পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] পুতোয় vర్సిలి পুতোয়ার আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষার জস্ত নিজের বাড়ীটাকে তিনি রীতিমত একটা দুর্গে পরিণত করে ফেললেন । দুয়ার, খিল, তাল, শেকল কিছুরই উপর আর তার আস্থা রইল না। পুতোরা যে ভয়ানক চালাক-তাল-দেওয়া ছুয়ারের ভেতর দিয়েও সে ঘরে ঢুকৃতে পারে । • ঠিক এমূনি সময় একটা ঘরোয় ব্যাপারে তার আতঙ্ক দ্বিগুণ বেড়ে গেল। কে একজন খ্ৰীমতীর রাখুনীকে ফুললে নিয়েছিল । শেষ পৰ্য্যস্ত রাখুনী তার পাপের বোঝা লুকোতে পাৰ্বলে না। কিন্তু যে তাঁর এমন সৰ্ব্বনাশ করেছে তার নামও কিছুতে বললে না। শ্ৰীমতী জোএ বলে উঠলেন—“র ধুনীটার নাম ছিল গুডুল ।" মসিয়ে বর্জে বলে যেতে লাগলেন—“হ্যা, তার নাম গুডুলই। সকলেরই ধারণা ছিল যে চিবুকের নীচের দু’গাছি লম্বা দ্বাড়িই গুডুলকে প্রেমের দৌরাত্ম্য থেকে বাচিয়ে চিরকাল তার কুমারী-ব্ৰত রক্ষা কৰূবে । কিন্তু বিধাতার এই অমোঘ বৰ্ম্মও তাকে বাঁচতে পাৰ্বলে না । যে তার এমন সৰ্ব্বনাশ করে শেষটায় তাকে ফেলে চলে গেল তার নাম প্রকাশ করতে শ্ৰীমতী কনুইয়ে গুডুলকে চেপে ধরলেন । গুডুল কেবলই কাদ্বতে লাগল, কিন্তু মুখ ফুটে একটি কথাও বললে না। কত ভয় দেখান—কত অনুনয়-বিনয়-কিন্তু সবই বৃথা । অনেক কাল ধরে শ্ৰীমতী পুত্থাপুখ অনুসন্ধান নিলেন। পড়া-প্রতিবেশী, দোকানী, মালী, রোড-মহুরী, পুলিশ কাউকে জিজ্ঞেস করতে বাকী রাখলেন না। কিন্তু অপরাধীর কোন সন্ধানই পাওয়৷ গেল না। সব জায়গায় বিফল হ’য়ে আবার তিনি গুডুলকে চেপে ধরলেন। তবু কিন্তু গুডুল নীরব । হঠাৎ সব কথা শ্ৰীমতীর মনে জেগে উঠল। তিনি শিউরে উঠে বলেলেন—“এ পুতোরার কাজ—নিশ্চয় পুতোয়ার কাজ। —রাধুনী কিন্তু কেবলই কাদ্বতে লাগল—কিছুই বলুলে ন –“নিশ্চয়, নিশ্চয় পুতোয় । ওঃ, কি আহাম্মকই আমি ; এ কথাটা আগে একবার মনেও জাগেনি। এ নিশ্চয়ই পুতোয়ার কাজ । —হতভাগ! মেয়ে, কি দুর্ভাগ্যই না তোমার ” এর পর সকলেরই বিশ্বাস জন্মাল যে পুতোয়াই রাধুনীর ছেলের জনক । স্যাৎ ওমেরের জজ থেকে মুটে-মজুর পর্য্যন্ত সকলের কাছেই গুডুল আর তার পাপের বোঝাটি পরিচিত হ’য়ে গেল। পুতেীয়াই যে শুভুলকে ভুলিয়ে নিয়ে গিয়েছিল এখবরে সমস্ত সহর বিস্ময়, হাসি ও পুতোয়ার প্রসংশায় ভরে গেল। মেয়ে ভুলাতে পুতোয় অদ্বিতীয় – এগার হাজার মেয়ের সর্বনাশ নাকি সেই করেছে। পবিকের সু-৭ জন্ম-খোড়া ছেলে—এও ত পুতোয়ারই । সহরের যত গল্পখোর মাথ৷ নেAেবললে—‘পুতোয় নর-রাক্ষস । এখন যNও স্নমস্ত সহর জুড়েই পুতোয়ার নামডাক, কিন্তু আমাদের বাড়ীর সঙ্গে তা; সম্বন্ধটা ছিল ঘনিষ্ঠ । সে আমাদের দুয়ারের পাশ দিয়ে চলে যেত । লোকেয়ূলত—আর আমাদের ভাইবোনেরও বিশ্বাস ছিল যে, পুতোয় সময় সময় মামাদের বাড়ীর পাচিল ডিঙিয়ে ভিতরে ঢুক্ত। মুখোমুখি কখনও তাঁকে দেখিনি ; কিন্তু তার ছায়া, গলার স্বর ও পায়ের দাগের সহিত আমরা খুবই পরিচিত ছিলুম। কতদিন সন্ধ্যায় আমরা ভেবেছি—ঐ যেন রাস্তার মোড়ে তার ছায়া দেখলুম। তার সম্বন্ধে আমরা ভাই-বোনে ধারণা দিন দিন বদলাতে লাগ লাম। লোকে যদি তাকে দুষ্ট, ও হিংস্কটে ভাবত আমরা কিন্তু তাকে ছেলেদেরই মতন সরল ভাব তুম। দিন দিন সে কল্পনায় রঙীন হ’য়ে উঠতে লাগল। রাত্তিরে আস্তাবলে ঢুকে ঘোড়ার লেজ বেঁধে রাখত ন সত্যি,কিন্তু তবু তার নানারকম