পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] • ছয়টির মধ্যে যেটি শ্রেষ্ঠ, তাহাকেই মুখ্যভাবে আত্মা বলা হইত। প্রত্যেক আচার্ধ্যেরই বলিবার উদেশ্ব ছিল “আত্মাই ব্রহ্ম।” “আত্মা কি ?”—এই বিষয়ে মতভেদ . হওয়াতেই কেহ বলিয়াছেন ‘বাকৃই ব্ৰহ্ম’, কেহ বলিয়াছেন “প্রাণই ব্ৰহ্ম’, কেহ চক্ষু ইত্যাদি অপর কাহাকেও ব্রহ্ম বলিয়াছেন। g যাজ্ঞবল্ক্য ইহার কোন মতকেই অসত্য বলিয়া অগ্রাহ করেন নাই। তিনি বলিয়াছেন—সাধারণভাবে এ সমৃদ্ৰায় •মতই আংশিকৰূপে সত্য। মানুষ দেশ-কাল লইয়াই থাকে এবং দেশ-কালের সাহায্যেই চিন্তা করিয়া থাকে। কিন্তু আত্মা বা ব্ৰহ্ম পারমার্থিকভাবে দেশ-কালের অতীত। কিন্তু লৌকিকভাবে আমরা বলিতে পারি তিনি দেশ-কালেও প্রকাশিত। র্তাহার এই প্রকাশ বুঝিতে হইলে বাকৃ প্রভৃতি ইন্দ্রিয়ের সাহায্যেই তাহ বুঝিতে হইবে ।-ইহাই যাজ্ঞবন্ধ্যের মত। তিনি এ-বিষয়ে যাহা বলিয়াছেন, তাহার সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা এই – (क) ব্ৰহ্ম প্রজ্ঞাস্বরূপ, ইহা বাক্ দ্বারাই অবগত হওয়া যায় ; কারণ বেদাদি শাস্ত্র এবং যজ্ঞাদি সমুদায়ই বাঙ্ময় । (*) ব্ৰহ্ম প্রিয়, ইহা প্রাণের সাহায্যেই অবগত হওয়া যায়। প্রাণ মাতুষের কত প্রিয় ! মানুষ প্রাণের জন্য কি না করে ? ( 히 ) ব্ৰহ্ম সত্যস্বরূপ, ইহা চক্ষু দ্বারা জানা যায় । কারণ, লোকে চক্ষু দ্বায়া যাহা দেখে তাহাই সত্য বলিয়া মনে করে । ( & ) ব্ৰহ্ম অনন্ত-স্বরূপ—ইহা শ্রোত্রের সাহায্যে জানা যায় । কারণ লোকে দিকসমূহের সাহায্যেই শ্রবণ করিয়া থাকে এবং এই দিকসমূহ অনন্তপ্রসারিত। (西) ব্ৰহ্ম আনন্দ-স্বরূপ—ইহা মন দ্বারাই অমুভব করা যায় । মন না থাকিলে কাম্য বস্তু কামনাও করা যায় না এবং ভোগও করা যায় না । ব্ৰহ্মবাদ Σ&ά ( 5) @ ব্ৰহ্ম স্থিতি-স্বরূপ--ইহা হৃদয় দ্বারাই অনুভব করা যায়। কারণ হৃদয়েই সমুদায় ভূত প্রতিষ্ঠিত । যাজ্ঞবল্ক্য আরও বলিয়াছেন যে বাঙ্ময় ব্রহ্ম, প্রাণময় ব্ৰহ্মাদি দেশের আশ্রিত। ইহাদিগের প্রত্যেকেরই আশ্রয়স্থল আকাশ। স্বতরাং দেখা যাইতেছে যে আমরা বাকু ইত্যাদিকে জানিতে গিয়া দেশাতীত কোন সত্য জানিতে পারিতেছি না। কিন্তু আত্মা বা ব্ৰহ্ম দেশের অতীত। লৌকিকভাবে বাকু ইত্যাদিকে ব্রহ্ম বলা যাইতে পারে কিন্তু পারমার্থিকভাবে ইহার ব্রহ্ম নহে । প্রকৃত তত্ত্ব ইহার পরে যাজ্ঞবল্ক্য ব্রহ্মের প্রকৃত তত্ত্ব ব্যাখ্যা করিতে গিয়া একটি অসম্ভব ঘটনা কল্পনা করিয়াছেন। তাহার বর্ণনা এই – মানুষের দক্ষিণ চক্ষুতে একটি পুরুষ দৃষ্ট হয় এবং বাম চক্ষুতেও অপর একটি পুরুষ দৃষ্টিগোচর হয়। শরীরের অভ্যন্তরে হৃদয়াকাশে ইহারা পরস্পর সম্মিলিত হইয়া থাকে। এই সম্মিলিত অবস্থাই “আত্মা” । এই বর্ণনা নিতান্তই মন:কল্পিত। কিন্তু ইহা হইতে ঋষির মনোমত ভাব বুঝা যাইতেছে। আমরা আমাদের ভাষায় ঋষির অভিপ্রায় এইভাবে বর্ণনা করিতে পারি ৪— আত্মা যেন কুর্শ্বের ন্যায় নিজ অঙ্গকে প্রতিসংহরণ করিয়া হৃদয়াকাশে বর্তমান রহিয়াছেন । সেই স্থল হইতে আত্মা যেন নিজের দুইটি শুধকে চক্ষু পৰ্য্যন্ত প্রসারিত করিয়া দেন। আত্মা এইভাবে চক্ষুতে প্রতিষ্ঠিত হইয়া সমুদায় কাৰ্য সম্পন্ন করেন। ইহার পরে ঋমি যাহা বলিয়াছেন তাঙ্গর অর্থ এই – এই চক্ষুদ্বয় হইতে আত্মান প্রাণসমূহ সৰ্ব্বত্র বিস্তৃত হইয়াছে। উত্তর দক্ষিণ পূৰ্ব্ব পশ্চিম উৰ্দ্ধ অধঃ– এ সমুদায়ই আত্মার প্রাণ। প্রাণই প্রসারিত হইয়া এই-সমুদায় দিক-রূপে প্রকাশিত হইয়াছে। এই যে অনন্তবিস্তৃত আকাশ; ইহা আত্মারই প্ৰাণ । কিন্তু ইহা ঋধির শেষ কথা নহে। তিনি পরে যাহা