পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬২৮ কিন্তু একদল লোক ঘাড়ের উপর দঁাড়াইয়া উপদ্রব করিলে কুম্ভক ভিন্ন অষ্ঠের স্বস্থিতে নিদ্রা যাওয়া অসম্ভব । অবশেষে পাটনী উঠিল, কিন্তু শয্যা ত্যাগ করিয়াই ਣੇ সজ্জায় মন দিল । আবার সেই টকা-কলিক। —হুক ! নিদ্রাভঙ্গের পর তাহাকে এমন উৎকৃষ্ট সঙ্গ হং তে বিচ্ছিন্ন করিতে আমাদের আরও কিছু সময় লাগিল । * এ অঞ্চলের আবহাওয়ার কিঞ্চিৎ নমুনা পাওয়া গেল। একটি স্ত্রীলোক আমাদের সঙ্গে পার হইল । তাহার হাতে গলায়-স্বতী-বঁধে একটা প্রকাণ্ড শিশি। ভাইপো অনেক দিন হইতে ভুগিতেছে, তাই সে ওপাবের ডিসপেন্সারি হইতে দাতব্য দাওয়াই আনিতে চলিয়াছে। শুনিলাম এই পিসিটি বিশেষ অধ্যবসায়ের সহিত ভ্রা পুত্রের শুশ্ৰষ করিয়া আসিতেছে । পাড়াগায়ে গরীবের চিকিৎসা বড় কঠিন বfাপার । রীতিমত দর্শনীর জোগাড় করিতে না পাধিলে নদীর অপর পারে ক্রোশধীনেক দূর হইতে চিকিৎসকের দর্শন পাওয়া অসম্ভব। ডাক্তারকে প্রত্যহ অবস্থা বলিয়। ব্যবস্থা লওয়া ও সহজ নহে । আর—ব্যবস্থাই বা কি ! ফাইলের পর ফাইল কুইনিন কাবার হয়, রোগীও এদিকে, সাবাড় হইয়া আসে ! যথাসময়ে আমার গম্যস্থানে উপস্থিত হইলাম। সহুরে লোকের পক্ষে কয়েকদিনের গ্রাম্য জীবন কাম্য বলিয় বোধ হইবে বিচিত্র নয়। চারিদিকে শুমল বনের বেড়ায় ঘেরা সুদুরবিস্তৃত সবুজ ধানের ক্ষেত, আর সেই হরিৎসমূদ্রে দ্বীপের মত কোলাহলশূন্ত লোকালয়গুfল । ভোরে উঠিলে প্রভাতের স্নিগ্ধ তা একেবারে মুগ্ধ করিয়া ফেলে। মাঠের দিকৃ হইতে হাওয়া আসিয়া ঝুরকুর করিয়া গাছের পাত কঁপাইতে থাকে এবং অরুণকিরণে হস্তময় আকাশের নীচে পাখীগুলি উড়িয়া উড়িয়া ঘুরিয়া ঘুরিয়া নাচিয়া নাচিয়া বেড়ায়। দুপুর বেলা স্তব্ধতার সমুদ্রে স্বরতরঙ্গ তুলিয়া ঘুঘু উদাস কণ্ঠ দিকৃদিগন্ত প্লাবিত করে, আর বনাস্তের শ্যামণকাস্তি দিনান্তে আঁধার হইয়া ক্রমে গ্রামের পথঘাটমাঠ মচ্ছিন্ন করিয়া ফেলে। মাদর আপ্যায়নে জমিদার বাবুরা আমাকে একে প্রবাসী—ফাঙ্কন, ১৩২১ [ ১৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড بہ_نمبر حیرN-ب_N-مرN-م.TNم * বারে অভিভূত করিয়া ফেলিলেন । সকালবেঃ একজনের বাড়ীতে ৮n-পান করিলাম, অপরাহ্লে অপরে গৃহে চায়ের সঙ্গে কচুরির আবির্ভাব হইল। আ রামবাবুর অভ্যর্থনায় জলপানের উদূযোগ, কাল , শুt বাবুর নিমন্ত্রণে ফলাহারের সহিত পোলা ও কালিয়া ব্যবস্থা। এইরূপে প্রতিদ্বন্দ্বিতাসূত্রে ভোজনের আয়োজ চক্রবৃদ্ধির নিয়মে বৰ্দ্ধিত হইয়া চলিল । “উত্তর তরফে” রাধাগ্রাম বিগ্রহ প্রতিষ্ঠিত আছেন বাবুরা তাহাকে লুকাইয়া একদিন ঠাকুরদালানের পিছনে একটি ছাগ বংশধরকে ধ্বংস করিয়া ফেলিলেন । অন্দ মহলের রন্ধন বৈষ্ণব মতে হয় বলিয়া তন্ত্রমতের যন্ত্রপাতি বাহির-বাড়তে থাকে। সেইখানে বৈষ্ণবসংস্পর্শশুর প্রণালীতে মাংস পাক করা হইল । শক্তিউপাসক ন হইলে ও বাবুবা আমার সহিত ভক্তিপুৰ্ব্বক আহারে বসিলেন এবং সেই উপভোগা মাংস ভক্ষণের সময় স্বীকার কfরলেন যে শ। ক্রম ত প্রকাগু রূপেই গ্রহণযোগ্য তবে কি না স্বধৰ্ম্মে নিধনং শ্রেয়s, অর্থাৎ ভোজনের জন্ত পশুপক্ষীর সংহার নিজের বৈষ্ণব ধৰ্ম্ম বজায় রাখিয়াই করা তাল, এইজন্য তাহারা ভয়াবহ পর ধৰ্ম্ম গ্রহণ করেন নাই ! দেখিলাম গ্রামে দুইট। বাজার, দুইট: দাতব্য ঔষধালয় এবং দুইটা বারোয়ারিতলা। দুঃখের বিষয় সরকারবাহাদুর পোষ্টাপিস একটার বেশি মঞ্জুর করেন নাই, সুতরাং স্থানীয় দুই দলকেই একবাক্সে চিঠি ফেলিতে হয়। একদিন মধুবাবুর মাছধরা দেখিবার জন্য আহুত হইলাম । পাড়াগায়ে প্রায় প্রত্যেক বাড়ীর পাশেই একটা করিয়া ডোবা থাকে। এ পুকুরটা সে রকম নয়, বেশ বড় । গোটাতিনেক বাঁধাঘাট আছে । দেখিলাম, ইহারই একএকটায় সপারিষদ মধুবাবু বসিয়া আছেন ৷ ‘চার’ প্রভৃতি উপচারের ক্রটি নাই । ডাবের জল এবং ঘোলের সরবৎ ও মাঝে মাঝে আসিতেছে, তবে এগুলি অবশু মৎস্তকুলের জন্য নহে। মধুবাবু একেবারে ধ্যানময় ; তিনি অনিমেষ নয়নে জলের দিকে চাহিয়া আছেন। হঠাৎ ফাৎনা' নড়িল, অমনি মধুবাবু অধীরভাবে খ্যাচ : মারিলেন । কিন্তু হার মাছ কোথায় –পূন্ত বড়শী উঠিয়া আসিল।