দুষ্টমি ছিল —জাম্বার বোনের মেয়ের পুতুলের মুখে কালি দিয়ে গোফ একে দিয়ে যেত; শুতে যোবার আগে শুনুতুম সে যেন আমাদের মশারির ভিতর ঢুকে চুপি চুপি কথা কইছে ; ছাদে বিড়ালের সঙ্গে কগড় করছে ; কুকুরের সঙ্গে ঘেট ঘেউ কবৃছে —রাস্তার মাতালদের গানের অবিকল নকল করে চলেছে । বাবার চরিত্র ছিল একটু ভিন্নরকমের—অনেকটা দার্শনিকের মত মানুষ-জাতটাকেই তিনি বড় কৃপার চক্ষে দেখতেন। মান্থৰকে ভিf মোটেই বুদ্ধিমান মনে করতেন না। কিন্তু মামুষের ভুল বিশেষ সাংঘাতি মা হ’লে, তিনি এতে আমোদই পেতেন। পুতোয় সম্বন্ধে সম্বরে লোকের ধারণ মানুষজাতির সকলরকমের ধারণারই বে একটা ছোট থাটাে সংস্করণ এই ভেবে তিনি বেশ আনন্দ উপভোগ করতেন। বাৰ শ্লেষ দিয়ে কথা বলতে ভাল বাসূতেন । তার কথা শুনে মনে হ’ত ক্ষে তিনি নিজেও পুতোয়ার অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন। মাঝে মাঝে তি:ি পুতোয়ার চেহারার এমন স্বল্প বর্ণনা দিতেন যে শুনে মা আশ্চৰ্য্য হে গিয়ে বলতেন—“বল কি ? তোমার কথা শুনলে লোকে ভাবে ে তুমি খাটি সত্য কথা বলছ। অথচ তুমি নিজেই জান—”। বাবা কুৰি গাষ্ঠীৰ্য্যের সহিত উত্তর দিতেন,—“সমস্ত স্যাৎ ওমের পুতোরার অস্তিৰে বিশ্বাস করে। এতকাল সহরে থেকে আমি কি তা অবিশ্বাস কর৷ে পারি ? এত্ত লোকের একটা দৃঢ় ধারণা ভেঙে দেবার আগে ভাল কয়ে ভেবে দেখা উচিত।” খুব পরিষ্কার মাথা যাদের তারাই এভাবে ভাবনে পারে। বাবা তার বিশ্বাস ও জনসাধারণের বিশ্বাসের মধ্যে একটা সামঞ্জস্ব করে নিয়েছিলেন। স্যাৎওমেরের লোকদের সঙ্গে তিনি পুতোরার অস্তিৰে বিশ্বাস করতেন, কারণ একজন দার্শনিক বলেছেন—“আমি যে আদি এই-ই আমার অস্তিত্বের প্রমাণ । কিন্তু কাঁকুড়-চুরি, রাধুনীর সর্বনাশৰ অন্ত সব ঘটনার পুতোহার কোন হাত আছে বলে তিনি স্বীকার করতেন না। কাজেই লোকে মনে করুত বাবা খুব বুদ্ধিমান অথচ ভদ্র। তার পর মীর কথা । মা ভাবতেন, পুতোরার জন্ত তিনিই জারী এবং তার এধারণাও ভুল নয়। সেকুলপীয়রের কল্পনায় যেমন ক্যালিবান জন্মেছিল, আমার মায়ের কল্পনা থেকে তেমুনি পুতোরার জন্ম হয়েছিল এই কল্পনাটকে "মিথ্যা ভেবে যদি পাপ বলে ধরা যায় তবে সেক্স্পয়রের চাইতে মা'র পাপের মাত্রা কম। কিন্তু তবু মা ভয় পেয়ে গেলেন । এই ছোট একটুখানি মিথ্যা"তেই না ব্যাপারটা এত বড় হ’য়ে উঠেছে। একদিন তিনি একা বসে’ বসে ভাবছিলেন, কোন দিন বুঝি বা তার এই ছোটখাটাে মিথ্যাটা সশরীরে তার সামুনে এসে হাজির হয়। সেইদিনই বাড়ীর একটা নুতন চাকর মাকে এসে বললে যে একটা লোক তাকে খুজছে। লোকটা মীর সঙ্গে কথা বলতে চায়। মা জিজ্ঞেস করলেন—কিরকমের লোক ? চাকর বললে মজুর বলে মনে হয়। স্তুৰ বান্ধিছে? ‘ ’ “কি নাম ? পুতেীয়।" ‘সে-ই বলেছে কি, তার নাম পুতোয় ?

  • ं, भt r

"এখানে এসেছে ?” “ই, রান্নাঘরের পাশে দাড়িয়ে আছে।" “তুমি তাকে দেখেছ ? ‘ई, भां !' “কি চায় তা কিছু বলেছে ? "আমায় আর কিছু বললে না, শুধু বললে যে আপনার সঙ্গে। দেখা হ’লে সব বস্বে।" "আচ্ছা তাকে এখানে আসতে বল।" রাস্ত্রাঘরে ফিরে গিয়ে চাকরট আর পুতোয়াকে খুজে পেলে না চাকরও পুতোয়ার এই সাক্ষাৎ আজও রহস্তে আবৃত। কিন্তু আমার মনে হয়, সে দিন থেকে মারও মনে বিশ্বাস জন্মাতে লাগল ৰে হয়ত বা বাস্তবিকই পুতোরার অস্তিত্ব আছে –সে কেবল তার নিজের কল্পনাপ্রসূত নাও হতে পারে •••••• ঐ ক্ষীরোদচন্দ্র দেব