পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

వీసితి একে অন্যকে পাইলে পাইবার আকাজক্ষাট নিবিয়া যাইবে ও সেই সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত ভালবাসাও উবিয়া যাইবে । বেণু এলাহাবাদে চলিয়া গেল। প্রত্যহ ডাকে আমাদের চিঠি চলিত। আমি তাহার কাছে যত চিঠি লিখিতাম সবই অল্পযোগ ও কাতর অনুনয়ে ভরা। তাহার আশা আমি এক মুহূৰ্ত্তের জন্যও ছাড়িতে পারি নাই । হঠাৎ বাড়ী হইতে সংবাদ আসিল, পিতা পীড়িত আমাকে এখনই বাড়ী যাইতে পঃ- । বাড়ী আসিয়৷ দেখিলাম যে পিতার অবস্থা খুবই খারাপ, মৃতু্য প্রায় তাহার শিয়ূরে আসিয়া পৌছিয়াছে মাস ; গিব। পিত ভালে ইষ্টলেন । এই পুষ্ট মাস এত ব্যস্ত ছিলাম যে ভালে। করিয়৷ নিশ্বাসটুকু ফেলিব। র ৪ আমার আ৭লর হয় নাই । বেণুর কাছেও কোন চিঠি লিখিতে পুরি নাই। মুক্তি পাইয়াই কলিকতাঘ ছুটিলাম % সেখানে যাইয়া শুনিলাম যে আমার নামে কতকগুলি পত্র জাসিয়াছিল কিন্তু মেসের ছেলের সেগুলি হারাইয়া ফেলিয়াছে । রাগে সমস্ত শরীর জলিতে লাগিল । বেণুর কাছে পত্র লিপিলাম, কোন উত্তর আসিল না। টেলিগ্রাম করিলাম, তাহাও ফেরৎ আসিল । সেদিনই সে যে-কলেজে চাকরী করিত তাহার মধ্যঙ্গের কাছে টেলিগ্রাম করিলাম, উত্তর আসিল নে বেণু দে ছমাস হুইল আর-একটা ভাল চাকুরী পাইয়। এলাহাবাদ ছাড়িয়া কোথায় চলিয়া গিয়াছে তাঙ্গ তিনি জানেন না । কপালে করাঘাত করিতে লাগিলাম। ১াঘরে ! বেণুর চিঠির সঙ্গে-সঙ্গে যে আমার জীবনের সমস্ত মুখ আমাকে ত্যাগ করিয়াছে । চার তার পর আজ পর্য্যস্ত বেণুর কোন সংবাদ পাই নাই । চিরদিনের তরে সে আমার চোখে লুপ্ত হইয়া গিয়াছে। তাই আজ হঠাৎ সে-নামটা চোখে পড়ায় অতীত স্মৃতি বুকের ভিতর এই আলোড়ন তুলিয়া দিয়াছে । জীবনে আমি অনেক ধাপ উঠিয়াছি, আমার সুখ-সম্পদ সবাই ঈর্ষ্যার চোখে দেখিয়া থাকে। স্বন্দর বড় ঘরের মেয়ে আমার স্ত্রী, আমার কন্যারা কলিকাত সমাজে প্রবাসী—জ্যৈষ্ঠ, "రిల) - [ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড শিক্ষায় ও সৌন্দর্ষ্যে নামজাদা। অর্থেরও আমার অভাব নাই, গাড়ী-ঘোড়া, মোটর সবই আমার ইয়াছে, আমার স্ত্রী পরিবার সবাই বছরে ছয় মাস দার্জিলিং, পুরী ইত্যাদি স্থানে থাকিয়া আসিতে পারে। চারিদিক্‌ হইতে প্রাচুর্ধ্য আমাকে বেড়িয়া ধরিয়াছে, অভাব আমার কিছুরই নাই এক মাত্র বিশ্রাম ছাড়া । কাজ, কেবল কাজ । ইচ্ছা করিলে ইহার কতক ছাড়িয়া আমি যে তাহার পরিবর্তে বিশ্রাম বাছিয়া লইতে পারি না তাহ। নহে, কিন্তু কাজের নেশা আমাকে পাইয়া বসিয়াছিল, কাজ ছাড়া আমি একদণ্ড চপ করিয়া বসিয়া থাকিতে পারি, sাম না । জীবন-সং গ্রামে ঢুকিয়| আজিকার মতন এতক্ষণ পিন-কাজে আমি কোন দিন বসিয়ু থাকি নাই । যে ছিল আমার জীবনের একমাত্র সম্বল, বাহির ছাড়। "ইয়। ধধিব৷র আমার কিছুই যে ছিল না ; আমার অন্তরটা যে বেণু চিরদিনের জন্য শূন্য করিয়া দিয়া গিয়াছিল । ঢং করিয়া ঘড়িতে একটা বাজিল তাড়াতাড়ি উঠিয়া পড়িলাম। 夢 磷 強 薔 শত চেষ্টায় ও কেস্ট ভাল করিয়া করিতে পারিলাম না । কৰ্ত্তব্য-হানির জন্য বিবেক আমাকে খোচা দিতেছিল কিন্তু কি করিব মানুষের সাধ্যেরও ত একটা সীমা আছে । মোকদ্দমীর দিন কোর্টে যাইতে আমার প{ সরিতেছিল ন—যদি সেখানে যাইয়া দেখি এ বেণু সে-ই ? তবে ? আর ভাবিতে পারিলাম না, কোনমতে মনটাকে , দমাইয়৷ মোটরে উঠিলাম। কোর্ট-রূমে ঢোকামাত্রই সবাই আমার মত্তি দেখিয়া অবাক হইয়া গেল। সবার মুখেই এক প্রশ্ন—আমার কোন অস্থখ হয় নাই ত ? একেই মন উদ্বেলিত, তাহার উপর এইসব প্রশ্ন আমাকে অতিষ্ঠ করিয়া তুলিল । বিচারক আসিয়া এজলাসে বসিবার পরই আসামীদের আনা হইল। নিমেষে আমার সমস্ত শরীর শিহরিয়া উঠিল, আমার সর্বাঙ্গ বেতস-লতার মতন কঁাপিতে লাগিল। সেই মুখ, বয়সের দাগ পড়িলেও সেই-ই। সে কি তুলিবার ! এ যে চিরদিন অন্তরের ভিতর গভীর খাদ কাটিয়া রহিয়াছে। বেণু তেমনি আছে, তেমনিই স্বন্দর ও দীপ্ত তাহীর |