পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্য। ] क्रकश्रुश् NDNS হরিহর বলিল, “হঠাৎ আলো জেলে একদিন দেখেননি কেন ?” রোগী বলিল, “ছু-দিন দেখতে গিয়েছিলাম, ঝড়ের মত ছটুকে সে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল, তার পর ঝি চাকর আমি তিন জনে মিলে সার-বাড়ী ওলোট-পালোট করে’ কোথাও তাকে পেলাম না ..ট রাত আমার ওইটুকু স্বখও নষ্ট হ’ল । সে বলেছে আর কখনও যদি রাত্রে আমি তাকে আমন করে দেখতে চেষ্টা করি তবে হয় আমি তার মরা মুখ দেখব, নয় চিরদিনের জন্য সে দূরে চলে যাবে। সেই ভয়ে আর আমিও চেষ্টা করিনি। সে আমার ঘরের লক্ষ্মী পাছে ছল করে চলে যায়, তাই কাক পক্ষী, কুকুর, বিড়াল, ভিখারী, কাউকে কখনও বিমুখ করি না । লক্ষ্মীকে তবু ঘরে ধরে রাখতে পারছি না।” কথা বলিতে বলিতে শ্রাস্ত হইয়া রোগী হাপাইতে লাগিল । হরিহরের অস্তরের ডাক্তার হঠাৎ সচেতন হইয়া নিজ কাজে লাগিয়া গেল । অনেক কষ্টে রোগীকে ঘুম পাড়াইয়া ডাক্তার ঘর হইতে বাহির হইয়া আসিল । বাহিরে আসিয়া দাসীকে জিজ্ঞাসা করিল, “কি হয়েছে ভাল করে ত বুঝলাম না! রাত্রে কি ঘুম হয় না ?” দাসী বলিল, “কোনো রাত্রেই ত চোখে ঘুম দেখি না। সারা রাত যামিনীর সঙ্গে কথা কয়, হাসে কাদে ” ডাক্তার বলিল, “যামিনী কোথায় ?” দীসী বলিল, “এই বাড়ীতেই আছে।” হরিহর বিস্ময়ে অভিভূত হইয়া বলিল, “তাকে দেখা যায় না কেন তবে ?” দাসী বলিল, “যায় বৈকি, ও পাগল, চিনতে পারে না।” । ডাক্তার বলিল, “কি আশ্চৰ্য্য ! এত যাকে ভালবাসে তাকেও আবার মানুষ চিনতে পারে না ?” দাসী হাসিয়া বলিল, “আশ্চর্ধ্যি আর কি ডাক্তার বাৰু ? চিনতে পারাই বরং আশ্চর্ধ্যি ; চল্লিশ বচ্ছর পরে কেউ কখনও কাউকে চিনতে পারে ?” হরিহরের বিস্ময় বাড়িয়াই চলিতেছিল। সে বলিল, “তার মানে ?” দাসী বলিল, “মানে ? রামনগরের বাবুদের মেয়েকে 84-3 е অভিলাষ যখন বিয়ে করতে চেয়েছিল তখন মেয়েটির বয়স ছিল পনের আর অভিলাষের বয়স ছিল কুড়ি । বাবুদের বাড়ীতেই ভাত খেয়ে সে মানুষ, এক পয়সাও তার মুরোদ ছিল না । ভিখিরী রাজার মেয়েকে বিয়ে করতে চায় শুনে বাবুরা ত হেসেই অস্থির! বললেন "অভিলাষের অভিলাষ ত খুব বড় দেখছি, কিন্তু ওইখানেই কি সব পৌরুষ শেষ হ’য়ে গেছে ? অভিলাষের বড় অভিমান হ’ল । সে বললে "আচ্ছ, চাইবার মত মুরোদ যেদিন হবে, সেদিন আসব। সেদিন আমায় কে ফিরোয় দেখব।’ টাকার সন্ধানে সে বিদেশে চলে গেল। বাবুরা মেয়ের বিয়ের অন্তত্ব চেষ্টা করতে লাগলেন । মেয়ে কিন্তু বেঁকে বসল, কিছুতেই বিয়ে করবে না। চার বছর পরে অভিলাষ যখন ফিরে এল, তখন তার চাকুরী হয়েছে আশী টাকা মাইনে, কিন্তু বাবুদের মেয়ের বিয়ে হয়নি। বাবুরা তবু দেমাকু ছাড়তে না পেরে বললেন, “হ্যা, পানমশলার ব্যবস্থাটা হয়েছে বটে, কিন্তু আমাদের মেয়ের ভাত-কাপড়ও লাগে ।” অভিলাষ মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে বাবুরা শক্ত গালাগালি দিয়ে বিদায় করে দিলেন । সে আবার চলে গেল ; এবার একেবারে কোন তেপাস্তরেব পারে তা কেউ জানে না। এদিকে মেয়ের বয়স বাড়তে লাগ ল কিন্তু কিছুতেই তার ৰিয়ে দেওয়া যায় না। শেষে এত বয়স হয়ে উঠল যে বাবুদের বাইরে মুখ দেখান ভার হয়ে দাড়াল। র্তারা অভিলাষের সন্ধানে লোক পাঠালেন যে এবার এলেই বিয়ে দেবেন। এবার সে-ই বাবুদের বিমুখ করলে, এল না ; বললে, বাড়ী হয়নি। আবার কিছু দিন বাদে লোক গেল ; সেও ফিরে এসে বললে, গহনা হয়নি। এক বছর বাদে আবার লোক গেল ; ফিরে’ এসে বললে, আসবাব বাকি আছে। শেষে সবাই বুঝলে মানুষটার মাথা খারাপ হয়ে গেছে তার পর কতকাল গেল ; বাবুদের বাড়ী যা কখনও হয়নি তাই হ’ল । তিনকেলে আইবুড়ো মেয়ে রেখে বাপ ভাই সব একে একে মরে গেল। বাড়ীতে সেই মেয়েই তখন সবার মাথার ওপর । এমন সময় একদিন শোনা গেল অভিলাষ এসেছে ঘামিনীকে নিয়ে যেতে । শুনে যামিনী পড়ে পড়ে