পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্য। ] কিছু সস্ত। বটে, তবু এও বেজীয় খরচ । রাজা বললেন, “উহু, আরো সস্তায় দেখ, এও অতিরিক্ত !” আবার মন্ত্রীসভার অধিবেশন । কি করে কম খরচে হয় তার আলোচনা হ’ল। তারা বললেন, “আচ্ছা কোন সৈন্ত দিয়ে হয় না ? তারা ত মানুষ মারার জন্তই আছে ; যুদ্ধে কত মানুষ মারে।” সেনাপতি সৈন্তদের জিজ্ঞাসা করলেন, সৈন্তের বললে, “ন, আমরা পারব না : এমন করে মানুষ মারা আমরা শিখিনি " কি করা যায় ? মহা মুস্কিল । মন্ত্রীরা আবার পরামর্শে বস্লেন । আলোচনা, সমালোচনা, পুনরালোচনা, অনেক হ’য়ে গেল । কমিটি, সব - কমিটি গঠিত হ’ল ; শেষটা ঠিক হ’ল লোকটার মৃত্যু-দণ্ড বদলে দিয়ে, আজীবন কয়েদ করে রাখা হোক্ । এতে রাজারও দয়া দেখান হবে, পরচও অনেক বেঁচে যাবে। রাজার কাছে খবর গেল ; রাজাও মথুর করলেন । আবার আর এক মুস্কিল। আজীবন একটা লোককে কয়েদ করে' রাখা যায় এমন কারাগার সে রাজ্যে নেই। সাময়িক ভালে কয়েদ রাখার যোগ্য একটা আছে বটে, কিন্তু তাতে একটা লোককে ও জীবন রাপ চলে ন । শেধটা একট। স্থান ঠিক হ’ল সেখানে পুনেটাকে আটক রাপা হবে। একটা পাহারাওয়াল নিযুক্ত হ’ল, সে লোকটাকে চৌকি দেবে, আর পাজ বাড়া থেকে কয়েদীর শাহার্য্য এনে দেবে। এরাপ মাসের পর মাস লায়, ক্রমে এক বছর গেল । প্লাজ! তার হাঙ্গোর হিসাব-নিকাশ দেপতে বসলেন । তিনি দেখলেন, রাজ্যে একটা নতুন পরচ বেড়ে গেচে । সেটা ঐ পাহারাওয়াল রাখার পরচ। তবে :ণ তন ও কয়েদীর অষ্টারে৩ে বছরে ছয় শত টাকা খৰচ হ’য়ে গেছে । খরও মুস্কিল এই যে, লোকট বেশ সবল ও সুস্থ আছে ; শীঘ্ৰ মরবার কোন লক্ষণ দেথা যtয় না । এমনভাবে আরও পঞ্চাশ বছর বঁাচ তে রে । পঞ্চাশ বছর ধরে এমনিতর খবচ—সে যে আরও লেজায় খরচ ! রাজ। আবার মগীদের ডাক্লেন। তাদের বস্লেন, “আপনার একটা সোর উপায় ঠিক করুন। এতটা খরচ চলবে না ।" তারা অনেক চিন্তা করলেন. অনেক আলোচনা করলেন । একজন বললেন, “আচ্ছা, পাহারাওয়ালাকে উঠিয়ে দেওয়া হোক।” আপত্তি হ’ল, তাহ’লে লোকটা পালিয়ে যাবে ঘে। “ধায় যাক্ ; খরচ ত হবে ন। তাতে ।” আবার রাজার কাছে খবর গেল । রাজা তাদের সিদ্ধাস্ত মঞ্জুর করলেন। পাহারাওয়াল বরখাস্ত হ’ল। কয়েদী দেখলে ঠিক সময়ে তার খাবার এ'ল না । বেরিয়ে এসে -নথলে পাহারাওয়াল নেই। কি করা যায় ? না থেয়ে ত আর বঁচে যায না । নিজেই সে থালা নিয়ে রাজবাড়ী চলল খাবার আনতে। পাবার এনে থেয়ে