পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জৈন সাথী হইয়াছিলেন। যখন বৈশালীর মত প্রবল রাজ্যের রাজকন্তার এরূপে হরণ সম্ভব ছিল, তখন সম্রাস্ত কুলকামিনীদের অবরোধে আবদ্ধ রাখা ছাড়া অার উপায় ছিল না । কুলকামিনীদের সন্ত্রম রক্ষা করিবার জন্যই এ প্রথার প্রচলন হইয়াছিল। উত্তর-ভারতের পশ্চিমাংশে অর্থাং পঞ্চাবে মুসল মানের ১০২৩ খৃষ্টাব্দে রাজ্য স্থাপন করিয়াছিল ও ইহার * প্রায় তিন শুত বৎসর পরে দক্ষিণে প্রবেশ করিয়াছিল। সৰ্ব্বপ্রথমে আলাওউদ্দীন খিলজী আপন বৃদ্ধ খুল্লতাত্ত জলালউদ্দীন ফিরোজ খিলজীর সেনাপতিরূপে দাক্ষিণাত্যের দূেরগিরি [ আধুনিক দণ্ডলতাবাদ—অওরঙ্গাবাদের নিকট । আক্রমণ ( ১২৯৫ খৃ: ) করিয়াছিলেন ও পরে বৃদ্ধকে পুত্র সঙ্গ যমালয়ে প্রেরণ করিয়া যখন স্বয়ং সম্রাটু হইয়া বসিলেন তথন আপনার সেনাপতিকে দক্ষিণে লুট করিতে পাঠাইয়ছিলেন। ইহার পর দক্ষিণাত্যে মুসলমানদের রাজ্য স্থাপিত হইয়াছিল বটে কিন্তু সমস্ত দক্ষিণ-ভারতে মুসলমানদের আধিপত্য কোন কালেই হয় নাই । দক্ষিণভারতে এমন অনেক দেশ আছে যেখানে কখনও অহিন্দু আধিপত্য হয় নাই—যেমন আধুনিক ত্রিবাঙ্কর দেশ । এদেশ এখন বিদেশী ইংরেজের অধীনতা স্বীকার করিয়াছে বটে কিন্তু সাক্ষাং শাসনকৰ্ত্ত এখনও হিন্দু বৈষ্ণব। পূৰ্ব্বে কপনও এখানে অহিন্দু সভ্যতার প্রভাব বিস্তৃত হয় নাই । এ দেশের শ্ৰেষ্ঠ ব্রাহ্মণ নয়ূন্ত্রী। ইহার কোনও কালে অহিন্দুর শাসনে বাস করে নাই। বৈদিক কালে নঘূত্রীদের যে-সকলু সামাজিক নিয়ম ছিল তাহ বোধ হয় এখনও প্রচলিত আছে, অতি অল্পই পরিবর্তন হইয়াছে। ভারতের অস্তান্ত গ্রদৈশে ব্রাহ্মণ-কুমারের পৈতা ধারণ করিবার সময়ে নাম মাত্র ২৪ দিবস ব্রহ্মচৰ্য্য অবলম্বন করে, নিভৃতে বসিয়া ফলাহার করে ও বড় জোর সন্ধ্যা-আহ্নিকের মন্ত্র মুখস্থ করে ; তাহার পর দগুটি জলে ভাসাইয়া সংসারী হয়। কিন্তু নম্বুজী ব্রাহ্মণ-কুমার ব্রহ্মচৰ্য্য ধারণ করিয়া ঘরে আবদ্ধ থাকে না । সে গৈরিক বসন পরিয়া দণ্ড ধারণ করিয়া গুরুগৃহে গিয়া বেদ অধ্যয়ন করে। গুরু শিষ্য এক-গ্রামবাসী হইলে কখন কৃথন লুকাইয়ু গৃহে আসে বটে, কিন্তু গুরু ভিন্ন-বা দূর-গ্রামবাসী হইলে সেরূপ সুযোগ }\} অবরোধ-প্রখা సిగి হয় নL ব্রহ্মচারী ৫।