পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেবতা-তত্ত্ব পরব্রহ্ম বা স্বষ্টিকৰ্ত্ত পরমেশ্বরেব পরই দেবতা বা দেবগণ আমাদিগের আরাধ্য বস্তু । কহে ? দেবতা কাহাকে কহে, ইহা লইয়া একালের ও সেকালের আর্য্যগণ অনেকেই অনেক কথা বলিয়া গিয়াছেন ও বলিতেছেন, কিন্তু একমাত্র শতপথ-ব্রাহ্মণ ও মঙ্গর্ষি জৈমিনি ভিন্ন অন্য কাহারই কথা প্রকৃত নষ্ঠে । বায়ু-পুবাণ বলিছেন যে— ততো মুখে সমূৎপন্না দীব্যস্তস্তস্য দেবত: । যতোহস্ত দীবাতো জাতাস তেন দেবাং প্রকীৰ্ত্তিতাঃ ॥ দেবতা কাঠাকে ৮–৯ অ সেই কুষ্টিকৰ্ত্ত আত্মতৃ ব্ৰহ্মা যখন ক্রীড করিতেছিলেন, তখন র্তাহার মুখ হইতে যাহারা উৎপন্ন শুন, র্তাহাদিগের নামই দেবতা । কিন্তু বেদে দেবগণের জন্ম প্রভুক্তির সে বিবরণ রহিয়াছে, ভগবান মন্ত দেবগণের উৎপত্তি-বিষয়ে যাহা যাহা বলিয়াছেন, তাহাতে জানা যায় মে, বায়ু পুরাণের এই উক্তি সম্পূর্ণ ই অযৌক্তিক । কাগবও মুখ, নাসিক, বক্ষ, জাঙ্ক, বা পদাঙ্গুষ্ঠাদি ইঃ তে কাহারও কোন ও জন্ম প্রভবাদি হয় নাই ও হইতে পারে না, ই বেদ যুক্তি বিরুদ্ধ কথা । কেহ কেহ বলিয়া থাকেন যে, দেবগণ, মহুযুগণ হষ্টতে উচ্চশ্রেণীর জীব ও তাহাদিগের মধ্যে একটি স্বতন্ত্র তেজ বা জ্যোতি আছে বলিয় তাহাদিগের ইত্তে আমাদিগের এত স্বাতন্ত্র্য ও হীনতা । কিন্তু র্যাচার প্রকৃত পক্ষে শাস্ত্র অধ্যয়ন করিয়াছেন, তাহারা কখনই "দেবগণ কোনও শ্রেষ্ঠ প্রাণী” ইহা নির্দেশ করিবেন না এবং তাহাদিগের মধ্যে নর-স্থলভ গুণদোষাদির সত্তা ভিন্ন যে একটা বিশেষ কোন জ্যোতিঃ বা তেজ:-পদার্থ ছিল, তাহাও নহৈ । আমরা দেখাইব র্তাহারা ও আমরা একই এবং তাহাদিগের ও আমাদিগের ஆழ் কাৰ্য্যক্ষেত্রও একই ছিল । আমরা প্রমাদে পড়িয়া নর ও জ্ঞাতি র্তাহাদের উপাসনা করিয়াছি ও এখনও না করিতেছি তাহা নহে, দেবতারা উপাস্ত ও পারলৌকিক বস্তু, আমরা উপাসক ও ঐহিক জীব, একথা সত্য নহে । আমির মানুষ ব্রাহ্মণদিগকেও দেবতা বলিয়া থাকি । দেবাধীনং জগৎ-সৰ্ব্বং মন্ত্রাধীনাস্তু দেবতা: | তে মন্ত্র ব্রাহ্মণৈর জ্ঞাতাস ভস্মাং ব্রাহ্মণো দেবতা ৷ কিন্তু এই উপরিধত বচনে, ব্রাহ্মণের। তাছাদের দেবত্বের যে নিকাশ দিতেছেন, ইহা সম্পূর্ণ বেদ-বিরুদ্ধ অলীক উক্তি। সকল জগৎ দেবাধীন, ইহা মিথ্যা কথা । তাহা হইলে দৈত্য দানব ও অস্বরেরা দেবতাদিগকে স্বৰ্গ-ভ্রষ্ট করিয়া কেন তাড়াইয়া দিতে পারিলেন ? দেবতার মন্ত্ৰাধীন, ইহাও ষোল আনা অন্ধ-বিশ্বাস ও কুসংস্কার । কেন না দেবতারা অসৰ্ব্বজ্ঞ মানুষ (নর ) ছিলেন, কেহ গোপনে বা স্থানান্তরে মন্ত্র পাঠ করিলে র্তাহারা তাঙ্গ টেরও পাইতেন না । আর ব্রাহ্মণের মন্ত্রজ্ঞ বলিয়াও র্তাহীদের দেবত। আখ্যা হয় নাই । ফলতঃ স্বর্গেব দেবগণেৰ নামা শ্বর ছিল 'এক্ষিণ’, কেন না তাহারা ( ব্রহ্ম বেদং জানাতাতি ব্রাহ্মণ: ) ব্ৰহ্ম বা বেদ জানিতেন । র্তাহারা যাগ-যজ্ঞের অল্পষ্ঠান করিতেন, এজন্তও তাহাদিগকে সকলে ‘ব্রাহ্মণ’ শব্দে নির্দেশ করিতেন । ব্রাহ্মণ। ব্ৰতচারিণ: —নিঘণ্ট, । ভৌম স্বর্গের সেই দেবতাখ্য নর-ব্রাহ্মণেরা তাহাদের ভ্ৰাতৃব্য দৈত্য-দানব কর্তৃক স্বৰ্গ-ভ্রষ্ট হইয়া ভারতে আগমন করাতেই লোকে তাহাদিগকে যেমন ভূস্বর’ ও ‘ভূদেব’ ( ভূ-ভারত, ভূদেব—ভারতাগত দেব ) বলিত, তদ্রুপ "ব্রাহ্মণ ও দেবতা বলিয়াও সংসুচিত করিত । ফলতঃ স্বর্গের ইন্দ্রাদি দেবগণ ও ভারতের ব্রাহ্মণ দেবতারা ( জাতি ব্ৰাহ্মণ নহে, এ-ব্রাহ্মণ সমগ্ৰ আৰ্য-জাতি ) একই বস্ত এবং ইহার কেহই কাহার মুখ নাসিকাদি হইতে ২১২