পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] প্রাচীর দ্বারা রক্ষিত। প্রাচীরগুলোর গাথনিও খুব শক্ত ও দৃঢ়। রায়গড়কে দুর্ভেদ্য দুর্গে পরিণত করবার চেষ্টা যে বেশ ভালরকমেই হয়েছিল তার পরিচয় এর যেখানে সেখানে ছড়িয়ে পড়ে আছে । সদর দরজাটার একটু দূরেই গঙ্গা-সাগর। এই হ্রদটি দৈর্ঘ্যে ১২০ গজ, প্রন্থে ১০০ গজ। এই জল কাচের মতন স্বচ্ছ, বরফের মতন ঠাণ্ডা। এর মুনীল জলে পাড়ের উপরকার ভগ্ন প্রাসাদটির প্রতিবিম্ব পড়ে’ কাপতে থাকে—এর জলের উপর দিয়ে বাতাস হু হু শব্দে নিশ্বাস ফেলে যায় । সে-নিশ্বাস শৃঙ্খলিত মহারাষ্ট্র-রাজ্য-লক্ষ্মীর কান্নার মতন পথিকদের কানে এসে বাজে । রায়গড় 8ፃፃ প্রাসাদের দরজা থেকে মোট ৩৯টি ধাপ অতিক্রম করলেই “নাকাড়া থানা” । এইটিই দুর্গের ভেতর সর্বাপেক্ষা উচ্চতম স্থান । এখানে দাড়িয়ে দুর্গের প্রায় সমস্ত অংশটাই নজরে পড়ে, এবং দুর্গের বাইরেও অনেক দূর পৰ্য্যন্ত দেখা যায় । দুর্গের চারিপাশের স্থান, বিসর্পিত নদীরেখা, নদীতীরে গ্রামসমূহ, রাজগড়, তোরণ, প্রভাপগড়, এ-সমস্তই চোখের সম্মুখে বায়োস্কোপের ছবির মত ফুটে ওঠে। দরবারখানা হ’তে দক্ষিণ-পূর্ব দরজা দিয়ে বেরিয়ে এসে একটির পর একটি দরবারে প্রবেশ করতে হয়—এর কোনটির নাম 'ন্যায়সভা’, কোনটির নাম "বিবেকসভা', জগদীশ্বর-মন্দির—রায়গড় পান্ধী-দরজাকে অতিক্রম করলেই শিবাজীর প্রাসাদের সাম্নে এসে পৌছান যায়। পথে হ্রদের উত্তর-পূৰ্ব্ব ধারে ভবানীর মন্দিব । প্রাসাদে প্রবেশ করবার প্রধান দরজা পেরলেষ্ট শিবাজীর দরবারখানা চোখে পড়ে। এই দরবারখানাটি দৈর্ঘ্যে ৪৫ • ফুট এবং প্রস্তে ২৫০ ফুট । একটি দামী পাথরের মঞ্চ এখনও এখানে দাড়িয়ে আছে— শিবাজীর সিংহাসনের এইটিই একমাত্র অবশেষ। এই স্থানটি মহারাষ্ট্রদের কাছে এখনও তীর্থস্থানের মত পবিত্র । তারা জুতে পাধে দিয়ে এর ভেতর প্রবেশ করে না । যারা নিম্নশ্রেণীর তারা দূর থেকেই প্রণাম করে চলে যায়। কোনটির নাম ‘মকরসভা, কোনটির বা আrর-কিছু । সিংহাসনের ঠিক পেছনের দিকটায় প্রবৃত্তি, মন্দির"বিশ্রাম-মন্দির’ ‘ভাণ্ডাগার’ অন্তঃপুর ইত্যাদি অবস্থিত । ভাণ্ডাগারটি অগ্নির মন্ত্র গ্রহে একেবার ভস্মIবশেষে পরিণত হয়েছে—এখনও এর মাটিব ভেতর প্রচুর পোড়া চালের নিশান পাওয়া যায় ।