পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] খুব স্পষ্ট নয়, সে ঠিক বুঝাইয়া বলিতে তো পারে না ? কিন্তু দিদিমার মুখে শোনা নানা গল্পের রাজপুত্র ও পাত্রের পুত্রের নাম না-জানা নদীর ধারে ঠিক এ সন্ধাবেলাটাতেই পৌছায়—কোন রাজপুরীকে বাপাইয়া রাজকস্তাদের সোনার রথ বৈকালের আকাশপানে উঠিয়া অদুখ হইয়া যায়—সে অন্যমনস্ক হইয়া দেওয়ালের পাশে ঝু কিয়া আকাশটার দিকে চাহিয়া থাকে, কেমন সেন দুঃখ হয়—ঠিক সেই সময় সীতানাথ পণ্ডিত বলেন – দেখুন, দেখুন, বড়ে ধো-মশায় আপনার নাতির কাগুট দেখুন, প্লেটে বুড়কে লিখতে দিলাম, ভী গেল চুলোয়— হা করে তাকিয়ে কি দেখ চে দেখুন—অমন অমনোযোগ ছেলে যদি— দাদামশায় বলেন–দিন না ধ। করে এক থা%ড বসিয়ে গালে-হত ভাগ। ছেলে কোথাকার—হাড় জালিয়েচে, বাব করবে না গোজ, আমার ঘাড়ে এ বয়সে যত ঝুকি । তবে কাঞ্চল যে দুষ্ট হইয়া উঠিয়াছে, এ কথা সবাই বলে । একদণ্ড স্বস্থির নয়, সৰ্ব্বদা চঞ্চল, একদণ্ড চুপ করিয়া থাকে না, সব্বদা বকিভেছে । পণ্ডিতমশায় বলেন—দেপতো *નું কেমন অঙ্ক কষে ? এর মধ্যে অনেক জিনিস আছে– আর ংঙ্গ অঙ্কে একেবারে গাধ । পণ্ডিত পিছন ফিরিলেই কাজল মামাতে ভাই দলুকে আ৬ ল দিয়া ঠেলিয়৷ চুপিচুপি বলে, ૮૩-૮૪ાર મtના অনেক জিনিষ আছে ? কি জিনিষ আছে বে ? ভাত ডাল থি-খিচুড়ী...খিচুড়ী ? হি-হি হল্লি । খিচুড়ী থাবি, সতীশ ? ' দাদামশায়ের কাছে আবার নালিশ হয় । তখনই দাদামশায় ডাকিয় শাস্তিস্বরূপ বানান জিজ্ঞাসা করিতে আরম্ভ করেন । বানান কর— স্থৰ্য্য। কাজল বানানটা জানে, কিন্তু ভয়জনিত উত্তেজনার দরুণ হঠাৎ তাহার তোংলামিটা বেশী করিয়া দেখ দেয়—দু-একবার চেষ্টা করিয়াও "দস্ত স' কথাটা কিছুতেই উচ্চারণ করিতে পারিবে না বুঝিয়া অবশেষে বিষঃমুখে বলে— তা—তালব্য শয়ে দিঘ্য উকার— ঠাস করিয়া এক চড় গালে, ফরস। গাল, তখনই ه الاحسسوا هنا অপরাজিত Q 、> দাড়িমের মত রাঙা হইয় উঠে, কান পৰ্য্যস্ত রাঙা হইয়া যায় । কাজলের ভয় হয় না, একট। নিম্ফল অভিমান হয়—বাঃ রে বানানটা তো সে জানে, কিন্তু মুথে যে আটকাইয় যায় তো তার দোষ কিসের ? কিন্তু মুখে এত কথা বলিয়া বুঝাইয়া প্রতিবাদ বা আত্মপক্ষ সমর্থন করিবার মত এতট। জ্ঞান তাহার হয় নাই—সবট। মিলিয়া অভিমানের মাত্রাটাই বাড়াইয়। তোলে। কিন্তু অভিমানটা কাহার উপর সে নিজেও ভাল বোঝে না । বর্ষাকালের শেষের দিকে সে দু-একবার জরে পড়ে । জর আসিলে উপরের ঘরে একলাটি একটা কিছু টানিয়া গায়ে দিয়া চুপ করিয়া শুইয়া থাকে । কাহার পায়ের শব্দে মুখ তুলিয়া বলে—শু মামীম, জর এসেচে আমার— একট; লে-এ-এ-প বে বের করে দাশ না ? ইচ্ছা করে কেহ কাছে বসে, কিন্তু বাড়ীর এত লোক সবাই নিজের নিজের কাজে বাস্ত । জরের প্রথম দিকে কিন্তু চমৎকার লাগে, কেমন যেন একটা নেশা, সব কেমন অদ্ভুত লাগে। ঐ জানালার গরাদেতে একটা ডেও পিপড়ে বেড়াইতেছে, গায়ে চুনে কালীতে মিশাইয়। একটা দাড়িওয়াল মজার মুগ । জানালার বাহিরের নারিকেল গাছেই নারিকেল-সুদ্ধ একট। কাদি ভাঙিয়া ঝুলিয়। পড়িয়াছে । নীচে তাহার ছোট মামাতো বোন অরু, ‘ভাত ভাত’ করিয়া চীৎকার মুরু করিয়াছে—বেশ লাগে । কিন্তু শেষের দিকে বড় কই, গা জালা করে, হাত পা ব্যথা করে, সারা শরীর ঝিম্ ঝিম্‌ করে, মাথা যেন ভার বোঝ, এ সময়টা কেহ কাছে আসিয়া ধদি বসে : কাছারীর উত্তর গায়ে পথের ধারে এক বুড়ীর খাবারের দোকান, বারো মাস খুব সকালে উঠিয়া সে তেলে ভাজা বেগুনি ফলুরী ভাঙ্গে : কাজল তার বাধা খরিদ-দার । অনেকবার বকুনি খাইয়াও সে এ লোভ সামলাইতে সমর্থ হয় নাই । সারিবার দিনস্থই পরেই কাজল সেখানে গিয়া হাজির । অনেকক্ষণ সে বসিয়া বসিয়া ফুলুরিভাজা দেখিল, পুইপাতার বেগুনি, জবা পাতার তিল পিটুলি। অবশেষে সে অপ্রতিভ মুখে বলে—আমায় পুইপাতার বেগুনি দাও না দিদিম ? দেবে ? এই নাও