পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] কৰ্ম্মত্যাগ করিয়া মাসাধিককাল গৃহে নিষ্কৰ্ম্ম।. বসিয়া থাকেন । এই সময়ে নেপালে একজন কল কারখান। সম্বন্ধে সুদক্ষ কৰ্ম্মচারীর প্রয়োজন জানিয়া এবং তথায় তাহার অবস্থার উন্নতির সম্ভাবনা বুঝিয়। নেপালের কলিকাতাস্থ তাৎকুলীন রেসিডেন্টের সহিত সাক্ষাৎ কশি। ১৫০ টাকা বেতনে কৰ্ম্মগ্রহণ করেন। ইহার কিছুদিন পরেই ১২৭৬ সালের ফাল্গুলমাসে মুণাবাহাদুর যখন নেপালে প্রত্যাগত হন তখন রাজকৃষ্ণবাবু অপর পাঁচজন কারিগরের সহিত র্তাহার অসুগমন করেন। র্তাহাদের নাম শ্ৰীযুক্ত খামাচরণ' কৰ্ম্মকার, দিগম্বরচন্দ্র লস্কর, গিরীশচন্দ্ৰ কঁ{সারী, কৈলাসচন্দ্র ঘোষ এবং যদুনাথ নন্দী। তৎকালে নেপালের পান সরকার * অর্থাৎ মহারাজাধিরাজ ছিলেন সুরেন্দ্রবিক্রম সা এবং তিনসরকার ীি বা মহারাজ অর্থাৎ প্রধান মন্ত্রী ছিলেন চন্দ্ৰসমসের জঙ্গ। এই সময় বীরসমসের জঙ্গ রাণাবাহাদুর নেপালের to wità (Senior Commanding General) got রণউদ্দীপ সিং বাহাদুর সেনাপতি ছিলেন। মহারাজার চতুর্থ পুত্র বাবরজঙ্গ তৎকালে তোপখানার অধ্যক্ষ ছিলেন। তঁহারই অধীনে এই কয়জন বাঙ্গালী কৰ্ম্মে নিযুক্ত হইলেন। তাহার। প্রথমে টঙ্কশালায় ( mint ) কৰ্ম্ম আরম্ভ করেন, পূৰ্ব্বে এখানে মুদ্ৰা-সকল ডাইসে ফেলিয়া হাতে পিটিয়া নিৰ্ম্মিত হইত; ছয়-সাতজন কৰ্ম্মচারী এজন্য নিযুক্ত ছিল । রাজকৃষ্ণবাবু এখানে প্রথম মেসিনপ্রেস প্রভূতি বসাইয়া যন্ত্রযোগে মুদ্রা নিৰ্ম্মাণের স্বত্রপাত করেন। পরে এখান হইতে র্তাহাকে কামানবন্দুক নিৰ্ম্মাণের বদলি করা হয় । এই কারখানায় ইতিপূৰ্ব্বে প্রাচীন প্রথামত কামান, বন্দুক ও গোলাগুলি এবং এন্‌ফিল্ড রাইফল ও বে অনেটু প্রস্তুত হইত। রাজকৃষ্ণবাবু আসিবার পর এখানে উন্নত প্রণালীর উৎকৃষ্ট যন্ত্রাদি আনাইয়। আধুনিক কালোপযোগী কণমান

  • পাচ সরকার অর্থাৎ যাহার মুকুটে পাচটি হীরক-নক্ষত্র থচিত আছে ।

+ তিন সরকার অর্থাৎ যাহার মুকুটে তিনটি হীরক-নক্ষত্র খচিত আছে, ইনিই নেপালের প্রকৃত রাজা, কারণ ইহারই আদেশে ৰাৰতীয় কৰ্ম্ম সম্পাদিত হয়। নেপালপ্রবাসী কপ্তেন রাজকৃষ্ণ কৰ্ম্মকার NෂවL বন্দুকাদি নিৰ্ম্মিত হইতে লাগিল এবং তাহার নিকট নেপালী কারিগরের কাজ শিখিতে লাগি । এই কারথানার সমস্ত কল চালাইবার জন্ত যে-পরিমাণ বলের অবিশুক তাহা তিনি একটি ঝরণার জল খাল কাটিয়া আনিয়া তাহাতে পানিচক্র (Water Wheel) বসাইয়া • নিয়োগ করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন , দুই বৎসর এইরূপে কৰ্ম্ম কবিবার পর মহারাজ। রাজকৃষ্ণবাবুকে এখানে স্থায়ী করিবার জন্ত তাহার পরিবারবর্গকে আনিবার আদেশ করেন এবং এজন্য দুইমাসের ছুটি, পাথেয় নিমিত্ত দুইশ ত টাকা ও ইমাসের অগ্রিম বেতন দেন । মহারাজার আদেশানুসারে সঙ্গীগণের সহিত রাজকৃষ্ণবাৰু দেশে ফিরিয়া আসেন এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিজনগণকে লইয়া, দ্বিতীয়বার নেপাল গমন করেন । এবার অপর পাঁচজন কারিগরকে লইয়। যাইবার আবগুক হয় নাই। নেপাল গবৰ্ণমেণ্ট কর্তৃক নিযুক্ত একজন সিপাহী নিরাপদে পৌঁছিয়া দিবার জন্য পাটনা হইতে র্তাহীদের সঙ্গে ছিল । re রাজকৃষ্ণবাবু পুৰ্ব্বস্থানে ফিরিয়া আসিয়া খুব উৎসাহের সহিত কৰ্ম্ম করিতে লাগিলেন । র্তাহার চেষ্টায় কারখানার প্রবৃদ্ধি হওয়ায় এবং এখানকার বাসিন্দার মত তাহাকে পরিবার রিজনের সহিত স্থায়ীভাবে থাকিতে দেখিয়া মহারাজ। তাহার প্রতি পরম প্রীত হইয়াছিলেন। তাহার সন্তানদের প্রতিও মহারাজার স্নেহদৃষ্টি ছিল। তিনি তঁহাকে বসিবাটা ভিন্ন বাৎসরিক একশতটাকা আয়ের একথও জমি দান করিয়াছিলেন এবং তাহার মঙ্গলের জন্য মহারাজার বিশেষ চেষ্টা ছিল, কিন্তু দুৰ্ভাগ্যবশতঃ ১২৮৩ সালের ফাল্গুন মাসে মৃগয়ায় গিয়া তাহার মৃত্যু হয়। মহারাজার এই আকস্মিক মৃত্যুতে রাজকৃষ্ণবাবু অত্যন্ত শোকামুভব করিয়াছিলেন। র্তাহার পর রণউদ্দীপ সিং মহারাজা, এবং বীর সমসের জঙ্গ সেনাপতির পদ প্রাপ্ত হন। দ্বিতীয়বার নেপালে আসিয়া রাজকৃষ্ণবাবু দরবার স্কুলের প্রিন্সিপাল বাবু কেদারনাথ চট্টোপাধ্যায় এবং রাজচিকিৎসক বাবু শশিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখিয়াছিলেন । - মহারাজার মৃত্যুর পর রাজকৃষ্ণবাবুর সৌভাগ্যে ঈর্ষা