পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

もぐり সজনীকান্ত উঠিয় দাড়াইয়। বলিল, “ভ হ’লে আর কি হবে, আর্মুি চল্লাম।" . সুরেশ্বর সজনীকান্তের গতি রোধ করিয়া দাড়াইয়। বলিল, “তা হবে না, সজনী-বাবু ; দয়া করে যপন পায়ের ধূলো দিয়েছেন তখন একটু মিষ্টি-মুখ করতেই হবে।” সজনীকান্ত মাথা নাড়িয়া সবেগে বলিল, “বেশ লোৰ ত তুমি! তুমি নিজে যখন খাবে না আমাদের ওখানে, তখন আমিই বা তোমার বাড়ী কেন খাব ?” স্বরেশ্বর মৃদু হাসিয়া বলিল, “সেইজন্যই ত আপনার আমাদের বাড়ী আরও পাওয়া উচিত। নইলে মনে হবে যে আপনি রাগ করে” খেলেন না। " এবারও অবশেষে সুরেশ্বরেরষ্ট জয় হইল। কিছুক্ষণ বাদাতুবাদের পর সজনীকান্ত জলযোগ করিতে সম্মত झंझेल । আহার করিতে করিতে সজনীকান্ত বলিল, "এবার আর এখানে ভাল লাগছে না, সুরেশ্বর। বাড়ীতে আমোদআহলাদের নাম-গন্ধ নেই। ঘোষ-মশায় ত গীত আর উপনিষদের মধ্যে এমন করে ঢুকেছেন যে তাকে টেনে বার করাই কঠিন ব্যাপার! সুমিত্র। চরকা নিয়ে দিবারাত্র ঘড়োর ঘড়োর কবৃচে, আর দিদি স্থমিত্রাকে নিয়ে • ঘ্যানোর ঘ্যানোর করছেন। কাল সন্ধ্যার সময়ে বিমান এসেছিল, গল্পগুজবও করছিল, কিন্তু যাই বল, ও হাকিমটাকিমদের সঙ্গে আমাদের তেমন স্ববিধা হয় ন৷ ” কথাটা বলিয়া ফৈলিয়াই সজনীকান্তের পেয়াল হুইল যে, হাকিমদের সম্বন্ধে সহসা এমন একটা স্বীকার করিয়৷ • ফেলিয়া সে নিজেকে কতকটা খৰ্ব্ব করিয়াছে। মনে মনে লঙ্গিত ও অমৃতপ্ত হইয়া ভুলটা যথাসম্ভব শুধরাষ্টয়া লইবার উদ্দেশ্যে সে তাড়াতাড়ি বলিল,“কি জান সুরেশ্বর ? দিবারাত্র হাকিম র্যাটাঘাটি করতে হয় ব’লে হাকিমের গন্ধ পৰ্য্যন্ত আর ভাল লাগে না ! সেবার তুমি যখন যেতে তখন কিরকম জমৃত বল লেপি ? তোমার সঙ্গে লড়াই ঝগড়া করেও মুখ পাওয়া যেত " 藝 ঈষৎ হাসিয়া স্বরেশ্বর বলিল, "লড়াই-ঝগড়ার ধৰ্ম্মই হচ্ছে কম। তা ছাড়া মিষ্টি জিনিসের সঙ্গে নোন্ত জিনিস একটু মুখ-রোচক লেগেই থাকে।” প্রবাসী—বৈশাখ, Hම්LA [ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড স্বজনীকান্ত ঘাড় নাড়িয়া বলিল, “তা নয়, সুরেশ্বর। , মিষ্টি হ’লেই যদি মিষ্টি লাগৃত তা হ’লে গুড় আর চিনি ছেড়ে লোকে অন্ত কোনো জিনিস খেত না।” আৰু কোনও উত্তর না দিয়া সুরেশ্বর নীরবে হাসিতে লাগিল । * পথে বাহির হইয়া সজনীকান্তকে আগাইয়া দিতে দিতে স্বরেশ্বর মুক্তারাম-বাবুর ট্রীটের মোড়ে আসিয়া দাড়াইল । সজনীকান্ত স্মিতমুখে বলিল, “এই তোমার সীমানা নাকি ? আর এগবে না ?” - * স্বরেশ্বর মৃদু হাসিয়া কহিল, “ন ; মুক্তারাম বাবুর ষ্ট্রীটু আমার এলাকার বাইরে।" সবেগে মাথা নাড়িয়া সজনীকান্ত বলিল, “এ কিন্তু তোমার একেবারে ভুল ধারণ, সুরেশ্বর ! আমি স্বচক্ষে দেখছি সেপানে তোমার হুকুম ত জারি রয়েছে, চর্ক চলছে, পদ্ধর চলছে, তবু তুমি বল্বে যে তোমার এলাকার বাইরে ?” আরক্ত মুখে ক্ষণকাল চুপ করিয়া থাকিয়া স্বরেশ্বর বলিল, “সেটা আমার হুকুমত নয় সজনীবাবু, আমি যাব হুকুমে চলি তার হুকুম । অনাদি কাল থেকে যিনি ধ্বংসের মধ্যে দিয়ে গড়ছেন সেই মহাকালের এলাকা সৰ্ব্বত্র ।” নিঃশব্দে ক্ষণকাল সুরেশ্বরের দিকে চাহিয়৷ থাকিয়া সজনীকান্ত বলিল, “আমি তোমার ওসব সাজানো কথা বুঝতে পারিনে, সুরেশ্বর ; আমি সহজে যা বুঝছি তা হচ্ছে এই যে দিদির বাড়ী আর তুমি কখনও না গেলেও সেখানে যা মূল গেড়ে এসেছ তা উচ্ছেদ করা দিদির সাধ্য নয় ! এমন কি এখন আর তোমারও সাধ্য নয় ” বলিয়া সজনীকান্ত হাসিতে লাগিল । * এবার স্বরেশ্বরের মৃগ সীসার মত নিম্প্রভ হইয়া গেল। এ প্রসঙ্গে আর কোনো কথা না বলিয়া সে বলিল, “আচ্ছা তা হ'লে এখন আসি। আর আপনাকে আটকে রাখব ম৷ ” বলিয়া করজোড়ে সজনীকান্তকে নমস্কার করিয়া দ্রুতপদে প্রস্থান করিল। গৃহে পৌছিয়া উপরে উঠতেই স্বমিত্রার সহিত সজনীকান্তের সাক্ষাং হুইল। প্রাতঃকাল হইতে