৭৯ বা ১১ বৎসর গুরুগৃহে বাস করিয়া পাঠ সমাপন করে । এই দীর্ঘকাল সে ব্রহ্মচারীর কঠোর নিয়মগুলি পালন করে । যাহার মেধাবী তাহার এই অবসরে বিদ্বান বলিয়া পরিচিত হয়, কিন্তু যাহাদের মেধা নাই তাহদের অন্ততঃ তিন বৎসর গুরুগৃহে থাকিয়া নিত্যকৰ্ম্মগুলি শিক্ষা করিতে হয় । শিক্ষা সমাপ্ত হইলে গুরুর অল্পমতি লইয়। শুভদিনে আবার এক যজ্ঞ করিয়া ব্রহ্মচারীর বেশ ও দণ্ডটি গুরুর হস্তে প্রত্যপণ করিয়৷ সাধ্যমত গুরু-দক্ষিণ দিয়া সংসারে প্রবেশ করিবার অল্পমতি গ্রহণ করে । এইরূপে গৃহে ফিরিয়া সুবিধ-মত বিবাহ করে । তাহাদের বিবাহে প্রাচীন বৈদিক কালের পদ্ধতি এখনও প্রচলিত। এই নম্বুগ্ৰী ব্রাহ্মণদের কেবল জ্যেষ্ঠ পুত্র উত্তরাধিকার লাভ করে, অন্য পুত্রের যাবৎজীবন ভরণ-পোষণের অধিকার মাত্র পাইয় থাকে । প্রত্যেক বংশে কেবল জ্যেষ্ঠ পুত্র ব্রাহ্মণ কন্যা-বিবাহ করিয়৷ বংশ রক্ষা করে। অন্য পুত্রের ক্ষত্রিয় নায়র-কন্যার সহিত “সম্বন্ধম্" ( বিবাহ ) করে। ঐ নায়র-কন্যার গর্ভজাত সন্তানের নায়র হয়। তাহাদের পিতা ব্রাহ্মণ-কুমার বলিয়। তাঙ্গদের সম্মান ও নাই, অসম্মান ও নাই । জ্যেষ্ঠ পুত্র অপুত্ৰক হইলে বা পুত্র-জন্মের পূৰ্ব্বেই স্বর্গ লাভ করিলে দ্বিতীয় পুত্র ব্রাহ্মণ-কন্য। বিবাহ করিয়া বংশ রক্ষা করে । তাহার যদি নায়র পত্নী ও তাহার গর্তজাত সন্তানাদি থাকে তবে তাহারাও সংসারে স্থান লাভ করে, কিন্তু তাঙ্গারা নায়র, অতএব তাহাদের দ্বারা বংশ রক্ষ হয় না। বংশ রক্ষার জন্য ব্রাহ্মণ-কুমারীর গর্ভজাত পুত্র-সন্তান হওয়া প্রয়োজনীয়। এই নিয়মে ব্রাহ্মণ-পরিবারের সখ্য বুদ্ধি হয় না,বরং অকাল-মৃত্যুতে কমিবার সম্ভাবনা । এই নম্বন্দ্রী ব্রাহ্মণ-মধ্যে অবরোধ-প্রথা অতি কঠোর।' কোনও নমুদ্রী ব্রাহ্মণীকে, যে-কোনও কারণে, পথে হঁাটিতে হইলে একপানি মোট সাদ চাদর দিয়া আপনার আপাদমস্তক এমন করিয়া ঢাকিতে বা জড়াইতে হয় যে পায়ের তলা হইতে মাথার চুল পৰ্য্যস্ত কোনও অংশ কাহারও দৃষ্টিগোচর হইতে পারে না। এরূপ জড়াইলে তাহার স্বাধীনভাবে ছাটিবার ক্ষমতা থাকে না। অতএব এক সম্রাস্ত নায়র-রমণী,তাহার হাত ধরিয়া ও অন্য হাতে