পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অনুপাতে লোকের লব্ধখাদ্যের পরিমাণ যৎসামান্ত, তদ্ধেতু তাহার টিফিনবাক্সে লুচির সংখ্যাও আশাগুরূপ নহে। অতএব বাবুটুর সঞ্চিত খাবারে অন্যে বঞ্চি ত হইবে, বিচিত্র কি ! তিনি লুচি গুলি নিঃশেষ করিয়া সঙ্গীদের জন্য সমবেদনার একটি নিশ্বাস ফেলিলেন এবং রুমালে भूथ মুছিয়। স্থির হইয়া বসিলেন । আমি তাঙ্গাকে একটি পান দিলাম । তিনি তা,শচধ৭ করিতে করিতে প্রসঙ্গক্রমে বলিগেন, পান জিনিসট"আমাদের দেশে অদ্যপি দুলৰ্ভ হয় নাই, ইহা অত্যন্ত মুখের বিষয় । মূলে কিন্তু সেই আমদানি রপ্তানির কথা। অর্থাৎ পৃথিবীর সর্বত্রই যদি পান খাওয়ার চলন থাকি ত তবে আজ এই থিলিটি র্তার মিলিত না ! সন্ধ্যার সময় গন্তব্য ষ্টেশনে পৌছিলাম। রেলবাবুদের ছোট ছোট ইটের কুঠুরী এবং আপাদমস্তক লৌহমণ্ডিত গুদামঘর ছাড়াইয়ু আমার পালুকা গ্রামের দিকে অগ্রসর হইল। গোরুর গাড়ীর চাকা বণাসিক্ত মাঠের পথে শুকাইয়াছে, কিন্তু সে দাগ মুছে নাই ;–ক্ষতবিক্ষত হৃদয়ের শোকস্মৃতির মত কঠিন হইয়া উঠিয়াছে । আটটার ঢ়েন পরিবার জন্য ব্যপ্ত রেলের যাত্রীর ৭ন্তভাবে ষ্টেশনের দিকে চলিয়াছে । বাশবাড়ের আড়ালে গৃহস্থকুটীরে সতর্ক কুকুর বেহারাদের হুঙ্কার শুনিয়া অতর্কিতে ডাকিয় ডাকিয়া উঠিতেছে । প্রাকাও একটা অশ্বথগাছের অন্ধকার ছায়ার মধ্যে আমার পাল্কা নামিল । সম্মুখে বাঁশের চটাইঘেরা মুদির দোকানঘরে অনেকখানি ধূমোদগার করিয়া কেরোসিনের কুপি জ্বলিতেছে, আর—দীপশিখার সৌন্দর্যো প্রলুব্ধ পতঙ্গের দলে দলে সেখানে তিড় করিয়া ঘুরিতেছে। বাশের খুঁটিতে তারের কাটায় আটকানো পঞ্জিকারঞ্জিত হাওয়t-গাড়ীর মলিন পট । চিত্রলিখিত কলের গাড়ী একেবারে বিকল ; শুধু মাঝে মাঝে হাওয়ায় দোল খাইয়া নিজ নামের সার্থকতা সম্পাদন করিতেছে । আলো ও ছায়ার সন্ধিস্থলে খরিদারের প্রতীক্ষায় বেড়ায় ঠেস দিয়া বসিয়া মুদি যুগ্মকরপুটে কলিকা ধরিয়া টানিতেছে । “আমি চিরদিন হেথা বসে’ পল্লীক্রমণ .তাহারা অবিলম্বেই ধরাশায়া হইল। ৬২৭ আছি, তোমার যখন মনে পড়ে আসিয়ো! আমার বাহকের জলপানের পর গাছের তলায় "পানে বসিয়া গেল। কিন্তু পৃথিবীর কেন্দ্রাতিমুখী মাধ্যাকর্ষণ এবং গভীর নিদ্রাভিমুখা’ তন্দ্ৰাকর্ষণ–এতদুভয়ের আক্রমণে কেীরবসমরে শরশয্যাশায়ী ভীষ্মের মত দুঃসহ গ্রীষ্মের মধ্যে আমি জাগিয়া রহিলাম । o উপযু পরি কয়েকবার তাড়া দেওয়ার পর বেহারাদের সাড়া পাওয়া গেল। তাহারা জাগিয়া উঠিয়া আমাকে কাধে না তুলিয়। পুনরায় তামাকের চেষ্টায় মনোনিবেশ করিল। বেহারাদের এই রূপ অসঙ্গত আচরণে ধৈর্য্যচুতি ঘটিবার উপক্রম হইতেছিল, কিন্তু নেশাখের লোকের সঙ্গে বাদামুবাদ করিয়া বিবাদ বাগানো উচিত নয় ভাবিয়া মনেমনেই ধূমপানের অপকারিতা সম্বন্ধে আলোচনা করিতে লাগিলাম। হাতে হাতে ঘুরিয়া ছিলিমটি যখন পুড়িরা ছাই হইল তখন আমার পাল্পী আবার উঠিল । to মাঠের মেরুদণ্ডের মত সুপরিসর পথটি হীরকোজ্জ্বল তারকমিণ্ডিত আকাশের কিরণচ্ছটায় তরলীভূত অন্ধকারে বহুদূরে গিয়া দৃষ্ঠ হইয়াছে। দুইদিকে বিটপিশ্রেণীর শাখাপল্লবে ক্ষণে ক্ষণে সমীরসঞ্চারের শব্দ ;–যেন রঙ্গচ্ছলে বাতাসু স্তস্তিত নিশাচরের কর্ণকুহরে ফুৎকার করিয়া ফিরিতেছে। দুরে শান্ত ধরণ ও অনন্তগগনের মিলনক্ষেএে ক্ষীণলোকে ছায়া-লোকের স্বষ্টি হইয়াছে। স্তন্ধ রাব্লির বিনিদ্র যাত্রীকে বহন করিয়া বেহারার অগ্রসর হইতে লাগিল, তাহাদের অমুনাসিক কণ্ঠধ্বনি পান্ধীর গতিচ্ছন্দে যতিবিদ্যাস করিয়া চলিল । যখন থেয়াঘাটে আসিয়া উপস্থিত হইলাম তখন পূৰ্ব্বাকাশে উষার ধূসর মূৰ্ত্তি ফুটিয়া উঠিতেছে। নদীর তুলে একখানি খড়ের ঘরে ঘাটের ইজারাদার বেজায় নাসিকাধ্বনি করিয়া নিদ্রা দিতেছিল ; বেহারাদের হাক-ডাকে বিরক্ত হইয়া জিজ্ঞাসা করিল, “কি চাই ? চাই আর কি! —“তুমি পারের কওঁ, জেনে বাৰ্ত্ত, ডাকি হে তোমারে! ঘুমের ব্যাঘাত হওয়ায়Nউচ্চরবে আক্ষেপ করিয়া ঘাটেয়াল কিছুক্ষণ শক্ত হইয়া তক্তার উপর গুইয়। রছিল।