবহার বিচার করিয়াই মাময় বুঝিতে পারি প্রকৃতির কৰ্ম্ম করাইবার মূল ঝোক কোনদিকে ? প্রাণিবিৎ A biologist Toto new owfa ( instinct ) on তাহা প্রকৃতির ম্রোতের এক একটি ধারা । সহজ সংস্কার বশে যে কাজ হয়, ব্যক্তিগত হিসাবে তাহা স্বাধীন ইচ্ছায় বশে হইতেছে বলিয়াই বোধ হয় । প্রাণীদের নানা প্রকার সহজ সংস্কার আছে ; ইহাদের পরম্পর ঘাতপ্রতিবার্তে যে-ষে প্রবৃত্তির বা ঝোকের উৎপত্তি হয় তাহাই ব্যক্তিগত হিসাবে সামাজিক আদর্শ বলা যাইতে পারে। প্রাণিবিং বলিতে পারেন বহুসংখ্যক নরনারী একত্রে মিলিত হইলেই তাহাঁদের মধ্যে অনেকে প্রেমে পড়িবে ও সংসার পাতুিবে, কতক সংখ্যক মারামারি করিবে ইত্যাদি ; প্রাণিবিং জানেন প্রকৃতির মূল ধারাগুলি কোন দিকে চলিতেছে । এই সকল বিভিন্ন স্রোতের ঘাতপ্রতিঘাতে সামাজিক ও যৌথপ্রবৃত্তি ( social instinct or herd instinct ) সমূহের উৎপত্তি ও তাহারই বশে সামাজিক আদর্শ কল্পনা । ষে-মানুষ প্রেমে পড়ে ও সংসার পাতে তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলে সে বলিবে না যে, সে অন্ধ সংস্কারের বশে চলিয়া এমন কাজ করিয়াছে । সে প্রেমাম্পদের নানাগুণ দেখিয়া আকৃষ্ট হইয়াছে, কৰ্ত্তব্য হিসাবে সে বিবাহ করিয়াছে, ভাল লাগে বলিয়া ছেলেমেয়েকে আদর করিতেছে, ইত্যাদি । যেদিন আমরা প্রকৃতির সবটা বুঝিব সেদিন প্রত্যেক প্রাণীর প্রত্যেক । ব্যবহার সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করিতে পারিব । সবট জানি ন। বলিয়াই বলিতে পারি না সামাজিক মূলধারার বিরুদ্ধে কেনই বা কোন কোন ব্যক্তি যায়, কেনই বা দুই চারিটা কুটা ভারি ও জলে ডোবে, কেনই বা বিভিন্ন মহস্যের ব্যবহার বিভিন্ন। সামাজিক আদর্শের বশে বা কৰ্ত্তব্যবোধে ভাল কাজ করি ও পাপ ইচ্ছা বশে খারাপ কাজ করি বলাও যা, ঐ সকল কাজে প্রকৃতির বশে করিতেছি বলাও তা ; বাস্তবিক কাহারও কোন দায়িত্বই নাই, যে পাপ করে তাহারও নয় যে শাস্তি দেয় তাহারও নয়। প্রকৃতির কোন গুণের বশে একটা কুটা স্রোতের মুখে চলে অর্থাৎ সামাজিক আদর্শ মানে আর কোনটা ডোবে অর্থাৎ আদর্শ 哆 هس-محو ۹ গীতা

dجهول

মানে না তাহার বিচার সম্ভব। এরূপ কৌতুহল হওয়াতেই অর্জন ইহার পরেই ৩৩৬ গ্লোকে প্রশ্ন করিলেন “কিসের বশে মানুষ পাপ করে ?” যিনি স্থিতপ্রজ্ঞ উtহার নিজের কোন কামন। নাই, অর্থাৎ কোন বিশেষ দিকে ঝোক নাই। নদীতে একটি ষ্টীমার ও একটি কর্ণধারহীন নৌকা ভাসিতেছে। ষ্টীমারের ষ্টীমের জোরে নিজের মতে চলিবার একটা ঝোক আছে ; সব সময় সে স্রোতের বশে চলে না, কিন্তু কর্ণধারহীন নৌকা ম্রোতের বশেই চলে—ইহাতে তাহার কোনই আয়াস নাই ; স্রোতকে সামাজিক আদর্শ ধরিলে এইরূপ কর্ণধারহীন অর্থাং কামনাবিহীন মনুয়াই সৰ্ব্বাপেক্ষ সামাজিক আদর্শাকুযায়ী চলিবে । সে-ই সকলের অপেক্ষা ক্রিয়াবান হুইবে । ষ্টীমারও বাম্পের ( steam ) ঝোঁকে শ্রোতের বশে চলিতে পারে, কামনাযুক্ত মনুস্থ্যও ক্রিয়াবান হইতে পারে । কিন্তু এই দুই ক্রিয়াবানের মধ্যে পার্থক্য আছে । একজন অসঙ্গচিত্তে কাজ করেন ও অপর জন আগ্রহের সহিত সেই কাজ করেন। উভয়কে যদি উঠাইয়া সম্পূর্ণ বিভিন্ন ও উন্ট আদর্শের সমাজের মধ্যে ফেলা যায়—এইরূপ দুই অহিংস ধৰ্ম্মী বৈষ্ণবকে যদি শাক্ত সমাজে ফেলা যায়, তবে স্থিতপ্রজ্ঞ বৈষ্ণব সহজেই শাক্ত আদর্শমতে চলিতে পারিবেন, কিন্তু অপর বৈষ্ণবের দারুণ অশান্তি হইবে। স্থিতপ্রজ্ঞের প্রতিযোজন ক্ষমতা বা সৰ্ব্বাবস্থায় নিজেকে মানাইয়া চলিবার ক্ষমতা ( adaptibility ) বেশী ; কোন অবস্থায় তাহার কষ্ট নাই ; মরিলেও নয়। সামাজিক মূল স্রোতের বিরুদ্ধে চালিত হইলেও তাহা প্রকৃতির বশেই হইতেছে বুঝিতে পারিলে স্থিতপ্রজ্ঞ হয় ; এরূপ ব্যক্তি মনে করেন প্রকৃতিই তাহাকে পাপ করাইতেছে—তিনি বাস্তবিক নির্লিপ্ত ; এরূপ অবস্থায় বাস্তবিক কোন পাপ নাই ; সামাজিক হিসাবে দুই প্রকার ব্রহ্মবিখ হইলেন—একজন ভাল ও একজন মল ৷ এইজন্যই মুণ্ডকের শ্লোকে ক্রিয়াবান ব্রহ্মবিদকে ८डवंद्वै दलों হইয়াছে । - গ্রককের অসঙ্গচিত্ত হওয়ার কথা ও সামাজিক কৰ্ত্তব্যপালনের কথায় কোনই বিরোধ নাই। উপরে যাহা বলিলাম পরের শ্লোকে তাহাই পরিস্ফুট হইয়াছে।