দেীর বন্ধ করে’ রইল । এমনি করে রোজ চলুল। কয়েদা নিদিষ্ট সময় রাজবাডী থেকে বেজায় খরচ 80 ○ খাবার আনে আর ঐখানে থাকে। তার পালাবার কোন চিহ্নই দেখা গেল ন । কি করা যায় ? মন্ত্রীর আবার পরামশে বস্লেন । ঠিক হ’ল, কয়েদীকে খুলে বলা হোক যে তাকে আটকে রাধা তাদের ইচ্ছ। নয় । সে যথা ইচ্ছ। যেতে পারে। প্রধান মন্ত্রী তাকে ডেকে বললেন, “তুমি চলে যাচ্ছ না যে, এখন ত পাহার দেবার কেউ নেই, তুমি গেলে কোন অপরাধ হবে না।” সে লোকটা উত্তর করলে, “অপরাধ ত হবে না, কিন্তু আমি যাব কোথায় ? আমার কোনো স্থান নেই । কি করি ? আপনার বিচারে আমার সর্বনাশ কলেছেন । লোকে আমায দেখে ঘূণায় মুখ ফিরিয়ে নেবে। তার পর, এতদিন আটক থাকায় আমার কাজ কবার অভ্যাস নষ্ট হ’য়ে গেছে । আপনার আমার উপর অবিচার করেছেন। যখন আমার মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল, তখন আমাকে মেরে ফেলা উচিত ছিল। ত৷ করেননি । এই নম্বৰ এক । তার পর আমার আঞ্জীবন কয়েদ করলেন এবং আমার থাবধি এনে দেওয়ার জষ্ঠ পাহারাওয়াল নিযুক্ত করলেন । এপন হাকে তুলে দিয়েছেন, আমাকে নিচেই খাবার আনতে হচ্ছে । এই নম্বর দুষ্ট । এতেও আমি কিছু বলিনি। এখন দেখছি, আপনার সত্যসতাঙ্গ আমাকে তাড়াতে চান। আপনার যা ইচ্ছ। করুন, কিন্তু আমি কিছুতেই যাব না ।" এখন কি করা যায় ? আবার মঙ্গী-সভার অধিবেশন । কি হবে ? লোকটা কিছুঙেই যাবে না । তার অনেক ভেবে আলোচনা কবে ঠিক করলেন যে, একটা উপায় আছে । লোকটার জন্যে একটা পেনৃষ্ঠানের ব্যবস্ত করা হোক । তার রাজাকে বললেন, এ ছাড়া আর উপায় নেই । লোকটাকে ছাড়াতেই হবে । বাধিক ছয় শত টাকা পেন্দন ঠিক হ’ল, কয়েদীকে একথা জানান গেল । লোকটা বললে, "আচ্ছা, আমি যদি এটা নিয়মিত পাই তবে যেতে রাজি আছি ।" স্বাক্, এতদিনে একটা স্বমীঃমাস হ’ল। কয়েী তার পেনৃষ্ঠনের তিন ভাগের এক ভাগ টাকা অগ্রিম পেয়ে রাজার রাজা ছেড়ে গেল । রাজ্যের সীমান্ত ছেড়ে সেখানে কতকটা জমি কিনে বাস করতে লাগল। এখন বেশ সুখেই তার দিন কাটে। নির্দিষ্ট সময়ে সে রাজ-সরকারে হাজির হয়, তার পেন্‌ষ্ঠনের টাকা নিয়ে ফিরে আসাব পথে জুয়ার আডডীয় গিয়ে দু-এক বাড়ি খেলে ; হার-ঞ্জিত ঘা হোক, বাড়ী এসে স্বচ্ছন্দে খায় দায় থাকে । লোকটার সৌভাগ্য যে, সে এমন দেশে খুন করেনি যেখানে গবর্ণমেণ্ট, মামুষের মাথ৷ কেটে ফেলার জন্তে অথবা তাকে গাজীবন আটক রাখার জন্যে খরচ কতে ষ্ট হস্তত: করে না ।