পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] SSAAAA SAS A SAS SSAS SSAS SSAS SSASAS SS SS না ভেবে অন্য কথা ভাবি । কখনও কখনও বা দেশের ভাবনায় এমন তন্ময় হ’য়ে যাই যে তার অস্তিত্বও মনে থাকে না । তাই বলে যে তাকে "ভূলে গিয়েছিলাম কিম্ব ভালবাস্তাম না তা নয়, কিন্তু আগের মতন কেবল তার চিন্তাতেই ভরপুর হয়ে থাকৃতাম না। আগে যেমন রাতদিন তার কথাই ভাব তাম, প্রতিদিন সকালে কাগজ খুলেই মেল ডে'র খবর নিতাম, আজকাল ততটা করিনো বটে, কিন্তু তবু খুবই ভালবাসি তাকে—নানান কাজের মধ্যেও তাকে ভাবতে বড় ভাল লাগে। 'ছোটমামা অনেক সময় বলতেন—“বিয়ে করলে মেয়েরা কিছু করে না। তোমরা বিয়ে না করে’ দেশের কাজ করে।” সেই-সব শুনে মাঝে মাঝে ভাব তাম যে বিয়ে করব না। কিন্তু আবার যখনই কল্পনা করতাম যে তার সঙ্গে আমার সব সম্বন্ধ ঘুচে গেছে, তিনি অন্য কাকে বিয়ে করেছেন, তখনই অসহ বেদনায় বুক ভরে’ উঠত। অথচ দেশের জন্য সৰ্ব্বত্যাগী হ’য়ে কিছু করবার চিন্তাও আমাকে মাতিয়ে তুলত—রাজনীতিচর্চায় কেমন যেন মাদকতা আছে। মাঝে মাঝে ওঁকে লিথ তাম—“বড় ইচ্ছে করে দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করি। বিয়ে করলে মানুষ নিজের ও সংসারের কথা নিয়ে ভুলে থাকে। তাই ভাবি নিজের মুখ ছেড়ে দেশের কাজ করাই উচিত । তোমাকে ভালবাসি না বলে’ একথা লিখছি ভেবো ন!—খুবই ভালবাসি—কিন্তু তবু মনে হয় প্রেয় ছেড়ে শ্রেয়কেই বরণ করা উচিত।” উনি কত দুঃখ ক্ষরে কত বুঝিয়ে লিখতেন—“সংসার করাই মেয়েদের প্রধান ও প্রথম কৰ্ত্তব্য। স্যানার্কিষ্ট হওয়া মেয়েদের ...বিশেষতঃ বাঙ্গালী মেয়েদের—মোটেই সাজে না । তুমি যাদের পরামর্শে মেতে উঠেছ কোনদিন হয়ত দেখবে যে তোমাকে অকুলপাথারে ভাসিয়ে তার সরে’ পড়েছে, কিম্বা সকলেই পুলিসের হাতে ধরা পড়েছে—সেটা কি ভালো হবে ?” কিন্তু শেষাশেষি বিরক্ত হ’য়ে লিখতেন--- “যদি বিয়ে না করে বেশী মুখী হও তা হলে বিয়ে নাই বা করলে ? দয়া করে আমাকে বিয়ে কর্বুবার কোনোই দরকার নেই।” ক্রমে তার চিঠি ছোট হয়ে আসতে লাগল। কত আশায় তার চিঠি খুলতাম, কিন্তু যখন মরীচিকা ১৮৩ দেখতাম ২৪ লাইন কিম্বা বড় জোর ১২ পাতা চিঠি, তখন চোখের জল সাম্লাতে পাবৃতাম না। বেশ বুঝতে পেরেছিলাম যে তিনি আমার প্রতি উদাসীন হয়ে দূরে সরে যাচ্ছেন। চিরজীবনের মতন তার কাছ থেকে বিদায় নিয়েছি, তার উপর আর আমার কোনও অধিকার নেই—একথা ভেবে চোখের জলে ভাস্তাম, অথচ দেশের জন্য সৰ্ব্বস্ব ত্যাগ করেছি মনে করে ও কেমন একটা শাস্তি পেতাম। স্বতরাং আমি দোটানায় পড়ে হাবুডুবু খাচ্ছিলাম। নিভাকে সব বলতাম। সে কখনও বলত— “তুই বিয়ে করু, তা না হ’লে সারাজীবন কেঁদে মর্বি।” আবার কখনও বা বলত—“না ভাই, বিয়ে করিসূনে, আমরা দুজনে মিলে’ দেশের কাজ করব।” 强 বছর খানেক পরে খবর পেলাম উনি পরীক্ষায় পাশ * করেছেন, সরকারী চাকুরী নিয়ে আসবেন। শেষকালে গবর্ণমেণ্ট, সার্ভেণ্টের স্ত্রী হ’তে হবে ভেবে মনটা বড় সঙ্কুচিত হ’য়ে গেল। কিন্তু হঠাৎ ভগবান আমাকে এমন দুঃখ দিলেন যে তার তুলনায় সব ভাবনাই তুচ্ছ হয়ে উঠল। আমাকে সংসারে অনাথ করে’ বাব চলে’ গেলেন । এই সাংঘাতিক শোকে আমি পাগলের মতন হ’য়ে গেলাম। বাবার এক খুড়তুত ভাই ছাড়া আর কেহ ছিল না— তিনিই আমার অভিভাবক হলেন । এদিকের কাজকৰ্ম্ম সব নিম্পত্তি হ’লে আমি কাকাবাবুর সঙ্গে তাদের বাড়ী গেলাম। পিসীম৷ কাশীবাসিনী হলেন । কাকাবাবুর বাড়ীতে র্তার স্ত্রী ও একটি ছেলে ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। তারা আমাকে খুবই যত্ব করতেন। কিন্তু আজন্মের ঘরবাড়ী ও পিতৃস্নেহ হ’তে বঞ্চিত হ’য়ে একেবারে মুষড়ে গিয়েছিলাম। বাবা পরেশদা’কে (কাকাবাবুর ছেলে ) পড়বার জন্য জাৰ্ম্মানী পাঠিয়েছিলেন। সে কিছুদিন আগে সমস্ত ইউরোপ ঘুরে দেশে ফিরে এসেছে । সে আমাকে দেশ-বিদেশের কথা বলে’ প্রফুল্ল করতে চেষ্টা করত। পরেশদার অসাধারণ বর্ণনা করবার শক্তি ছিল । সেজন্য তার মূপে নানান দেশের নানান গল্প শুনতে বড়ই ভাল লাগত। , পরেশদাদা আমাকে প্রায়ই বলত—“পে উমা, এমন জীবন্ত হয়ে থাকিসনে। আমাদের দেশে অনেক