পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

సెళ এক বৃহৎ ছাতা মাথায় ধরিয়া লইয়া যায়। ছাতার উদেহু বর্ষ ৰ রৌদ্র হইতে রক্ষণ করা নহে। তাহার উদ্দেশ্য যে যদি কেহু পাশের উচ্চ ছাদে দোতালা তেতালায় থাকে, সে যেন ঐ রমণীকে দেখিতে না পায়। নদূত্রী রমণীমাত্রকেই এই নিয়ম পালন করিতে হয়। অপেক্ষাকৃত নিধনদেরও এইরূপে পথ হঁটিতে হয়। বিবাহের সময় বপন নম্বুগ্ৰী বর বিবাহ-স্থানে আসিয়া দাড়ায়, তখন ভাবী শাশুড়ীর বরণ করা নিয়ম ; কিন্তু ভাবী শাশুড়ী জামাত। অথবা অন্য পুরুষের সম্মুগে ঐরুপ চাদরাবৃত না হইয়। বাহির হইতে পারেন না। অতএব একজন সন্ধান্ত নায়ররমণীকে আপনার প্রতিমিধি নিযুক্ত করেন ও তাঁহাকে পাঠাইয় দেন। সে বিবাহের সময়ে শাশুড়ীর প্রতিনিধিরূপে বরণ আশীৰ্ব্বাদ ইত্যাদি সকল ক্লত্য করে। এই নিয়মে বেশ বুঝিতে পারা যায় যে প্রাচীন বৈদিক কালে সন্ধান্ত বংশে অবরোধের কঠোরতা বড় অল্প ছিল না। তবে, সাধারণ অব্রাহ্মণ বংশে--এমন কি সম্মানিত ক্ষত্রিয় নায়র ংশেও—অবরোধ-প্রথা ছিল না, এবং এখনও নাই । অনেকের ধারণ মুসলমানদের মধ্যে অবরোধ-প্রথা অতি কঠোর ও তাহারাষ্ট ভারতে এ প্রথা আনিয়াছেন । উপরোক্ত আলোচনাতে বেশ জানা যায় যে তাহার এ প্রথার প্রবর্তক নহেন, তাঙ্গাদের ভারতে আগমনের পূৰ্ব্বেই, এমন কি ইসলাম ধৰ্ম্ম স্থাপিত হইবার বহু পূৰ্ব্বে ভারতে এ প্রথা ছিল। মুসলমুনি, সমাজে, স্থান-বিশেষে, অবরোধ-প্রথা কঠোর বা শিথিল হইতে পারে, কিন্তু তাহার সহিত ইসলাম ধর্মের কোনও সংশ্ৰব নাই। মুসলমান ধৰ্ম্মে অবরোধ বা পদৰ্ণ সম্বন্ধে এইমাত্র ঈশ্বরাজ আছে .যে “স্ত্রীলোকেরা আপনার শরীর এরূপ আবৃত করিয়া বস্ত্র ধারণ করিবে যে অনাবৃত দেহ সাধারণ পুরুষের চক্ষে মা পড়ে।” সেইজন্য আরব ইরাণ মিশর তুর্কি কাবুল ইত্যাদি মুসলমানদের দেশে বোর্কার প্রচলন হইয়াছে। বোস্তৃক পরিয়া কুলকামিনীরা পথে ঘাটে হাটে মাঠে যেখানে ইচ্ছা যাইতে পারেন, সকলের সহিত প্রয়োজনমত কথা বলিতে পারেন, গৃহাগত অতিথির সংকার করিতে পারেন, সাধারণ মসজিদে উপাসনা করিতে পারেন। ভারতে, দক্ষিণ-হায়জাবাল সৰ্ব্বাপেক্ষ বড় মুসল প্রবাসী-বৈশাখ, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ,১ম খণ্ড । মান রাজ্যের রাজধানী। সেখানকার প্রধান মসজিদে—মক্কা, মসজিদে-কতক অংশ লোহার তারের বেড়া দিয়া ঘেরা ; তাহার মধ্যে স্ত্রী-উপাসিকার নমাজ পাঠ করিয়া থাকেন। শুক্রবারে অথবা কোনও ঈদের নমাজের সময়ে স্ত্রী ও পুরুষ উপাসক উপাসিক একই ইমামের পশ্চাতে দাড়াইয়া একসঙ্গে নমাজ পাঠ করে। কেবল পুরুষের দালানের এক দিকে ও স্ত্রীর অন্যদিকে বোবৃক পরিয়া দাড়ায়। ভারতে আসিবার পূৰ্ব্বে যে সম্বান্ত মুসলমান মহিলারা এইরূপে ইচ্ছামত বোরক পরিয়া বন্ধু-বান্ধবদের বাটতে যাতায়াত করিত, তাহারাই এখানে আসিয়া দেখিল সন্ধান্ত হিন্দু মহিলার শ্ববরোধে বাস করেন, তাহদের পক্ষে পথে ঘাটে হাট। নিন্দনীয়। অতএব তাহারাও হিন্দুদের দেখাদেখি অন্ত:পুরবাসিনী হইলেন। এরূপ না করিলে তাহীদের সম্মান থাকে না। ক্রমে হিন্দুর মুসলমানদের অত্যাচারে ভয়ে অবরোধ-প্রথা কঠোর হইতে কঠোরতর করিতে বাধ্য হইলেন। মুসলমানেরাও সম্মান রক্ষার জন্য কঠোরতর নিয়মে আবদ্ধ হইলেন । এই অবরোধ প্রথা এখন স্থান-বিশেষে এমন কঠোর রূপ ধারণ করিয়াছে যে ন। দেখিলে বিশ্বাস করা কঠিন। ভারতবর্ষের বৃহত্তম মুসলমান রাজ্যের রাজধানী হায়দ্রাবাদ মুসী নামে একটি ক্ষুদ্র নদীর উভয় তীরে অবস্থিত। ( প্রাচীন নাম মুচকন্দ নদী। মুসলমানের দুইটি পাশাপাশি নদীর নাম মুলী ও ঈসী রাখিয়াছিল। . হায়দ্রাবাদ নগর হইতে ৪/৫ মাইল দূরে এই দুই নদী সম্মিলিত হইয়াছে ) গত ১৯০৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষে হঠাৎ একদিন রাত্রি দ্বিপ্রহরের সমুয়ে এই নদীর জল বাড়িতে আরম্ভ হয় ও ৪,৫ ঘন্টার মধ্যে ৪• ফুট জল বাড়িয়া ওঠে । তাহাতে সহস্ৰ সহক্স গৃহ ভূমিসাৎ হয় ও বহু অধিবাসী জীবন-হারায় । সেই রাত্রে একজন ভদ্র মুসলমান গৃহস্থ আপনার ভগ্নী ও স্ত্রীকে পলাইবার জন্য প্রস্তুত হইতে বলিয়া একখানি গাড়ী খুজিতে গৃহত্যাগ করেন। তখন সকলেই আপন আপন প্রাণ লইয়া গলাইতেছে । তিনি অনেক অনুসন্ধান করিয়াও কোনওপ্রকার গাড়ী পাইলেন না। যে নগরের মূলজিদে স্ত্রীপুরুষের এক পংক্তিতে দাড়াইয়া উপাসনা করে সে নগরে অৰ্দ্ধরাত্রেও কুলকামিনীদের হঁাটিয়া পথে বাহির হওয়া