পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ఫిJు শ্ৰীযুক্ত তালতীর গৃহে বিশ্বভারতীর দল ক্ষমতার অভিমান আছে। দাস যখন মনে করে সে প্রভু পরের ধার-করা প্রভুত্ব নিয়ে যখন সে তার শক্তির অপব্যবহার করে, তখন তাঁর মত বিষময় বীভৎস জিনিষ আর কিছু নেই। এদের চেয়ে কুলীর বরং ভালে । তাও দেখেছি, ভারতবাসীর এই পরিচয় হয়েছে বিদেশীর কাছে । আমি মালয় উপদ্বীপে তেমন করে দেখ বার সময় পাইনি, কিন্তু চীনদেশে এত বড় ঘুণ। আর কোন জাতিকে করে না। শিখেরা চীনেদের টিকি ধরে লাখি মেরেছে, যা ইংরেজ কনেষ্টবলেরাও করে না। তাদেরও যেখানে মনুষ্যত্ব, দর-দক্ষিণ্য আছে, এই দাস-শিখদের ভিতর তার বিন্দুমাত্রও দেখা যায় না, সেটা আমার হৃদয়ে বিদ্ধ হয়ে আছে। এত বড় কয়ঙ্ক ভারতবাসীর নামে হয়েছে। শিখেরা যখন গুরুদ্ধারে আমাকে নিমন্ত্রণ করতে এল, তাদের বললুম, ভারতবর্ষ থেকে যার এসেছে, ঋষিদের প্রেমের ধর্ণ ও তাদের মইশ্ব প্রচার করতে যারা এসেছে, তারা ভারতবর্ষের সঙ্গে চীনকে, জাপানকে বহরকম আত্মীয়তার হুত্রে বেঁধেছে, বা জগতের ইতিহাসে পাওয়া যায় না, এমূনি করে করেছে। কোনো বাণিজ্যের শক্তি নেই, রাষ্ট্রের শক্তি নেই, তেমন করে প্রেমের বন্ধনে বাধতে পারে । একমাত্র আপনার হৃদয়ের প্রেমের প্রাচুর্ষ্যে ও ঐশ্বৰ্য্যে চীন-জাপানকে তারা জাষ্ট্রীয় করেছে, তাদের বংশীধর হ’য়ে তোমস্থা বিদ্বেষ রোপণ করে গিয়েছ। এরা চিরকাল ঘুণা করবে, ভারতবাসীর উপর বিদ্বেধ-বুদ্ধি নিয়ে থাবে, এত বড় ক্ষতি তোমরা ভারতের করলে । পূৰ্ব্ব-পুরুষদের নামে কলঙ্ক ঢেলে দিলে! আমাকে তোমাদের গুরুদ্ধারে ডেকেছ, গুরুদ্বার কিসের জন্তে, গুরু নানকের মন্ত্র প্রেমের মন্ত্র, সকলে এক ভগবানের সম্ভীন, এ-বাক্য তিনি প্রচার করেছেন। সে-বাণী যদি এখানে না বহন করে থাকে, কিসের গুরস্কার? উার বাণী বহন করতে পারলে না, শুধু দুঃখ তার বেদন দিয়ে গেলে । এর তোমাদের আপনার লোক, এসিয়াবাসী, এদের সঙ্গে যুগ-যুগাস্তুের আত্মীয়ত, সেজাষ্ট্ৰীয়তার বন্ধনকে এমন করে পীড়িত করলে, ক্ষুন্ন করলে। বলেছি, একথা তার মনে নেবে কি না, জানিনে। আমি আপনাদের কাছে দুঃখ জানাচ্ছি। দুই দিকে দুঃখ । একদিকে প্রভুশক্তি যখন দাসকে অবলম্বন করে আপনার বীভৎস মূৰ্ত্তি প্রকাশ করছে, সে এক দুঃখ, আর-এক দিকে, দাস-শক্তি যখন অভ্যস্ত হেয়ভাবে নিজ দুঃখ-দৈন্য-পীড়িত কলঙ্ককে সহনীয় বলে মনে করে, সে আর-এক দুঃখ ৷ দুই দিকে দুই অন্ধকার ভারতবর্ষ বিতরণ করছে। ভারতবাসী এই দুঃখ কখনও ভুলবে না। অামি বলেছি মালয়-উপদ্বীপে দুই দল আছে। হংকং প্রভৃতি · জায়গায় চীন-দেশীয় কুলী, সেখানে চীনেদের সঙ্গে পরিশ্রমে. শারীরিক : শক্তি-সাধ্য কাজে প্রতিযোগিতা করবার উপায় নেই। সেখানে গিয়ে কুলীগিরি করতে পারে, এমন শক্তি করে নেই। চীনেদের মত দীনভাবে কেউ থাকতে পারে না, ওদের পূর্বাপর একটা শিক্ষা আছে, সেশিক্ষা দ্বারা সাধারণ চীনবাসী একান্ত শ্রমপরায়ণ হয়। এত বড় পরিশ্রমী অার এমন কৰ্ম্মিষ্ঠ জাতি-জগতে কোথাও নেই। এইজঙ্গে আপনার জানেন অক্ষত্ৰ সবাই এণের ভয় করে । আমেরিকা প্রভৃতি জায়গায় চীনকে যেতে দেয় না, তার কারণ তাদের কাণ, চোখ, নাকের কমৃতি আছে তা নয়, তারা এমনতর কাজ করতে পারে, এত অল্প ব্যয়ে জীবন-যাত্রা নিৰ্ব্বাহ করতে পারে যে, তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা অসাধ্য। যে-কেহ চীনের ধারে গিয়েছে, হংকং, সাংহাই প্রভৃতি জায়গায় যে গিয়েছে, সে জানে এই-রকম অসীমানা—প্রায় মানুষের শক্তির অতীত-নিয়ত কাজ করবার অভ্যাস বহুযুগ থেকে চীন-দেশীয় লোকের অর্জন করেছে। এটা আশ্চৰ্য্য ব্যাপার, প্রথমে মনে হয় ; এটা মস্ত একটা জাতীয় সম্পদ, তার পর কিন্তু মনে সন্দেহ হয়, এটা দেখা গিয়েছে যে, যখন কোন জাতি আপনার কোন-একটা বিশেষত্বকে অতিমাত্রায় প্রবল করে, তখন সে তার ভিতর একটা সামঞ্জস্তের অভাব সৃষ্টি করে। যেমন কয়লার খনি কিংবা কেরোসিন তেলের খনিতে মানুষ ঝুকে পড়ে তার কারণ তার মধ্যে যে স্বাভাবিক শক্তি নিহিত আছে, সেট কাজে লাগে। চীনে দেশ-বিদেশ থেকে লোকে যাচ্ছে কেন ? তার